রবিবার, ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯:৩৭ পূর্বাহ্ন
আমার সুরমা ডটকম : নালিতাবাড়ীর বুরুঙ্গা সীমান্তের চেংবান্ধা পাহাড়ি টিলা থেকে ২হাজার রাউন্ড বিমান বিধ্বংসী গোলাসহ ৪৩ হাজার গোলাবারূদ এবং বিভিন্ন ধরনের প্রায় ৬০ টি আগ্নেয়াস্ত্রসহ সামরিক সরঞ্জাম উদ্ধার করেছে র্যাব। সোমবার ভোর থেকে র্যাব হেডকোয়ার্টার ও র্যাব-৫ এর একটি বিশেষ দল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে গহীন অরণ্যের মাটির নিচ থেকে এসব গোলাবারুদ ও অস্ত্রশস্ত্র উদ্ধার করে। উদ্ধারকৃত গোলাবারূদ ও অস্ত্রশস্ত্রের মধ্যে রয়েছে বিমান বিধ্বংসী কামানের গোলা ২হাজার, ভারী মেশিনগানের গুলি ২২ হাজার, এসএমজি’র গুলি ১৭হাজার এবং বিভন্ন ধরনের পিস্তলের গুলি।
এছাড়া বিমান বিধ্বংসী স্পেয়ার ব্যারেল ১টি, হেভী মেশিনগান ২টি, মেশিনগানের স্পেয়ার ব্যারেল ৫টি, স্লাইপার রাইফেল ২টি, একে-৫৬ রাইফেল ১টি, ৭.৬২ এমএম পিস্তল ২টিসহ ৬০টি অস্ত্র রয়েছে। আর উদ্ধারকৃত সামরিক সরঞ্জামের মধ্যে রয়েছে, ম্যাগাজিন ৩৭টি, ওয়াটিটকি ৬টি, ক্লিন সেন্টার ক্যানভাস ১টি, ক্রানভাস ২টি, কম্পাস ৩টি, ডিসি চার্জার ১ভোল্টের ২টি, স্যাটেলাইট ফোন ৫টি, টেলিস্কোপিক সাইট ৫টি, এইচএফ সেট ৪টি, ড্রাম ম্যাগাজিন ৭টিসহ বিভিন্ন সামরিক সরঞ্জামাদি।
আজ সোমবার বিকাল ৪টার দিকে র্যাবের লিগ্যাল এইড এন্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক উইং কমান্ডার মুফতি মাহমুদ খান বলেন, সারাদেশেই র্যাব অস্ত্র ও গালাবারূদ উদ্ধারে অভিযান পরিচালনা করছে। তারই অংশ হিসেবে গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে সোমবার শেরপুরের বুরুঙ্গা সীমান্তের চেংবান্ধা রিজার্ভ ফরেস্টের পাহাড়ি টিলায় অভিযান চালানো হয়। দুই দিন ধরে গোয়েন্দা তৎপরতা শেষে পাহাড়ি টিলা এলাকা সুইপিং করে চারটি স্পট নিশ্চিত করা হয়। এরপর অভিযান চালায় র্যাব-৫। অভিযানকালে প্রায় ৪৩হাজার গোলাবারূদসহ ৬০টি অস্ত্র ও নানা ধরনের বিপুল পরিমাণ সামরিক সরঞ্জামাদি উদ্ধার করা হয়। ভোর তিনটা থেকে অভিযান চালানো হয়। অস্ত্র ও গোলবারূদগুলো কাদের হতে পারে এসম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ বিষয়ে মামলা হবে। মামলার তদন্তে সেটা বেরিয়ে আসবে। এখনই এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে অস্বীকার করেন তিনি।
মধুটিলা ইকোপার্কের পাশে ও ভারতের মেঘালয় সীমানা সংলগ্ন ওই এলাকায় অভিযানকে কেন্দ্র করে বিজিবি ও পুলিশ এলাকাটি ঘেরাও করে রাখে। আর স্থানীয় জনসাধারণের চলাচলের উপর বিধি-নিষেধ আরোপ করা হয়। রোববার সকালে র্যাব-৫ এর লেফটেন্যান্ট কর্নেল মাহবুব আলম এবং কোম্পানি কমান্ডার মোব্বাশ্বেরুল ইসলামের নেতৃত্বে ৫০/৬০ জনের একটি দল পাহাড়ের ৪টি স্থানে অভিযান চালিয়ে এই বিপুলপরিমাণ ভারী গোলাবারূদ উদ্ধার করে।
উল্লেখ্য, এর আগে ২০০৭ থেকে ২০১১ সালের মধ্যে বিভিন্ন সময়ে ঝিনাইগাতীতে ভারত সীমান্ত সংলগ্ন এলাকায় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানে প্রায় ৫০ হাজার গুলি, রকেট, মাইন ও বিভিন্ন ধরনের অস্ত্র উদ্ধার হয়। ২০১২ সালে নালিতাবাড়ীর এক গ্রাম থেকে উদ্ধার করা হয় একে-৪৭ রাইফেল ও গুলি। মাইন উদ্ধারের পর ২০১০ সালে বিজিবির পক্ষ থেকে ধারণা করা হয়েছিল, সেগুলো ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন ‘সংযুক্ত মুক্তি বাহিনী অসম’ বা ইউনাইটেড লিবারেশন ফ্রন্ট অব আসামের (উলফার) এর ফেলে যাওয়া গোলাবারূদ।