রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৭:১৮ পূর্বাহ্ন
মুহাম্মদ আব্দুল বাছির সরদার:
পাল্টাপাল্টি অভিযোগের পর এবার বিরোধীয় জায়গায় তদন্ত করে সম্পন্ন হয়েছে। সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার চরনারচর ইউনিয়নের পেরুয়া ভূমি অফিসের তহসিলদার আলতাব হোসেন গত শনিবার তদন্ত করেন। তিনি জানান, আমি বিরোধীয় জায়গায় গিয়ে তদন্ত করে আসছি। উভয়পক্ষকে আগামিকাল বুধবারের মধ্যে তাদের কাগজপত্র দেয়ার জন্য বলে এসেছি। এরপর আমি সেগুলো দেখে আগামি ২/৩ দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন তৈরি করবো। তিনি আরো বলেন, বিবাদী শাওন কুমার বৈষ্ণব বলেছেন তিনি নাকি জায়গা কিনেছেন। বাদী জুনু বৈষ্ণবের মানিত স্বাক্ষীগণ জানান, বিবাদী শাওন কুমার বৈষ্ণব কিছু জাগয়া কিনে বাকীগুলো দখল করে নিয়েছেন।
উল্লেখ্য, সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার চরনারচর ইউনিয়নের কামালপুর গ্রামের সরকারি ও মালিকানা জমি দখল করে বোরো জমিতে রূপান্তর করার বিরুদ্ধে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। গ্রামের মৃত সুধীর বৈষ্ণবের পুত্র জুনু বৈষ্ণব স্বাক্ষরিত গত ২৩ অক্টোবর এলাকাবাসির পক্ষে এ অভিযোগ দায়ের করেন।
দায়েরকৃত লিখিত অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেন, একই গ্রামের মৃত উপেন্দ্র কুমার বৈষ্ণবের পুত্র শাওন কুমার বৈষ্ণব চরনারচর চৌধুরী বাড়ির ওয়ারিশের কাছ থেকে সামান্য ভূমি ক্রয় করে আমাদের রেকর্ডীয় ও খাস খতিয়ানভূক্ত পতিত ও চারা রকম ভূমি, যা এলাকাবাসির গবাদি পশুর ঘাস খাওয়ার ও বৈশাখ মাসে ধান মাড়াইয়ের কাজে আদিকাল হতে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। এ রকম ভূমি জোড়ামূলে দখল করে মাটি কেটে বোরো জমি তৈরি করছেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, শাওন কুমার বৈষ্ণবের এহেন কর্মকা-ে এলাকাবাসি ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ায় তাকে এ কাজ থেকে বিরত থাকতে বলা হলেও তিনি আরো বেপরোয়া হয়ে ওঠেন। তিনি কারো কথায় কর্ণপাত না করে উল্টো তার লাঠিয়াল বাহিনী দিয়ে আমাদেরকে বিভিন্নভাবে ভয়ভীতি দেখিয়ে হুমকি-ধমকি দিচ্ছেন। এতে এলাকায় চরম আতঙ্ক বিরাজ করায় যে কোন সময় অনাকাঙ্খিত ঘটনার জন্ম দিতে পারে বলেও আশঙ্কা থাকায় শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষার্থে বাধ্য হয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে অভিযোগ দায়ের করা হয় বলেও লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।
সূত্র আরো জানায়, বিরোধীয় জমি হচ্ছে সুনামগঞ্জ জেলার দিরাই উপজেলার চরনারচর ইউনিয়নের চরনারচর মৌজার জেএল নং-৪৫, ফাইনাল খতিয়ান নং-৩২৪, সাবেক দাগ নং-৬৭০, ফাইনাল দাগ নং-৮৯১, পরিমাণ .৩৫ শতক, শ্রেণি-পতিত। ফাইনাল খতিয়ান নং-১১৪, সাবেক দাগ নং-৬৬৮, ফাইনাল দাগ নং-৮৯২, এতে মোট .১৪ শতক পতিত। সাবেক দাগ নং-৬৮৮, ফাইনাল দাগ নং- ৯২৭, এতে মোট .১৫ শতক পতিত। ফাইনাল খতিয়ান নং-১৮২, সাবেক দাগ নং-৬৬৮, ফাইনাল দাগ নং-৮৮৮, এতে মোট .০৮ শতক চারা। সাবেক দাগ নং-৬৫৪, ফাইনাল দাগ নং-৯০৩, এতে মোট .০২ শতক। সাবেক দাগ নং-৬৬৮, ফাইনাল দাগ নং-৮৮৮, এতে মোট .০৮ শতক চারা। সাবেক দাগ নং-৬৫৪, ফাইনাল দাগ নং-৯০৩, এতে মোট .০২ শতক চারা। সাবেক দাগ নং-৬৬৮, ফাইনাল দাগ নং-৯২৭, এতে মোট .১০ শতক লায়েক পতিত। ফাইনাল খতিয়ান নং-৯৪, সাবেক দাগ নং-৬৮৮, ফাইনাল দাগ নং-৮৯২, এতে মোট .০৪ শতক পতিত। সাবেক দাগ নং-৬৮৮, ফাইনাল দাগ নং-৯৩৫, এতে মাট .০৫ শতক পতিত। সাবেক দাগ নং-৬৮৯, ফাইনাল দাগ নং-৯৩৫, এতে মোট .০৪ শতক পতিতসহ আরো অনেক জমি তার দখলে আছে বলে লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বিবাদী শাওন কুমার বৈষ্ণব জানান, আমি গ্রামের অনু চৌধুরী ও বাউল চৌধুরীর কাছ থেকে জমি ক্রয় করেছি। গ্রামের কারো জমি বা সরকারি কোন জমি আমি দখল করিনি। কে বা কারা আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছে, তাও আমি জানি না।
লিখিত অভিযোগ পাওয়ার কথা স্বীকার করে দিরাই উপজেলা নির্বাহী অফিসার শরিফুল ইসলাম জানান, আমাদের এখানে নতুন এসিল্যান্ড এসেছেন, বিষয়টি দেখতে আগামিকাল (সোমবার) তাকে দায়িত্ব দেয়া হবে।