মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ০২:৪৯ অপরাহ্ন
আমার সুরমা ডটকম:
কওমি মাদ্রাসার ছাত্র ও শিক্ষকেরা প্রচলিত সব ধরনের রাজনীতি থেকে মুক্ত থাকবেন বলে সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছে আল-হাইআতুল উলয়া লিল-জামি’আতিল কওমিয়া বাংলাদেশ। আল-হাইআতুলের অধীনে কওমি মাদ্রাসার সর্বোচ্চ স্তর দাওরায়ে হাদিসের পরীক্ষা হয়ে থাকে। রোববার বোর্ডটির স্থায়ী কমিটির এক সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়। এদিন আল-হাইআতুল উলয়া লিল জামিআতিল কওমিয়া বাংলাদেশের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে প্রকাশিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সভায় কওমি মাদ্রাসার ছাত্র ও শিক্ষকরা প্রচলিত সব ধরনের রাজনীতি থেকে মুক্ত থাকবেন বলে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে জামিয়া ইসলামিয়া দারুল উলূম মাদানিয়া মাদ্রাসায় এ সভা হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন আল-হাইআতুল উলয়া লিল জামিআতিল কওমিয়া বাংলাদেশের চেয়ারম্যান আল্লামা মাহমুদুল হাসান।
সভায় কওমি অঙ্গনে বিরাজমান অস্থিরতা থেকে ঐতিহ্যবাহী এই শিক্ষাব্যবস্থার সুরক্ষা এবং ওলামায়ে কেরামের মান বজায় রেখে স্বাভাবিক অবস্থায় ধর্মীয় কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার সুষ্ঠু পরিবেশ তৈরির উদ্যোগ নিয়ে আলোচনা হয়। স্থায়ী কমিটির সভায় কওমি আলেমরা ৬টি সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। সেগুলো হলো- কওমি মাদ্রাসা সম্পর্কিত যাবতীয় বিষয়ে সিদ্ধান্ত ও পদক্ষেপ গ্রহণ করবে একমাত্র আল-হাইআতুল উলয়া। কোনো সংগঠন বা ব্যক্তি আল-হাইআতুল উলয়ার সিদ্ধান্ত ব্যতীত পৃথকভাবে কওমি মাদ্রাসার বিষয়ক কোনো সিদ্ধান্ত বা পদক্ষেপ বা উদ্যোগ গ্রহণ করতে পারবে না। কওমি মাদ্রাসার ছাত্র ও শিক্ষকরা প্রচলিত সর্ব প্রকার রাজনীতি থেকে মুক্ত থাকবে।
কওমি মাদ্রাসা সম্পর্কিত যাবতীয় বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও তত্ত্বাবধানের জন্য আল-হাইআতুল উলয়ার অধীন ৫ বোর্ডের ৫ (পাঁচ) জন, বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া থেকে ৫ জন এবং চেয়ারম্যান কর্তৃক মনোনীত ৫ (পাঁচ) জন সমন্বয়ে ১৫ জনের একটি ‘বাস্তবায়ন সাব-কমিটি’ গঠিত হবে।
উদ্ভূত পরিস্থিতিতে কওমি মাদ্রাসার যে সব নিরীহ ছাত্র, শিক্ষক, আলেম-ওলামা, ধর্মপ্রাণ মুসলমান এবং মসজিদের ইমাম ও মুসল্লীদেরকে গ্রেফতার করা হয়েছে, রমজানের এই রহমতের মাস বিবেচনায় সরকারের কাছে তাদের মুক্তির আহ্বান জানানো হয়।
রমজানের মধ্যেই স্বাস্থ্যবিধি মেনে হিফজ ও মক্তব বিভাগ খুলে দেওয়ার জন্য এবং রমজানের পর কওমি মাদ্রাসার শিক্ষাকার্যক্রম চালু করার জন্য সরকারের কাছে বিশেষভাবে আবেদন করা হয়।
এদিকে আল-হাইআতুল উলয়ার সভার সিদ্ধান্ত সরকারকে অবহিত করার জন্য ৩ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাত করবে। সদস্যরা হলেন মাওলানা মুফতি রুহুল আমীন, মাওলানা মুফতি মোহাম্মদ আলী ও মাওলানা মুফতি জসীমুদ্দীন।
সভায় উপস্থিত ছিলেন বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশের সহ-সভাপতি মাওলানা আব্দুল কুদ্দুস, মাওলানা নূরুল ইসলাম জিহাদী, মাওলানা সাজিদুর রহমান, মাওলানা আব্দুর রহমান হাফেজ্জী, মাওলানা আতাউল্লাহ ইবনে হাফেজ্জী, মাওলানা ছফিউল্লাহ, মাওলানা মুফতি ফয়জুল্লাহ, মাওলানা মুছলেহুদ্দীন রাজু, মাওলানা উবায়দুর রহমান মাহবুব, মহাসচিব মাওলানা মাহফুজুল হক, সহকারী মহাসচিব মাওলানা মুফতি নূরুল আমীন, মাওলানা মুফতি জসীমুদ্দীন।
সভায় আল-হাইআতুল উলয়ার কো-চেয়ারম্যান আল্লামা মুফতি ওয়াক্কাসের মাগফিরাত কামনা করা হয় এবং বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতে দেশবাসীসহ বিশ্বমানবতার জন্য দোয়া করা হয়।