রবিবার, ১৩ অক্টোবর ২০২৪, ০১:২১ পূর্বাহ্ন

ব্রেকিং নিউজ :
প্রতিনিধি আবশ্যক: অনলাইন পত্রিকা আমার সুরমা ডটকমের জন্য প্রতিনিধি নিয়োগ দেয়া হবে। আগ্রহীরা যোগাযোগ করুন : ০১৭১৮-৬৮১২৮১, ০১৭৯৮-৬৭৬৩০১
ব্রিটেনের পাঠাগারে মিলল ‘মহানবীর যুগের’ কোরান

ব্রিটেনের পাঠাগারে মিলল ‘মহানবীর যুগের’ কোরান

আমার সুরমা ডটকম :

বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে করা রেডিওকার্বন পরীক্ষার পর দাবি করা হয়েছে, কোরানের পাণ্ডুলিপিটি কমপক্ষে ১ হাজার ৩শ ৭০ বছর আগে লেখা হয়েছিল। বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এ পর্যন্ত পাওয়া কোরান শরিফের মধ্যে সবচেয়ে পুরনো হচ্ছে আবিষ্কৃত এই পাণ্ডুলিপিটি। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যিনি পাণ্ডুলিপিটি লিখেছিলেন সম্ভবত তাকে মহানবী (সা.) চিনতেন, এবং ওই ব্যক্তি সম্ভবত মহানবীর কাছ থেকে কোরানের বাণীগুলো শোনার পরই তা লিপিবদ্ধ করেছিলেন। অর্থাৎ আবিষ্কৃত কোরানের পাণ্ডুলিপিকে মহানবীর সমসাময়িক বলা যেতে পারে দাবি করেছেন তারা। বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বার্মিংহাম বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রন্থাগারে মধ্যপ্রাচ্যের ওপর লেখা কিছু বইয়ের সঙ্গে প্রায় শতবর্ষ ধরে পড়ে ছিল কোরানের দুটি পাতা। একজন পিএইচডি গবেষকের চোখে পড়ার পর পাতা দুটি রেডিওকার্বন পরীক্ষায় পাঠানো হয়, আর ফলাফলও আসে চমক জাগানিয়া। বৃটিশ লাইব্রেরির পাণ্ডুলিপি বিষয়ক বিশেষজ্ঞ ড. মুহাম্মদ ঈসা ওয়ালি বলেন, “অসাধারণ এই আবিষ্কার’ মুসলিমদের আনন্দিত করবে।”

মূলত ৫৬৮ থেকে ৬৪৫ খ্রিস্টাব্দ সময়পর্বে সবকিছুই পশুর চামড়া বা পার্চমেন্টে লেখা হতো। বার্মিংহাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যোগে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের রেডিওকার্বন অ্যাকসেলেটর ইউনিটের পরীক্ষায় দেখা গেছে, ভেড়া কিংবা ছাগলের চামড়ায় কোরানের বাণীগুলো হাতেলেখা হয়েছিল।

আবিষ্কৃত কোরান শরিফের পাণ্ডুলিপিটিতে লেখা বাণীগুলো এখনো পরিষ্কারভাবে পড়া যায়। ছবি: বিবিসি 

আবিষ্কৃত কোরান শরিফের পাণ্ডুলিপিটিতে লেখা বাণীগুলো এখনো পরিষ্কারভাবে পড়া যায়। ছবি: বিবিসি

বার্মিংহাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রিশ্চিয়ানিটি ও ইসলামের অধ্যাপক ডেভিড টমাস বলেন, “মুসলিম ইতিহাস অনুযায়ী, মহানবী আল্লাহর কাছ থেকে যেসব বাণী পেয়েছেন, সেগুলোই কোরানে লিপিবদ্ধ করা হয়েছে, যা তিনি ৬১০ থেকে ৬৩২ খ্রিস্টাব্দে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত পেয়েছেন।” পাণ্ডুলিপিটি লিখিত হওয়ার যে সময়ের কথা বলা হচ্ছে, তাতে বলা যেতে পারে, যিনি এটি লিখেছেন তিনি সম্ভবত মহানবীর জীবদ্দশাতেই ছিলেন- বলেন টমাস।

“যিনি এটি লিখেছেন, তাকে সম্ভবত মহানবী ভালোভাবেই চিনতেন। সম্ভবত তিনি (লেখক) তাকে দেখেছেন। তিনি তার (নবী) কথা শুনেছেন। ব্যক্তিগতভাবে তিনি তাকে চিনতেন এবং সম্ভবত এসব কারণেই তাকে লেখার (কোরানের বাণী) অনুরোধ করা হয়ে থাকতে পারে।” তবে আবিষ্কৃত পাণ্ডুলিপিটি হজরতের (সা.) মৃত্যুর পর লেখা হয়ে থাকতে পারে বলে মনে করেন অধ্যাপক টমাস। তিনি জানান, কোরানের কিছু কিছু অংশ পার্চমেন্ট, পাথর,  খেজুর গাছের পাতায় ও উটের হাড়ে লেখা হয়েছিল। আর পুস্তক আকারে কোরান লেখার কাজ শেষ হয় ৬৫০ খ্রিস্টাব্দের দিকে। তিনি বলেন, “এ হিসাবে জোর দিয়েই বলা যায়, পার্চমেন্টে লেখা এই পাণ্ডুলিপিটি মুহাম্মদের (সা.) মৃত্যুর পর দুই দশকের কম সময়ের মধ্যে লেখা হয়েছিল।” কোরানের দুটি পাতায় যে ধারা অনুসারে লেখা হয়েছে, লেখার সেই ‘হিজাজি’ ধারাটি প্রাচীন আরবে অনুসরণ করা হতো।

‘হিজাজি’ লেখার ধারাটি ইসলামের প্রথম তিন খলিফা- হজরত আবু বকর (রা.), হজরত ওমর (রা.) ও হজরত ওসমান (রা.) এর শাসনামলে প্রচলিত ছিল বলে জানিয়েছেন অধ্যাপক ঈসা ওয়ালি। ৬৩২ থেকে ৬৫৬ সাল পর্যন্ত মুসলিম বিশ্ব শাসন করেছেন এই তিন খলিফা। আর তৃতীয় খলিফা ওসমান (রা.) এর সময়ই কোরান শরিফের পূর্ণাঙ্গ কিছু কপি বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে দেওয়া হয়।

নিউজটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2017-2019 AmarSurma.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com