বুধবার, ০৯ অক্টোবর ২০২৪, ০১:৪৫ অপরাহ্ন
আমার সুরমা ডটকম ডেক্স : মিয়ানমারের গণতন্ত্রপন্থী নেত্রী অং সান সুচির ‘মুসলিমবিরোধী’ সেই সাক্ষাৎকারের ভিডিও পাওয়া গেছে। বিবিসি টুডের বিখ্যাত উপস্থাপক সাংবাদিক মিশাল হুসেনকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারের একপর্যায়ে সুচি মেজাজ হারান এবং তাকে বিড়বিড় করে ক্রোধের সাথে বলতে শোনা যায়, ‘একজন মুসলিম যে আমার সাক্ষাৎকার নেবে এটা আমাকে কেউ বলেনি।’ ‘দা লেডি অ্যান্ড দা জেনারেলস: অং সান সুচি অ্যান্ড বার্মা’র স্ট্রাগল ফর ডেমোক্রেসি’ বইতে এ তথ্য ফাঁস করেন সাংবাদিক পিটার পপহ্যাম।
গতকাল ব্রিটিশ সংবাদপত্রে খবরটি প্রকাশের পর তা নিয়ে তোলপাড় চলছে। এশিয়ার এই দুই বিখ্যাত ও জনপ্রিয় ব্যক্তিত্বের মধ্যে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় হয় যখন মিশাল সুচিকে তার দেশের রোহিঙ্গাদের ওপর চালানো বৌদ্ধদের নির্যাতন নিয়ে প্রশ্ন করেন। মিশাল সুচিকে এই নির্যাতনের ঘটনায় নিন্দা জানানোর আহ্বান জানান।
৭০ বছর বয়সী সুচি তার দেশে রোহিঙ্গাদের ওপর চালানো অমানুষিক নির্যাতনের বিরুদ্ধে কখনো একটি শব্দও উচ্চারণ করেননি। সুচির অন্ধ সমর্থকও একথা স্বীকার করে যে রোহিঙ্গাদের ওপর চালানো বৌদ্ধদের বর্বর নির্যাতনের ব্যাপারে সুচির আচরণ সন্দেহজনক। মিশাল সুচিকে ইসলাম বিরোধিতা ও মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের ওপর চালানো গণহত্যার ব্যাপারে নিন্দা জানানোর আহ্বান জানালে তিনি অপারগতা প্রকাশ করেন। সুচি বলেন, ‘আমি মনে করি অনেক বৌদ্ধও বিভিন্ন কারণে দেশত্যাগ করেছে। এটা আসলে দীর্ঘদিনের স্বৈরশাসনের ফল।’ মিয়ানমারের সংখ্যাগরিষ্ঠ বৌদ্ধরা সংখ্যালঘু মুসলিম রোহিঙ্গাদের সহ্যই করতে পারে না। তাই ধারণা করা হচ্ছে, সুচি তার বৌদ্ধ সমর্থকদের বিরাগভাজন হতে চান না বলে রোহিঙ্গা ইস্যুতে মুখ বন্ধ রেখেছেন।
মিয়ানমারের মোট জনসংখ্যার মাত্র ৪% মুসলিম। দুর্ভাগ্য নিয়ে জন্মগ্রহণ করা রোহিঙ্গা মুসলিমরা দেশটিতে ক্ষুদ্র সংখ্যালঘু জাতিগোষ্ঠী। রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারের নাগরিক হিসেবে স্বীকার করা হয় না এবং তাদের কোনো রাজনৈতিক অধিকারও নেই। ৪৩ বছর বয়সী পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত মিশাল হুসেন বিবিসির রেডিও টুডে প্রোগ্রামের প্রথম মুসলিম উপস্থাপক। বিবিসির বৈচিত্র্যময়তার প্রতিশ্রুতির উৎকৃষ্ট উদাহরণ তিনি।