বুধবার, ৩০ অক্টোবর ২০২৪, ০৩:২৯ অপরাহ্ন
আমার সুরমা ডটকম : ‘ইটা কারিনে’র মতো নক্ষত্র ব্যবস্থা আবিষ্কার করে জ্যোতির্বিদ্যার জগতে হৈচৈ ফেলে দিয়েছে নাসার তরুণ বাংলাদেশি গবেষক ড. রুবাব খানের নেতৃত্বাধীন গবেষণা দল। সূর্যের চেয়ে কয়েকশ গুণ বড় পাঁচটি জোড়া নক্ষত্র আবিষ্কার করে জ্যোতির্বিদ্যার জগৎ কাঁপিয়ে দিয়েছে নাসার একটি বিশেষ দল। আর এই দলের নেতৃত্বে আছেন নাসায় কর্মরত তরুণ বাংলাদেশি গবেষক ড. রুবাব খান (২৯)।
যুক্তরাষ্ট্রেই উচ্চতর পড়াশোনা সম্পন্ন করে ড. রুবাব খান কাজ শুরু করেন নাসায়। বর্তমানে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের মেরিল্যান্ডে অবস্থিত নাসার গডার্ড স্পেস ফ্লাইটের একদল গবেষক দলের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
দীর্ঘদিন ধরেই ড. রুবাব খানের নেতৃত্বাধীন দল মহাবিশ্বের বিভিন্ন স্থানে ‘ইটা কারিনে’র মতো নক্ষত্র ব্যবস্থার খোঁজে অনুসন্ধান চালাচ্ছিলেন। নাসার স্পিটলার ও হাবল টেলিস্কোপের তথ্য নিয়ে গবেষণা করেন তাঁরা। শেষমেশ খোঁজ মেলে ইটা কারিনের মতো জোড়া নক্ষত্রের। তবে একটি-দুটি নয়, পাঁচ জোড়া নক্ষত্রের খোঁজ পান রুবাবের দল। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রে অনুষ্ঠিত আমেরিকান অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল সোসাইটির বার্ষিক বৈঠকে রুবাব খান তাঁদের আবিষ্কারের কথা ঘোষণা করেন। এর পর থেকেই পুরো বৈঠকে চাঞ্চল্য দেখা যায়।
এখানে ইটা কারিনে সম্পর্কে জানানো প্রয়োজন। এটি হলো জোড়া নক্ষত্র ব্যবস্থা। ১০ হাজার আলোকবর্ষ দূরত্বের মধ্যে সবচেয়ে আলোকিত ও বৃহৎ নক্ষত্র ব্যবস্থা এই ইটা কারিনে। আসলে পৃথিবী থেকে সাত হাজার ৫০০ আলোকবর্ষ দূরে ‘কারিনা’ নক্ষত্রমণ্ডলের অবস্থান। ইটা কারিনে আমাদের সূর্যের চেয়ে ৫০ লাখ গুণ বেশি আলোকিত। কয়েক শতাব্দী ধরেই এটি মানুষের কাছে পরিচিত। ইটা কারিনেতে আছে দুটি প্রধান নক্ষত্র।
ড. রুবাব খানের দলের অনুসন্ধানে পাওয়া পাঁচটি জোড়া নক্ষত্র ব্যবস্থা ইটা কারিনের মতোই বৈশিষ্ট্য প্রদর্শন করে। আর এই নক্ষত্র ব্যবস্থাগুলোর অবস্থান পৃথিবী থেকে এক কোটি ৫০ লাখ থেকে দুই কোটি ৬০ লাখ আলোকবর্ষ দূরত্বের মধ্যেই। ড. রুবাব খান বলেন, বৃহৎ আকৃতির নক্ষত্র ব্যবস্থা খুব কমই দেখা যায়। তবে এই নক্ষত্র ব্যবস্থা অবস্থানকারী গ্যালাক্সির রাসায়ানিক ও গঠনে বড় প্রভাব ফেলে। একই সঙ্গে নক্ষত্রের জীবন ও সমাপ্তিতেও এটি ভূমিকা রাখে। বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, ড. রুবাব খানের জীবনের বড় একটি অংশ কেটেছে রাজধানী ঢাকায়। রাজধানীর উদয়ন স্কুল থেকে এসএসসি পাস করেন তিনি। পরে নটর ডেম কলেজ থেকে পাস করেন এইচএসসি। ছোটবেলা থেকেই মহাকাশ বিজ্ঞানে আগ্রহ ছিল রুবাবের। ২০০৪ সালে তিনি পদার্থবিদ্যার বিশেষ শাখা অ্যাস্ট্রোফিজিকসে পড়াশোনার জন্য কলাম্বিয়া ইউনিভার্সিটিতে বৃত্তি পান। ২০০৮ সালে গ্র্যাজুয়েশন সম্পন্ন করেন তিনি। পরে ২০১৪ সালে ওহাইও স্টেট ইউনিভার্সিটি থেকে পিএইচডি সম্পন্ন করেন রুবাব খান। বর্তমানে তিনি কাজ করছেন নাসা গডার্ড স্পেস ফ্লাইট সেন্টারের একজন ‘জেডব্লিউএসটি পোস্ট ডক্টরাল ফেলো’ হিসেবে।