মঙ্গলবার, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০১:৫৪ অপরাহ্ন
কাজী জমিরুল ইসলাম মমতাজ, স্টাফ রিপোর্টার (সুনামগঞ্জ):
সুনামগঞ্জের দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলার অধিকাংশ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক নেই ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক দিয়ে চলছে শিক্ষা কার্যক্রম। তাই প্রধান শিক্ষকের দায়িত্বে থাকা অধিকাংশ বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষকগণ প্রধান শিক্ষকের দায়িত্বে থাকায় নষ্ট হচ্ছে চেইন অব কমান্ড। একই পদবীর শিক্ষকরা কমান্ড মানতে চান না।
শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলায় ৯৭টি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। তন্মধ্যে ৯৭ জন প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক থাকার কথা থাকলেও বর্তমানে কর্মরত আছেন ৭৮ জন এবং ১৯টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একটিতে প্রধান শিক্ষক নেই। উপজেলায় মোট ৫শত ৫৪ জন শিক্ষক কর্মরত থাকলেও ৮৫টি পদ এখনো শূন্য রয়েছে। যেখানে ২৬ হাজার মতো শিক্ষার্থী শিক্ষা গ্রহণ করছে প্রধান শিক্ষক বঞ্চিত ভারপ্রাপ্তর অধীনে। এতো বিপূল সংখ্যক শিক্ষার্থী অভিভাবকহীন অবস্থায় পাঠদান নিচ্ছে। এদের অভিভাবক ও উপজেলার সচেতন মহল বিষয়টিকে নেতিবাচক দৃষ্টিকোণ থেকেই দেখছেন। তাঁরা শিক্ষার এই প্রারম্ভিক স্তরের এ দুরবস্থাকে ভাবছেন গোড়ায় গলদ হিসেবে। তাঁরা সর্বাবস্থায় ব্যস্ত থাকেন দাপ্তরিক কর্মকান্ড নিয়ে। এতে নিজের জন্যে বরাদ্দকৃত শ্রেণীতেও পাঠদান করতে পারছেন না শুধু মাত্র সময় অভাবে।
শুধুমাত্র প্রধান শিক্ষকের অভাবে বিষয়ভিত্তিক পড়াশোনাতেও পিছিয়ে পড়ছে কোমলমতি শিশুরা। যার নেতিবাচক প্রভাব পড়বে আগামীর পরীক্ষাগুলোতে। প্রধান শিক্ষক ছাড়া প্রতিষ্ঠান চালানো কষ্টের ব্যাপার। এ উপজেলার অধিকাংশ ইউনিয়নে যাতায়াতে নৌকার মতো যানবাহনের সাহায্য নিতে হয়। ‘বর্ষায় নাও, হেমন্তে পাও’ একটি প্রবাদ রয়েছে যার পুরোটাই এ উপজেলার জন্য প্রযোজ্য। যার ফলে নৌকায় চলাচল প্রবন এলাকায় শিক্ষকরা চাকুরীতে যোগদান করেই বদলীর অপেক্ষায় থাকেন, কবে বদলী হবেন। কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করেই যথারীতি ১/২ মাসের মধ্যেই বদলী হয়ে যান। এ উপজেলার অধিকাংশ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক সুনামগঞ্জ শহরে থাকেন। শহরাঞ্চলের শিক্ষকরা নিয়োগ পেয়ে গ্রামে শিক্ষকতা করতে চান না। যে কারনে গ্রামের শিক্ষার্থীরা সু-শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এলাকাবাসীর দাবি জরুরী ভিত্তিতে এ বিদ্যালয়ে শিক্ষকের শূন্যপদ পুরণ করা হোক।
দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. বজলুর রহমান জানান, শিশুদের শিক্ষার প্রথম স্তম্ভ হলো প্রাথমিক শিক্ষা। ইতিপূর্বে ৬০টি প্রধান শিক্ষকের পদ খালি ছিল। বর্তমানে ৪০ জন প্রধান শিক্ষক পাওয়াতে শিক্ষা ক্ষেত্রে পরিবর্তন এসেছে। প্রধান শিক্ষকের ১৯টি পদ খালি রয়েছে। বর্তমান সরকার প্রাথমিক শিক্ষার উপর গুরুত্ব দিয়েছেন। শীর্ঘ্রই শিক্ষক সংকট সমাধান হবে।