শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:২২ অপরাহ্ন
শফিউল আলম, বিশ্বম্ভরপুর (সুনামগঞ্জ) উপজেলা সংবাদদাতা: সম্প্রতি পাউবোসহ ঠিকাদারদের দূর্নীতি ও অনিয়মের ফসল হিসেবে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ বোরফসল ও হাওর তলিয়ে যাওয়ার ক্ষতিকর প্রভাব সাধারণ পরিবারদের হারে হারে পুষিয়ে নিতে হচ্ছে। একদিকে দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি অন্যদিকে জীবিকার অভাবে নানান সমস্যায় জর্জরিত নি¤œ, নি¤œ মধ্যবিত্ত ও অসহায় শ্রেণির করুণ দৃশ্য বিশ্বম্ভরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পরিলক্ষিত হয়। শনিবার সকালে উপজেলা সদর হাসপাতালে সরেজমিন দেখা যায়, নারী ও শিশুদের উপচেপড়া ভীরে পুরুষ শূণ্য অবস্থান। এর কারণ হিসেবে ব্যাপক তথ্য বেরিয়ে আসে। উপজেলার হাওরাঞ্চল থেকে আগত নানা বয়সী শিশু, কিশোরী ও মহিলাদের দেখে বুঝাই যায় সংসারের জীবিকার দায়ে পুরুষগণ নানা রোগব্যধিতে আক্রান্ত হয়েও কাজে যাচ্ছেন। বিষয়টি সচেতন মহলের বিবেককে নাড়া দেয়। কিন্তু আদৌ তারা কতটুকু সরকারি, বে-সরকারি, এনজিও বা বিভিন্ন সামাজিক প্রতিষ্ঠান থেকে কতটুকু সহায়তা পেয়েছে সেটা প্রশ্নবিদ্ধ করে। বিষয়টি গভীরে যেতে হাওরাঞ্চলের কৃষক অনন্তপুর গ্রামের হাফিজুল আলম জানান, বাঁধের পানির ঢল, ঝড়, বৃষ্টি উপেক্ষা করে বোরো ফসল ঘরে আনার চেষ্টা করেছি কিন্তু ব্যর্থতায় সারা বছরের রোজগার পানি নিয়ে গেল। সেই থেকে বিভিন্ন অসুখ-বিশুক লেগেই আছে। সন্তানদের পড়ালেখার খরচ চালিয়ে যেতে হিমশিম খেতে হচ্ছে সেজন্য নাকি নিজের শরীরে অসুখ থাকার পরও চিকিৎসা করাতে পারছেন না। এটি অত্যন্ত দুঃখজনক হলেও সত্যি। এ রকম চিত্র প্রায় ৬০ ভাগ কৃষক পরিবারে পরিলক্ষিত হচ্ছে। হাওরের ফসল হারিয়ে যেভাবে নিঃস্ব হয়েছে এলাকার কৃষক সেভাবে প্রভাব পড়েছে সারা বাংলার চালের বাজারে। মোটা চাল কেজি প্রতি ৫০-৬০ টাকায় কিনেও কৃষক পরিবারের সদস্যরা কাউকে অভিযুক্ত করতে নারাজ। তারা জানান, আল্লায় নিছে, আল্লায় দিব… সামনের ফসল বালা ওইব। তাদের এই বিশ^াস কতটুকু সত্যি? জানে বাংলার সচেতন নাগরিকগণ। ফতেপুর ইউনিয়নের বাগুয়া গ্রামের নূরুল চাষি জানান, দীর্ঘদিন যাবত অসুস্থ থাকার দরুণ আমার স্ত্রীকে নিয়ে হাসপাতালে এলে রোগীদের ভীরে বুঝতে পারি আজ আর রোগীর সিরিয়াল পাওয়া সম্ভব নয়, বিধায় আমার দৈনিক দিনমজুরীও শেষ। আমার মতো হতভাগা এলাকার অনেক কৃষক তাই আমাগো মতো মানুষের জন্য সরকারের কিছু করা দরকার বলে দাবী করেন। পানি উন্নয়ন বোর্ড, সংশ্লিষ্ট সাংবাদিক ও ঠিকাদারদের ব্যাপক অনিয়মের ফসল আজ হাওরপারের মানুষদের কাঁদাচ্ছে। সবচেয়ে ব্যপক আকারে দেখা দিয়েছে বন্যা কবলিত এলাকাগুলোর সাধারণ মানুষদের স্বাস্থ্য নিরাপত্তাজনিত সমস্যাগুলো।