শনিবার, ০৯ নভেম্বর ২০২৪, ০২:০৫ পূর্বাহ্ন
মুহাম্মদ আব্দুল বাছির সরদার:
রাষ্ট্রয়াত্ত্ব ফোন সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান ‘বিটিসিএল’ দিন দিন গ্রাহক হারাচ্ছে। এ ধারা অব্যাহত থাকলে এব সময় অফিস বন্ধ করে দিতে হবে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা। অফিসে লোকবল না থাকায় বর্তমানে দু’জন লাইনম্যান দিয়ে চলছে অফিসে যাবতীয় কার্যক্রম।
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার একমাত্র সরকারি ফোন সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন্স কোম্পানী লিমিটেড ‘বিটিসিএল’-এর টেলিফোন একচেঞ্জ অফিসটি নানা সমস্যায় জর্জড়িত। লোকবলের অভাব আর সেবার মান ভালো না থাকায় দিন দিন গ্রাহক সংখ্যা হ্রাস পেয়ে বর্তমানে শ’য়ের নিচে চলে এসেছে। অথচ এক সময় দেশ-বিদেশে স্বল্প সময়ে কথা বলার একমাত্র যোগাযোগের মাধ্যম ছিল এটি। গ্রাহকদের আধুনিক সুবিধা দেয়ার লক্ষ্যে এনালগ থেকে ডিজিটালে রূপান্তরিত করা হলেও সময়ের ব্যবধানে এটি এখন নামমাত্র ঠিকে রয়েছে। বর্তমানে মোবাইল ফোনের বাজারে টিকতে পারছে না বলে জানান অফিসে কর্মরতরা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ১৯৮১ সালের ১লা এপ্রিল উদ্বোধন হওয়া দিরাইয়ের হাসপাতাল সংলগ্ন পশ্চিমে স্থাপন করা হয় রাষ্ট্রয়াত্ত্ব টেলিফোন একচেঞ্জ অফিসটি বর্তমানে জনাজীর্ণভাবে এখন দাঁড়িয়ে আছে। সরকার ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে ২০০৬ সালের ২৬ ডিসেম্বর এটিকে ডিজিটালে রূপান্তর করে। একচেঞ্জটি ডিজিটাল হওয়ার আগে সরকারি অফিস-আদালতসহ উপজেলার বিভিন্ন শ্রেণিপেশার লোকজন মিলে গ্রাহক ছিল ৪৯৮ জন। বর্তমানে এর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে শুধুমাত্র ৯৬ জনে। যেখানে কথা বলার জন্য দিন দিন মোবাইলের গ্রাহক সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে, সেখানে মোবাইলের চেয়ে কম মূল্যেও গ্রাহক ধরে রাখতে পারছে না দিরাইয়ের বিটিসিএল।
এদিকে অফিসে পর্যাপ্ত পরিমাণ জনবল থাকার কথা থাকলেও বর্তমানে সিনিয়র ও জুনিয়র পদে দু’জন লাইনম্যান রয়েছে। তারাই অফিসসহ লাইনের কাজ করছেন। তাছাড়া প্রয়োজন দেখা দিলে তারা শাল্লা উপজেলার কাজও করতে হয়। সূত্র আরও জানায়, অফিসে বসার মতো কোন চেয়ার-টেবিল নেই। সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন অফিস থেকে কোন ধরণের আসবাবপত্র দেয়া হচ্ছে না। বার বার চাহিদা পাঠালেও তারা এ ব্যাপারে কোন উদ্যোগই নিচ্ছে না। অফিসের জন্য অতি প্রয়োজন একটি আলমিরা না থাকায় জরুরী কাগজপত্রও ঠিকমতো রাখা যাচ্ছে না। নিজেদের টাকা খরচ করে টেলিফোন সেট ক্রয়সহ সকল কাজ আমাদেরই টাকায় করা হচ্ছে। বিটিসিএল দিরাই অফিসের নেই কোন নিরাপত্তা দেয়াল। ফলে সব সময়ই থাকে এটি নিরাপত্তাহীন অবস্থায়। এর আগেও একবার অফিসে ঢুকে টেলিফোন লাইন কেটে নিয়েছিল চোরেরা। এছাড়া একটি টিউবওয়েলের অতি প্রয়োজন থাকা সত্ত্বেও কর্তৃপক্ষ দিচ্ছে না। তবে কর্মরতরা জানান, লাইন চার্জ কমালে ও সেবার মান ভালো হলে এখনও বাড়বে গ্রাহক সংখ্যা। অন্যথায় দিন দিন গ্রাহক সংকটে পড়ে একদিন বন্ধ হয়ে যেতে পারে সরকারের আয়ের গুরুত্বপূর্ণ এ খাতটি।