শনিবার, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১০:২০ অপরাহ্ন
আমার সুরমা ডটকম ডেক্স : ভারতের বিখ্যাত সাংবাদিক কুলদীপ নায়ার বলেছেন, ‘শেখ হাসিনার অগণতান্ত্রিক মনোভাব আরো ধ্বংস বয়ে আনবে, কারণ জঙ্গি ও মৌলবাদী শক্তি পাশেই ওত পেতে আছে। এরই মধ্যে এমন শক্তি অবস্থা পর্যবেক্ষণ করেছে এবং কয়েকটি হরতালে অবস্থা অনুকূল বলে আভাস পেয়েছে তারা।’
সম্প্রতি ভারতের সাপ্তাহিক দ্য সানডে গার্ডিয়ানের ‘হাসিনা ইজ নো মুজিব (শেখ হাসিনা শেখ মুজিব নন’ শীর্ষক এক কলামে কুলদীপ নায়ার এসব কথা জানিয়েছেন। ওই কলামে বাংলাদেশের বর্তমান নেতৃত্ব, ড. মুহাম্মদ ইউনূস এবং বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের উন্নয়ন পার্থক্য নিয়েও নিজের বিশ্লেষণ তুলে ধরেছেন।
শেখ হাসিনা এবং সাবেক ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর ইন্দিরা গান্ধীর মধ্যে সম্পর্ক টেনে কুলদীপ নায়ার বলেন, ‘হাসিনার সমস্যা হলো তাঁর মধ্যে কর্তৃত্ববাদিতা দেখা যায় এবং অন্যের মতের কোনো তোয়াক্কা করেন না তিনি। ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর মধ্যে এসব নেতিবাচক বিষয় ছিল যা ধ্বংস করেছে তাঁর বাবা জওহরলাল নেহরু প্রতিষ্ঠিত ব্যবস্থাকে। ওই ব্যবস্থার মধ্যেই কোনো বিষয় নিরীক্ষা করার উপায় ছিল। ইন্দিরা গান্ধী রাষ্ট্রব্যবস্থার যে ক্ষতি করে গেছেন, তা থেকে এখনো উত্তরণ সম্ভব হয়নি।’
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও শেখ হাসিনার মধ্যে তুলনা করে কুলদীপ নায়ার লিখেছেন, ‘একদলীয় পদ্ধতি করে বিরোধী দল বাদ করেছিলেন বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা শেখ মুজিবুর রহমান। দেশে শুধু দুটি পত্রিকা চেয়েছিলেন তিনি। সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নেও একসময় মাত্র দুটি পত্রিকা প্রকাশের অনুমতি দেয়া হয়েছিল। তবে বঙ্গবন্ধু ছিলেন একজন ‘প্রতীক’ এবং অনুসারীদের কাছে সব কিছুই মানিয়ে নিতে পারতেন তিনি। তাঁর মেয়ে হাসিনা, বাবার মতো উচ্চতা পাননি, তেমন ঢালাও সমর্থনও তাঁর নেই।’
জঙ্গি দমনে শেখ হাসিনার অবদানের কথা উল্লেখ করে কুলদীপ নায়ার বলেন, ‘বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আপসহীনভাবে জঙ্গি দমন করেছেন। এ ক্ষেত্রে তিনি মৌলবাদীদের কোনো ক্ষমতা দেখাননি।’
বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের উন্নয়নের পার্থক্যের কথা তুলে ধরে কুলদীপ নায়ার বলেন, ‘বাংলাদেশের উন্নয়নে দেশ ও দেশের বাইরে কাজ করছে বাংলাদেশের মানুষ। পাকিস্তান থেকে আলাদা হওয়া বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধির হার ৬ দশমিক ৪। অথচ পাকিস্তানের প্রবৃদ্ধি এখনো ২ দশমিক ৩-এ সীমাবদ্ধ। আরো উন্নত ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ।’
কুলদীপ নায়ার মনে করেন, ‘ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে দূত হিসেবে হাসিনা নিয়োগ দিলে বাংলাদেশ আরো উপকৃত হতো। বাংলাদেশের জন্য সব দরজা উন্মুক্ত হতো। তাঁকে সরিয়ে দেয়ার জন্য হাসিনার দুর্নাম হয়েছে। তবে অবাক করা বিষয় হলো, বিস্তর সমালোচনার সত্ত্বেও শেখ হাসিনার কোনো অনুশোচনা নেই।’