মঙ্গলবার, ০৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:২৫ অপরাহ্ন
আমার সুরমা ডটকম : আগামীকাল বুধবার দেশের ২৩৪ পৌরসভায় হচ্ছে ভোট। এ নিয়ে চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীদের প্রচারণা শেষ হয়েছে গত মধ্যরাতে। প্রথমবারের মতো দলীয় প্রতীকে এ পৌর নির্বাচন হচ্ছে। তবে নির্বাচন সুষ্ঠু হবে কিনা এ নিয়ে রয়েছে যথেষ্ট সংশয়। ইতিমধ্যে কেন্দ্র দখল ও ভোট ডাকাতির আভাস পাওয়া যাচ্ছে। পৌরসভায় জড়ো করা হচ্ছে বহিরাগত সন্ত্রাসীদের। শাসকদল সশস্ত্র ক্যাডারদের সহযোগীতায় কেন্দ্র দখলে ষড়যন্ত্র করছে তবে আওয়ামী লীগ যাতে তাদের নীলনকশা বাস্তবায়ন করতে না পারে সে লক্ষ্যে বিরোধী দলগুলোও প্রতিরোধ গড়ে তোলার দৃঢ়সংকল্প নিয়েছে ।
ইউনিয়ন পর্যায় থেকে এমনকি পাশের জেলা থেকেও প্রশিক্ষিত ক্যাডারদের নির্বাচনী এলাকায় নিয়ে আসা হচ্ছে। নির্বাচন শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাদের এলাকায় থাকার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। গোয়েন্দা সংস্থার তথ্য এবং শীর্ষ নিউজের স্থানীয় প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর থেকে জানা গেছে, ২৩৪ পৌরসভায় অন্তত তিন হাজার প্রশিক্ষিত ক্যাডার সক্রিয় রয়েছে। এদের অধিকাংশই ক্ষমতাসীনদের ছত্রছায়ায় রয়েছে বলে জানা গেছে। অন্যদিকে চলছে বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের গ্রেফতারে বিশেষ অভিযান। তবে বহিরাগতদের এলাকা ত্যাগের নির্দেশও দিয়েছে ইসি।
ভোট ডাকাতি ও কেন্দ্র দখলের আশংকায় বিএনপি, স্বতন্ত্র প্রার্থী এমনকি আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী নির্বাচন কমিশনে অভিযোগও দিয়েছেন। আওয়ামী লীগের বেশ কয়েকজন প্রার্থী সংবাদ সম্মেলন করে পাল্টা বিরোধী দলীয় প্রার্থীদের বিরুদ্ধে কেন্দ্র দখল ও ভোট ডাকাতির আশংকার কথা বলেছেন।
সূত্র মতে, আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে কেন্দ্র দখলে রাখার ছক তৈরি করা হয়েছে। তাদের সঙ্গে পুলিশ প্রশাসনকেও সহযোগী হিসেবে রাখার পরিকল্পনা করা হয়েছে। এসব কেন্দ্রে শেষ পর্যন্ত অবস্থানের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তবে বিএনপি ও জামায়াত কেন্দ্রে অবস্থানের জন্য নেতাকর্মীদের শেষ পর্যন্ত মাঠে থাকার নির্দেশ দিয়েছে। নির্বাচনের দিন বড় ধরনের সহিংসতার আশংকাও করা হচ্ছে। কেন্দ্রে জঙ্গি হামলার আশংকাও রয়েছে।
গোয়েন্দা সংস্থার তথ্য মতে, দেশের বিভিন্ন পৌরসভায় দুই হাজারেরও বেশি সন্ত্রাসী কেন্দ্র দখলে রাখার ছকে সক্রিয় রয়েছে। এদের আশ্রয়দাতা বা নিয়ন্ত্রণ করছে ৬শ’রও বেশি গডফাদার। এসব সন্ত্রাসী ভোট কেন্দ্র দখল ও ব্যালট পেপার ছিনতাইসহ নাশকতা চালাতে পারে বলে আশংকা প্রকাশ করেছে গোয়েন্দা সংস্থা। গোয়েন্দা সংস্থার ওই প্রতিবেদন ইতিমধ্যে নির্বাচন কমিশনে জমাও দেয়া হয়েছে। ইসি সূত্র জানিয়েছে, বহিরাগতদের এলাকা ত্যাগের নির্দেশও দেয়া হয়েছে। এ নিয়ে বিভিন্ন পৌরসভায় মাইকিং করেও সতর্কতা জারি করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। ইসি সূত্র আরও জানায়, বৃহস্পতিবার পর্যন্ত মাঠে থাকবে পুলিশ, বিজিবি, কোস্টগার্ড, আনসার ভিডিপি, এপিবিএনসহ সংশ্লিষ্টরা।
প্রতিনিধিদের পাঠানো তথ্য থেকে জানা গেছে, আওয়ামী লীগের বহিরাগত প্রশিক্ষিত ক্যাডারকে কেন্দ্র দখল ও ভোট ডাকাতির জন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে। তাদের ইউনিয়ন থেকে অথবা পাশের উপজেলা ও জেলা থেকে নিয়ে আসা হয়েছে। বেশ কয়েকটি পৌরসভায় এমন ছক তৈরি করেছে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীরাও।
জঙ্গি হামলারও আশংকা রয়েছে বিভিন্ন কেন্দ্রে। সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ রাজশাহী ও রংপুর অঞ্চলের ভোটকেন্দ্রগুলো। জঙ্গি হামলার বিষয়টি মাথায় রেখে বাড়তি নিরাপত্তার জন্য রিটার্নিং কর্মকর্তাদের প্রতি পরামর্শ দিয়েছেন গোয়েন্দারা। এ নিয়ে বেশ কয়েকটি গোয়েন্দা সংস্থা প্রতিবেদনও দিয়েছে। আইনশৃংখলা কমিটির সভায়ও এ নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
রাঙ্গামাটিতে বিএনপির মেয়র প্রার্থী সাইফুল ইসলাম চৌধুরী অভিযোগ করেন, রাঙ্গুনিয়া, রাউজানসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে অপরিচিত লোক নিয়ে এসে শহরে জড়ো করছে আওয়ামীলীগ। এ পৌরসভার রিজার্ভবাজারকেন্দ্রিক ইসলামপুর, পুরাণপাড়া, নিউ রাঙ্গামাটি স্কুল, শহীদ আবদুল আলী একাডেমি, শিশু একাডেমি, সিনিয়র মাদ্রাসা, শাহ উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্র দখল করে ভোট ডাকাতির ভয়াবহ পরিকল্পনা করা হচ্ছে। শরীয়তপুরের নড়িয়ায় আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীর বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালানোর অভিযোগ করেছে আওয়ামী লীগ। ঝালকাঠির নলছিটি পৌরসভার কাউন্সিলর প্রার্থী কাজী জাহাঙ্গীরসহ পাঁচজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বরিশালের মেহেন্দিগঞ্জ, কলাপাড়া, কুয়াকাটাসহ বিভিন্ন পৌরসভায় বহিরাগত সন্ত্রাসী জড়ো করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। মেহেন্দিগঞ্জের ওসি উজ্জ্বল কুমার দে জানান, এরই মধ্যে বহিরাগত ও অপরিচিত লোকজনকে এলাকা ত্যাগের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। কলাপাড়ায় ২৫ ভাড়াটে সন্ত্রাসী পটুয়াখালী থেকে আনা হয়েছে বলে জানা গেছে। এছাড়া রাতে আরও ৭৫ সন্ত্রাসী আসার কথা রয়েছে।
কুয়াকাটায় আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টির মেয়র প্রার্থীরা পাল্টাপাল্টি সংবাদ সম্মেলন করে বহিরাগত সন্ত্রাসী আনার অভিযোগ করেন। সিলেটে ১৬টি পৌরসভার মধ্যে ৭টি পৌরসভায় শাসকদলের ক্যাডারদের কেন্দ্র দখল করে দলীয় প্রার্থীর পক্ষে ভোট কাস্টিংয়ের আশংকা করেছে বিএনপি। বিএনপির কেন্দ্রীয় সহসাংগঠনিক সম্পাদক ডা. সাখাওয়াত হোসেন জীবন অভিযোগ করেন, হবিগঞ্জ, শায়েস্তাগঞ্জ, মৌলভীবাজার, কুলাউড়া, সুনামগঞ্জ, জগন্নাথপুর ও গোলাপগঞ্জ পৌরসভায় জনরায় ছিনিয়ে নেয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে আওয়ামী লীগ। কোনো ষড়যন্ত্রই যাতে বিএনপির প্রার্থীদের বিজয় ছিনিয়ে নিতে না পারে সে ব্যাপারে দলীয় নেতাকর্মীদের কেন্দ্র পাহারায় থাকার আহ্বান জানান তিনি। চট্টগ্রামের বিভিন্ন পৌরসভায় আওয়ামী লীগ প্রার্থীরা বহিরাগত সন্ত্রাসীদের জড়ো করেছে বলে অভিযোগ করেছেন অধিকাংশ প্রার্থী। বিএনপির বিভাগীয় নির্বাচন মনিটরিং সেলের সদস্য সচিব ও বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মীর মো. নাছির উদ্দিন এরই মধ্যে অভিযোগ করেছেন, সরকারদলীয় প্রার্থীর পক্ষে বিপুল সংখ্যক বহিরাগত সন্ত্রাসী বিভিন্ন পৌরসভায় অবস্থান করছে। এরই মধ্যে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটেছে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড, মিরসরাই, রাঙ্গুনিয়া, সাতকানিয়া, পটিয়া, বাঁশখালী ও বারৈয়ারহাট পৌরসভায়।
মিরসরাই পৌরসভার বিএনপির মেয়র প্রার্থী রফিকুল ইসলাম পারভেজ বলেন, পৌর নির্বাচনকে সামনে রেখে এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসী সংগ্রাম, জামশেদ, আলম, মোয়াজ্জেম, জাহিদ হোসেন আবার ফিরে এসেছে। তারা স্থানীয় আওয়ামী লীগ সমর্থিত কাউন্সিলর প্রার্থী নূর নবী, রাজুসহ বেশ কয়েকজনের বাসায় অবস্থান নিয়েছে। তারা প্রকাশ্যে দা, ছুরি, কিরিচ ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে মহড়া দিচ্ছে।
রাঙ্গুনিয়া পৌরসভার বিএনপির মেয়র প্রার্থী হেলাল উদ্দিন বলেন, ভোটকেন্দ্র দখল করতে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ভাড়া করে বহিরাগত সন্ত্রাসী এনেছে। রাউজানের বিএনপির মেয়র প্রার্থী কাজী আবদুল্লাহ আল হাসান বলেন, চট্টগ্রাম শহরের বিভিন্ন কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র, ছাত্রলীগ-যুবলীগের ক্যাডার এলাকায় এসেছে। নগরীর এমইএস কলেজ, ইসলামিয়া কলেজ, সিটি কলেজ ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগ ক্যাডাররা কীভাবে ভোট ডাকাতি করবে, কেন্দ্র দখল করে ব্যালট পেপার ছিনতাই করবে এসব ছক বা পরিকল্পনা করছে। সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের মতো ভোট ডাকাতির মহোৎসবের পরিকল্পনা করছে তারা। সীতাকুণ্ড পৌরসভার আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী অবসরপ্রাপ্ত নায়েক শফিউল আলম বলেন, রোববার সন্ধ্যায় সীতাকু- প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করার জন্য উপস্থিত হওয়ার পর দলের মনোনীত প্রার্থী বদিউল আলমের অনুসারী ভাড়াটে সন্ত্রাসীরা প্রেস ক্লাবে হামলা চালায়। এ থেকে সহজে অনুমেয়, তারা নির্বাচনের দিন ভোটকেন্দ্র দখল করে ভোট নিয়ে নেবে।
টাঙ্গাইলের ৮ পৌরসভাতেই ভোট ডাকাতির আশংকা করা হচ্ছে। জেলার সর্বোচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ পৌরসভার মধ্যে মধুপুর, ভূঞাপুর, গোপালপুর ও সখীপুরের কয়েকটি কেন্দ্র রয়েছে। কুমিল্লার চান্দিনা, হোমনা, দাউদকান্দি, লাকসাম, বরুড়া ও চৌদ্দগ্রাম পৌর এলাকায় বহিরাগতদের আনাগোনা বৃদ্ধি পেয়েছে বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন। এসব পৌরসভার ভোট কেন্দ্রের আশপাশে আগে থেকেই বহিরাগত সন্ত্রাসীদের জড়ো করা হচ্ছে বলে বিএনপি প্রার্থীদের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে। যশোর, চৌগাছা, নওয়াপাড়া, মণিরামপুর, বাঘারপাড়া ও কেশবপুর পৌরসভায় ১২৬টি কেন্দ্রের মধ্যে ১০১টি ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। বিএনপি ও স্বতন্ত্র প্রার্থীরা অভিযোগ করে আসছেন, কেন্দ্রওয়ারী আওয়ামী লীগের প্রার্থীর পক্ষে ক্যাডার বাহিনী নিযুক্ত করা হয়েছে। চৌগাছায় আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী স্বতন্ত্র প্রার্থী এসএম সাইফুর রহমান বাবুল অভিযোগ করেন, নৌকার প্রার্থী কেন্দ্রওয়ারী ভোট কাটার কমিটি গঠন করেছে। ময়মনসিংহের ফুলবাড়ীয়া, গফরগাঁওসহ বেশ কয়েকটি পৌরসভায় ভোট ডাকাতির আশংকা রয়েছে। এছাড়া বগুড়া, রংপুর চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, পাবনাসহ বিভিন্ন পৌরসভায় ভোট ডাকাতির আশংকার কথা জানিয়েছেন প্রার্থীরা।
এদিকে পৌরসভা নির্বাচনে প্রতিদিনই সহিংস ঘটনা ঘটছে। গত এক মাসে কমপক্ষে ৫০টি সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। সরকারি দলের ২৩ জন মন্ত্রী-এমপির বিরুদ্ধে আচরণবিধি লংঘনের অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া প্রার্থীদের ভয়ভীতি প্রদর্শন, সহিংসতায় তিনজনের মৃত্যুসহ নানান অনিয়ম হলেও নির্বাচন কমিশন নির্বিকার বলে অভিযোগ করেছে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন)।
সোমবার রাজধানীর মুক্তি ভবনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটি এ অভিযোগ করে। এ সময় বক্তারা বলেন, কোনো নির্বাচনে অনিয়মের অভিযোগ উঠলে কমিশনকে প্রার্থিতা বাতিলের ক্ষমতা দেয়া হয়েছে। রয়েছে জেল-জরিমানার ক্ষমতা। কিন্তু বর্তমান ‘স্বাধীন’ নির্বাচন কমিশন ক্ষমতা প্রয়োগে অপারগ বা অনাগ্রহী। তাই আচরণবিধি লংঘন ও সহিংসতার ঘটনা ঘটেই চলছে। এছাড়া পৌর নির্বাচন ইসির জন্য একটি পরীক্ষা বলেও মন্তব্য করেন বক্তারা। সংবাদ সম্মেলনে ড. বদিউল আলম মজুমদার আরো বলেন, ২৩ জন মন্ত্রী-এমপির বিরুদ্ধে আচরণবিধি লংঘনের অভিযোগ উঠেছে। এ ব্যাপারে কমিশন কোনো কঠোর ব্যবস্থা নেয়নি। বরং এ ব্যাপারে নির্বাচন কমিশনাররা বিভিন্ন সময় বিভিন্ন বক্তব্য দিয়ে নিজেদের হাসির পাত্রে পরিণত করেছে।
এদিকে ফেনীর তিন পৌরসভায় ৪৮টি কাউন্সিলর পদের মধ্যে ৪৪টিতেই প্রার্থীরা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, এসব পৌরসভায় মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার আগের দিন প্রার্থীদের কাছ থেকে জোর করে মনোনয়নপত্র ছিনিয়ে নেয়ার অভিযোগ গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। কিন্তু অজ্ঞাত কারণে কমিশন কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।
মাগুরা, পাইকগাছা ও বেতাগী পৌরসভায় আওয়ামী লীগ একাধিক মনোনয়নপত্র জমা দিলেও একজনকে বৈধ ঘোষণা করা হয়েছে, যা নির্বাচনী আইনের পরিপন্থী। এছাড়া কারসাজির মাধ্যমে সরকারি দলের বিদ্রোহী ও রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের সমর্থিত প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিলের অভিযোগ উঠেছে বলে তিনি জানান। ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, গত তিনটি সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে ব্যাপক অনিয়ম ও কারচুপির সংবাদ আমরা গণমাধ্যমের সুবাদে জানতে ও দেখতে পেরেছি। তাই আসন্ন নির্বাচনে গণমাধ্যমের রিপোর্টিংয়ের ওপর বাধা-নিষেধ আরোপ করার কমিশনের সিদ্ধান্ত কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।
যেসব প্রার্থী নিজে বা প্রার্থীর পক্ষে অনিয়ম করা হচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার জন্য ইসির প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, প্রয়োজনে দোষীকে জেলে দিন। এমনকি দু-একজনের প্রার্থিতা বাতিল করুন। প্রয়োজনে নির্বাচন স্থগিত বা বাতিল করুন।
সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে নির্বাচন নিশ্চিত করতে নির্বাচন কমিশনকে সার্বিক সহযোগিতা প্রদানের জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান তিনি। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কমিশন সক্রিয় না হলে নির্বাচনে সেনা মোতায়েন করেও কোনো সুফল পাওয়া যাবে না।
এম হাফিজউদ্দিন খান বলেন, এবারই প্রথম দলভিত্তিক পৌর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। কিন্তু আমাদের দেশে এখনও দায়বদ্ধ ও পরিপূর্ণ গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল গড়ে ওঠেনি। তাই হত্যা মামলার আসামিসহ অনেক অনাকাঙ্ক্ষিত ব্যক্তি মনোনয়ন পেয়েছেন।
পৌর নির্বাচনের মাধ্যমে সরকার পরিবর্তন হবে না উল্লেখ করে সৈয়দ আবুল মকসুদ বলেন, এ নির্বাচনে জনসমর্থন কাদের পক্ষে তা জানা সম্ভব হবে। বর্তমান নির্বাচন কমিশনের তরফ থেকে গণমাধ্যমের ওপর বাধা-নিষেধ আরোপ করা হয়েছে, যা গণতান্ত্রিক নয়। বর্তমান কমিশনের বিদায়ের সময় কাছে চলে এসেছে মন্তব্য করে পৌর নির্বাচনে কমিশন কঠোর পদক্ষেপ নেবে বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি। সূত্র :শীর্ষ নিউজ