শনিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৭:০২ পূর্বাহ্ন
আমার সুরমা ডটকম : ‘দূরের মানুষ কাছে আস, শুনবে যদি আমার গান’ এই গানের কলি উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বলেছেন, ‘আমার মঞ্চের চারপাশ ঘিরে যেভাবে বাঁশের বেড়া দেওয়া হয়েছে এতে করে দূরের মানুষ কাছে আসবে তো দূরের কথা, উল্টো কাছের মানুষ দূরে চলে যায়। বঙ্গভবনে আরাম আয়েশে থাকলেও আপনাদের কাছে আসতে মন চায়। কিন্তু ইচ্ছে থাকলেও এই বেড়ার কারণে আপনাদের কাছে আসতে পারি না।’ রোববার বিকেলে কিশোরগঞ্জে আজিম উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের শতবর্ষ পূর্তি উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত এক ছাত্র-শিক্ষক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যের একপর্যায়ে স্থানীয় দাবি-দাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে রসিকতা করে এসব কথা বলেন রাষ্ট্রপতি।
রাষ্ট্রপতি এ সময় বলেন ‘আমি প্রথমে স্পিকার ও পরে রাষ্ট্রপতি হতে সক্ষম হলেও কখনো মন্ত্রী হতে পারি নাই। তাই আমার কোনো ক্ষমতা নাই। আমাকে শুধু মন্ত্রীদের অনুরোধ করে যেতে হয়।’ রাষ্ট্রপতির এ বক্তব্যে উপস্থিত ছাত্র-শিক্ষক ও সুধীজনদের মধ্যে হাস্যরসের সৃষ্টি হয়। বক্তব্যের শুরুতে আবদুল হামিদ শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেন, ‘স্বাধীন দেশের নাগরিক হিসেবে আমাদের স্বপ্ন এবং স্বপ্ন জয়ের ইচ্ছে থাকতে হবে। আর এ স্বপ্ন পূরণে থাকতে হবে শিক্ষার পাশাপাশি অধ্যবসায়, চর্চা ও প্রচেষ্টা। আমরা এখন একবিংশ শতাব্দীতে বাস করছি। বিশ্ব এখন পূর্বের যেকোনো সময়ের তুলনায় অনেক বেশি প্রতিযোগিতামূলক ও চ্যালেঞ্জিং। এই চ্যালেঞ্জকে মোকাবিলা করেই আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। নতুন প্রজন্মকে জ্ঞান বিজ্ঞান ও দক্ষতায় হতে হবে বিশ্বমানের।’
রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘দেশ ও জাতির কল্যাণই হবে তোমাদের মূল লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য। কোনো ধরনের লোভ লালসা ও হীন স্বার্থ চরিতার্থের মনোবৃত্তি যেন তোমাদের কোমল মনকে কলুষিত করতে না পারে সে ব্যাপারে সজাগ থাকতে হবে।’ জনগণের অর্থে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিচালিত হয়। আর এ কারণে দেশ ও জনগণের কাছে আমরা প্রত্যেকেই দায়বদ্ধ উল্লেখ করে আবদুল হামিদ আরো বলেন, ছাত্রছাত্রীদের সুশিক্ষিত ও দক্ষ মানবসম্পদে পরিণত করতে জ্ঞান ও অভিজ্ঞতার মাধ্যমে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে। উপবৃত্তি ও বিনামূল্যে বই বিতরণের উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, শিক্ষার প্রসার ও মান উন্নয়নে সরকার আন্তরিক ও সচেষ্ট রয়েছে। কিশোরগঞ্জে একটি পূর্ণাঙ্গ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনে প্রধানমন্ত্রী একমত হয়েছেন জানিয়ে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ অবিলম্বে এর নির্মাণকাজ শুরু হবে বলে ঘোষণা করেন। তিনি আজিম উদ্দিন হাই স্কুলের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে বিদ্যালয়টিকে সরকারীকরণের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দেন। সবশেষে তিন দিনব্যাপী উৎসবের উদ্বোধনের ঘোষণা করেন রাষ্ট্রপতি।
শতবর্ষ পূর্তি উদযাপন কমিটির সভাপতি আবুল কাশেমের সভাপতিত্বে সমাবেশে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মুজিবুল হক চুন্নু, সংসদ সদস্য যথাক্রমে সোহরাব উদ্দিন, আফজাল হোসেন ও রেজওয়ান আহমেদ তৌফিক। তিন দিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালার অংশ হিসেবে আজ সকালে একটি বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা স্কুল প্রাঙ্গণ থেকে শুরু হয়ে শহরে বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে একই স্থানে এসে শেষ হয়।