সাইফ উল্লাহ, সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি:
সুনামগঞ্জের জামালগঞ্জ উপজেলায় সরকার কর্তৃক ১০ টাকা চাল বিতরণের মাস্টার রোলে ডিলারের নিজ হাতে টিপ প্রদানের অভিযোগ পাওয়া গেছে। অভিযোগকারী উপজেলার বেহেলী ইউনিয়নের বেহেলী গ্রামের মৃত সমরেন্দ্র কুমার দাস এর ছেলে সুজিত কুমার দাস। অভিযোগ দাখিল করেন, জামালগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের বরাবর পৃথক পৃথকভাবে অভিযোগ দাখিল করা হয়।
সুজিত কুমার দাস এর অভিযোগ থেকে জানা যায়, একই গ্রামের মৃত অবলা রঞ্জন রায় এর ছেলে নির্মাল্য কান্তি রায়, মৃত প্রকৃতি রঞ্জন রায় প্রিয়ব্রত রায়, প্রণব কান্তি রায়, মৃত বকুল রায় এর ছেলে নিরুপম রায় বিবাদীগণ নিজ হাতে টিপ প্রদানে বাধা দেওয়া আমাকে রক্তাক্ত জখম ও প্রাণাশের হুমকি দামকি প্রদান করে আসছে। স্বাক্ষীগণ বেহেলী ইউনিয়নের আবু সাঈদ, মো. রফিজ উদ্দিন, মো. ফারুক মিয়া, জয়নাল মিয়া প্রমুখ।
২০-৯-২১ তারিখ প্রথম কিস্তির ফেয়ার প্রাইজের ১০ টাকা কেজির মুল্যের চাল বেহেলী বাজারে নিজ ঘরে বিতরণ কালে অত্র এলাকার দায়িত্ব প্রাপ্ত ডিলার বেহেলী ইউনিয়ন শাখার আওয়ামী লীগের ইউনিয়ন সভাপতি নির্মাল্য কান্তি রায় (সসিম)চাল গ্রহণ কারীদের বিপরীতে তাদের কিছু সংখ্যক স্বাক্ষর নিজ হাতে বৃদ্ধাআঙ্গুলী দিয়ে অনেক গুলি টিপসহি শুধু দেয় না বরং নিয়ম ভঙ্গ করে প্রকৃত কার্ড দারিদের চাল কার্ডদারীদের কে চাল নিজ হাতে হস্তান্তর না করে তাহার আত্নীয় স্বজনের কাছে চাল বিতরণের বিধি ভঙ্গ করে চাল বিতরণ করে। আমি বাধা দিলে আমাকে ধমক দিয়ে হেনন্থ করার চেষ্টা করে। সেই সুত্র ধরে ১২ -১০-২১ তারিখ রোজ মঙ্গল বার অনুমানিক দুপুর ২ ঘটিকার সময় বেহেলী ইউনিয়নের ডিলার এবং ১নং বিবাদী নির্মাল্য কান্তি রায় ফেয়ার প্রাইজের ১০ টাকা কেজির মুল্যের চাল বিতরণের সময় আমি তার দোকানের সামনে দিয়ে হেটে যাওয়ার সময় পূৃর্বের রেশ ধরে ২,৩ ও ৪নং বিবাদীদের সহযোগিতায় নিয়ে তার ঘরের ভিতর নিয়ে আমাকে ১নং বিবাদী কিলঘুসি দিয়ে রক্তাক্ত জখম করে এবং ২নং বিবাদী আমার সাথে থাকা মোবাইল ফোন এবং মানি ব্যাগে রাখা দুই হাজার টাকা জোর করে নিয়ে যায়। এই সময় আমি সুর চিৎকার শুরু করিলে আশেপাশে থাকা মানিত স্বাক্ষীগণ দ্রুত ঘটনার স্থলে এসে আমাকে প্রাণ রক্ষা করেন।নতুবা বিবাদীগণরা আমাকে প্রাণে মারিয়া ফেলিত। এই ঘটনার পরে জরুরী ভিত্তিতে যখন আমার ভাই দিপক আমাকে জামালগঞ্জ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে আসার পথে ৩ ও ৪নং বিবাদীগনরা আমাকে আবার আক্রামণ করে। তখন আমাকে দ্রুত গাড়ী করে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে এসে জরুরী বিভাগে চিকিৎসা করি।
এখানে উল্লেখ্য যে, বিবাদী প্রিয়ব্রত রায় আমার সাথে এই ঘটনার দু দিন পর ১৪-১০-২১ ইং তারিখ গ্রামের দশের সাথে অসৎ আচারণ করে। যার ফল শ্রুতিতে আমাদের গ্রামের সার্বজনিত দুর্গা পুজার কমিটির সভাপতি তাৎক্ষনিকভাবে আইন শৃংখলা রক্ষা বাহিনীর কাছে ফোন করলে তারা দ্রুত স্থানে পৌছে বিবাদীকে পান তখন গ্রামের মানুষের অনুরোধে তার কাছ থেকে মুছলেকা নিয়ে গ্রাম বাসীর মাধ্যমে ঘটনার সুষ্ট বিচার করে তিন দিনের ভিতর ২নং বিবাদীর অঙ্গীকারসহ যথাযত কতৃপক্ষের কাছে জমা দেওয়ার জন্য নির্দেশ দেন। সারকারী চাল ও সম্পাদ আত্নসাতের প্রতিবাদ করায় আমাকে যে শারিরিক নির্যাতন, সামাজিক অপমান ও সরকারী ভাবমূতি বিনষ্ট ও দরিদ্রদের খাদ্যধিকার থেকে বঞ্চিত করেছে তার দৃষ্টান্ত শান্তি ও আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি করছি। উপজেলা জরুরী বিভাগের চিকিৎসা নেওয়ার কারণে অভিযোগ করিতে সামান্য বিলম্ব হইল।
মহোদয় সমীপে প্রার্থনা যে, উক্ত বিষয়ে বিবেচনা করে ঘটনা তদন্ত করে অপরাদীদের দৃষ্টান্ত মুলক শান্তি ও আমার জীবনের ঝুকি রহিত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণে আপনার সদয় মর্জি কামনা করছি।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত ডিলার ও বেহেলী ইউপি আওয়ামীলীগের সভাপতি নির্মাল্য কান্তি রায় এর কাছে মুঠোফোনে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি কখনও তাহাকে আঘাত করিনী, আমার কোন লোক তাহাকে আক্রামণ করে নাই, কি ভাবে আঘাত প্রাপ্ত হল তাহা আমার জানা নেই।
এ ব্যাপারে জামালগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ইকবাল আল আজাদ বলেন, তদন্ত করে সুষ্ট বিচার করা হবে, এর জন্য প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করি।
এব্যাপারে জামালগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিশ্বজিৎ দেব বলেন, প্রাথমিক ভাবে তদন্ত করা হয়েছে, যদি সত্যতা পাওয়া যায় তাহলে আইন অনুযায়ী অপরাধীদের বিচার করা হবে।