শুক্রবার, ০৭ নভেম্বর ২০২৫, ১১:০৭ পূর্বাহ্ন
মুহাম্মদ আব্দুল বাছির সরদার:
হাওর রক্ষা বাঁধের কাজ শেষ না হওয়ার পুরো উপজেলার কৃষক আগাম বন্যার আশঙ্কা করছেন। গত কয়েকদিন ধরে নদীতে পানি বৃদ্ধিতে আশঙ্কা আরও জোরদার হচ্ছে। ফলে বাঁধের কাজের গুণগত মান ভালো না হওয়ায় বাঁধ ভেঙ্গে যাওয়ার আশঙ্কা বিদ্যমান বলে জানান হাওরপাড়ের কৃষক। দিরাই কৃষি অফিস জানায়, এ বছর উপজেলা ৩০ হাজার ১১০ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ করা হয়েছে।
জানা যায়, সুনামগঞ্জের হাওরাঞ্চলের গুরুত্বপূর্ণ ফসল বোরো ধানের ফলন নিশ্চিত ও ঘরে তোলার স্বার্থে প্রতি বছরই হাওর রক্ষা বাঁধের কাজে সরকার অর্থায়ন করে। বিভিন্ন বছরে চাহিদানুযায়ি স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ড বাঁধের কাজ ও অর্থের পরিমাণ কমবেশি করে থাকে। এ বছর দিরাই উপজেলায় ১০৪টি হাওর রক্ষা বাঁধের কাজ হাতে নেয় স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ড, যার প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয়েছে ১৪ কোটি ১৯ লাখ ৩৪ হাজার ১৬৭ টাকা ১৪ পয়সা। তবে বিভিন্ন বাঁধে সংযোজন-বিয়োজনের কারণে ব্যয় আরো বাড়তে পারে। কাজের মেয়াদ ২৮ ফেব্রুয়ারিতে শেষ করার কথা থাকলেও পানি উন্নয়ন বোর্ডের পিআইসি বাস্তবায়ন জেলা কমিটি আরও ১০ দিন সময় বর্ধিত করে। কিন্তু নির্ধারিত মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার পরও এখন পর্যন্ত প্রচুর কাজ বাকি রয়েছে।
সরেজমিন করিমপুর, জগদল ও সরমঙ্গল ইউনিয়নের বেশ কিছু এলাকা ঘুরে দেখা গেছে বাঁধের প্রকৃত চিত্র, যা কৃষকদের মাঝে হতাশা সৃষ্টি করেছে। প্রতি বছরই সরকার প্রচুর টাকা ব্যয় করে হাওর রক্ষা বাঁধের জন্য। কিন্তু অদক্ষ পিআইসির সদস্যরা নানা অজুহাত দেখিয়ে নিম্নমানের কাজ করে। বিষয়টি স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ডের দিরাই অফিসের দায়িত্বশীলরাও স্বীকার করেছেন।
বাঁধে মাটি কাটার কাজ শেষ হলেও অনেক বাঁধেই ঘাস ও ক্লোজার পয়েন্টে বাঁশ এবং সিনথেটিক ব্যথ লাগানো বাকি রয়েছে। ফলে বাঁধের স্থায়ীত্ব নিয়ে আশঙ্কা করছেন স্থানীয় হাওরপাড়ের কৃষক। ইতিমধ্যে নদীতে পানি বেড়ে যাওয়ায় কৃষকদের আশঙ্কা আরও তীব্র হচ্ছে।
বাঁধ ঘুরে দেখা গেছে, মাটি কাটার পর ঠিকমতো দুর্মুজ দেয়া হয়নি। একেবারে শেষ পর্যায়ে এসে এক্সেভেলেটর দিয়ে মাটি বসানো হয়েছে। তাছাড়া পুরাতন বাঁধের মাটি ও ঘাস দিয়ে অনেক নতুন বাঁধে কাজ করা হয়েছে।
এদিকে পানি উন্নয়ন বোর্ডের দিরাই অফিসের উপ-সহকারি প্রকৌশলী শাখা কর্মকর্তা (এসও) এ.টি.এম. মোনায়েম হোসেন জানান, ক্লোজার পয়েন্টে এখন বাঁশ ও ব্যথ লাগানোর কাজ চলছে, তাছাড়া ঘাস লাগানোও শেষ পর্যায়ে চলে এসেছে। কয়েকদিনের মধ্যে সব কাজ শেষ হবে বলেও তিনি জানান।