সোমবার, ২১ অক্টোবর ২০২৪, ১১:২৩ পূর্বাহ্ন
আমার সুরমা ডটকম: অবশেষে সব জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের নাম ঘোষণা করা হয়েছে। দলের নতুন কমিটিতে পুরনোদের বাদ দিয়ে নতুন মুখকে প্রাধান্য দেয়া হয়েছে। পুরনো ও বয়স্কদের বাদ দিয়ে সাবেক ছাত্রনেতাদের দলের নতুন কমিটিতে মূল্যায়ণ করা হয়েছে। নতুন কমিটির আলোকে শিগগিরিই সরকারের মন্ত্রী পরিষদের ব্যাপক রদ-বদলের গুঞ্জন শুরু হয়েছে। দলের নতুন নেতৃত্বের মতো মন্ত্রী পরিষদও অপেক্ষাকৃত তরুণদের দিয়ে একটি গতিশীল মন্ত্রী পরিষদ গঠন করা হবে বলে দলীয় সূত্রে আলোচনা চলছে। এদিকে, কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের পাশাপাশি গতকাল দলটির উপদেষ্টা পরিষদ, সংসদীয় বোর্ড ও স্থানীয় সরকার নির্বাচন মনোনয়ন বোর্ডের কমিটি ঘোষণা করা হয়। তবে কার্যনির্বাহী কমিটিতে সভাপতি মন্ডলীর তিনজন সদস্য ও সম্পাদক মন্ডলীর চার জন সদস্যের নাম এখনও ঘোষণা করা হয়নি। জায়গা এখনও খালি রয়েছে। শনিবার দুপুরে আওয়ামীলীগের সভাপতি শেখ হাসিনা স্বাক্ষরিত ইমেইল বার্তায় পূর্ণাঙ্গ কমিটির ৩৮ জনের মধ্যে ২৮ জনের নাম ঘোষণা করা হয়। এর আগে দুই দফায় ৮১ সদ্যসের কেন্দ্রীয় কমিটির ৪৩ নেতারা নাম ঘোষণা করা হয়। আওয়ামীলীগের ২০তম কাউন্সিলের প্রথম দিনে সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকসহ সভাপতি মন্ডলীর ২১ জনের নাম ঘোষণা করা হয়। সম্মেলনের দুইদিন পর নতুন সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সম্পাদক মন্ডলীর ২৭ সদস্যর মধ্যে ২২ জনের নাম ঘোষণা করেন। শনিবার কার্যনির্বাহী সদস্য পদে আরও ২৮ জনের নাম ঘোষণা করা হয়। তবে সর্বাধিক আলোচিত বঙ্গবন্ধু পরিবারের তৃতীয় প্রজন্মের সদস্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়কে দলটির কোন পদে রাখা হয়নি। দলের সম্মেলনের এক সপ্তাহের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করেছে আওয়ামীলীগ, যাতে কার্যনির্বাহী সদস্য পদে ২৮ জনের মধ্যে ১৯ জনই নতুন মুখ হিসেবে স্থান পেয়েছেন। পূর্ণাঙ্গ কমিটির পাশাপাশি ৩৮ সদস্যের উপদেষ্টা পরিষদ, ১১ সদস্যের সংসদীয় বোর্ড, ১৯ সদস্যের স্থানীয় সরকার নির্বাচনের মনোনয়ন বোর্ড ঘোষণা হয়। এর আগে গত শুক্রবার রাতে প্রধানমন্ত্রীর সরকারী বাসভবন গণভবনে দলের সভাপতি শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে নতুন সভাপতি মন্ডলীর প্রথম বৈঠকের পর নতুন সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের শনিবারই পূর্ণাঙ্গ কমিটি প্রকাশ করা হবে বলে গণমাধ্যমকে জানিয়েছিলেন। গত ২২-২৩ অক্টোবর সম্মেলনে শেখ হাসিনা সভাপতি ও ওবায়দুল কাদেরকে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। কাউন্সিলের তাদের সঙ্গে সভাপতি মন্ডলীসহ সম্পাদক মন্ডলীর কয়েকটি পদের নেতার নামও ওই সময় ঘোষণা করা হয়। কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদ (২০১৬-২০১৯): সভাপতি : শেখ হাসিনা, সভাপতি ম-লীর সদস্যরা হলেন সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী, বেগম মতিয়া চৌধুরী, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, মোহাম্মদ নাসিম, কাজী জাফর উল্লাহ, অ্যাডভোকেট সাহারা খাতুন, ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম, নুরুল ইসলাম নাহিদ, ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক, লে. কর্নেল (অব.) মুহাম্মদ ফারুক খান, রমেশ চন্দ্র সেন, আব্দুল মান্নান খান ও পীযুষ কান্তি ভট্টাচার্য্য। সভাপতি ম-লীর সদস্যদের মধ্যে এখনও ৩টি পদ খালি রয়েছে। সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদকরা হলেন মাহাবুব-উল-আলম হানিফ, ডা. দীপু মণি, জাহাঙ্গীর কবীর নানক ও আব্দুর রহমান। কোষাধ্যক্ষ নির্বাচিত হয়েছেন এইচএন আশিকুর রহমান। অর্থ ও পরিকল্পনা বিষয়ক সম্পাদক টিপু মুন্সি। আইন বিষয়ক সম্পাদক আব্দুল মতিন খসরু, কৃষি ও সমবায় বিষয়ক সম্পাদক ফরিদুন্নাহার লাইলী, তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আফজাল হোসেন, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক সুজিত রায় নদী, দফতর সম্পাদক ড. আব্দুস সোবহান গোলাপ, ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক শেখ মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ, বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন। মহিলা বিষয়ক সম্পাদক হয়েছেন ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা, মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক সম্পাদক হয়েছেন অ্যাডভোকেট মৃণাল কান্তি দাস। শিক্ষা ও মানবসম্পদ বিষয়ক সম্পাদক হয়েছেন শামসুন নাহার চাঁপা, শিল্প বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক মো. আব্দুছ ছাত্তার, শ্রম ও জনশক্তি বিষয়ক সম্পাদক হাবিবুর রহমান সিরাজ, সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল এবং স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদ ডা. রোকেয়া সুলতানা। ২২ জনের সঙ্গে বন ও পরিবেশ সম্পাদক পদে ছাত্রলীগের সাবেক নেতা দেলোয়ার হোসেন, কৃষি ও সমবায় সম্পাদক পদে ফরিদুন্নাহার লাইলী এবং উপ-প্রচার সম্পাদক পদে চট্টগ্রামের আমিনুল ইসলামের নাম শনিবার ঘোষণা করা হয়। সাংগঠনিক সম্পাদক সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে পদ পেয়েছেন আহম্মদ হোসেন, মো. মেজবাহ উদ্দিন সিরাজ, বিএম মোজাম্মেল হক, আফম বাহাউদ্দিন নাছিম, একেএম এনামুল হক শামীম, আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী (নওফেল)। উপ-প্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম। তবে সম্পাদক মন্ডলীর মধ্যে আন্তর্জাতিক সম্পাদক পদে এখনও কেউ দায়িত্ব পাননি। এছাড়াও বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক, যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক এবং উপ-দফতর সম্পাদকের পদগুলোও এখনও পূরণ করা হয়নি। কার্যনির্বাহী সদস্যের ২৮টি পদে আগের অধিকাংশই বাদ পড়েছেন। নতুন যারা এসেছেন তাদের অধিকাংশই ছাত্রলীগের সাবেক নেতা। নতুন যোগ হয়েছেন খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম, মমতাজ উদ্দিন (বগুড়া), নুরুল মজিদ হুমায়ুন, অ্যাডভোকেট নজিবুল্লাহ হিরু, নুরুল ইসলাম ঠাকুর, দীপঙ্কর তালুকদার, বদরউদ্দিন আহমেদ কামরান, আমিরুল ইসলাম মিলন, অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম (মৌলভীবাজার), গোলাম কবীর রব্বানী চিনু, অ্যাডভোটেক রিয়াজুল কবির কাওসার, পারভীন জামান কল্পনা, আনোয়ার হোসেন, ইকবাল হোসেন অপু, মেরিনা জাহান, শাম্মী আহমেদ, মারুফা আক্তার পপি, ব্যারিস্টার বিল্পব বড়ুয়া ও রেমন্ড আরেং। কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির পুরনোদের মধ্যে বর্তমান কমিটিতেও স্থান পেয়েছেন আবুল হাসনাত আব্দুল্লাহ, মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, আক্তারুজ্জামান, মির্জা আজম, এসএম কামাল, এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন, মুন্নুজান সুফিয়ান, সিমিন হোসেন রিমি, র আ ম ওবায়দুল মোক্তাদির চৌধুরী। কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটি থেকে বাদ পড়েছেন ধর্মমন্ত্রী মতিউর রহমান, প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু ও জুনাইদ আহমেদ পলক, সুভাষ বোস, এ কে এম রহমতউল্লাহ, ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু, এমএ মান্নান, মোস্তফা ফারুক মোহাম্মদ, অ্যাডভোকেট মমতাজউদ্দিন মেহেদী, আলাউদ্দিন আহমেদ চৌধুরী নাসিম। গত কমিটির সদস্যদের মধ্যে আবদুর রহমান যুগ্ম মহাসচিব, এনামুল হক শামীম সাংগঠনিক সম্পাদক, সুজিত রায় নন্দী ত্রাণ বিষয়ক সম্পাদক, আমিনুল ইসলাম উপ-প্রচার সম্পাদক পদ পেয়েছেন। উপদেষ্টা পরিষদে ব্যারিস্টার শফিক-সতীশ-রুহুল উপদেষ্টা পরিষদে খুব একটা পরিবর্তন না হলেও নতুন যোগ হয়েছেন সাবেক তিন মন্ত্রী শফিক আহমেদ, আ ফ ম রুহুল হক ও সতীশ চন্দ্র রায়, বর্তমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী ইয়াফেজ ওসমান। ইয়াফেজ আগের কমিটিতে সম্পাদক মন্ডলীতে ছিলেন। উপদেষ্টা পরিষদে নতুন সদস্যরা হলেন অধ্যাপক খন্দকার বজলুল হক, মো. রশীদুল আলম, কাজী সিরাজুল ইসলাম, মকবুল হোসেন, চৌধুরী খালেকুজ্জামান। পুরনোদের মধ্যে রয়েছেন ডা. এসএ মালেক, আবুল মাল আবদুল মুহিত, আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত, মো. ইসহাক মিঞা, রহমত আলী, এইচটি ইমাম, মসিউর রহমান, ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন, রাজীউদ্দীন আহমেদ রাজু, মহীউদ্দীন খান আলমগীর, এ্যাডভোকেট সৈয়দ আবু নসর, অধ্যাপক আব্দুল খালেক, কাজী আকরাম উদ্দীন আহমদ, অধ্যাপক আলাউদ্দিন আহমেদ, এ্যাডভোকেট সৈয়দ রেজাউর রহমান, ড. অনুপম সেন, অধ্যাপক হামিদা বানু, ড. মো. হোসেন মনসুর, অধ্যাপিকা সুলতানা শফি, এএফএম ফখরুল ইসলাম মুন্সী, এ্যাম্বাসেডর মো. জমির, গোলাম মওলা নকশাবন্দী, মীর্জা এমএ জলিল, ড. প্রণব কুমার বড়–য়া, মে. জে. (অব.) আব্দুল হাফিজ মলিক, ড. সাইদুর রহমান খান, গওহর রিজভী। উপদেষ্টা পরিষদের আগের কমিটি থেকে বাদ পড়েছেন সাবেক সংসদ সদস্য ও সাবেক সেনাপ্রধান কেএম সফিউল্লাহ। স্থানীয় সরকার/পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদ মনোনয়ন বোর্ড (২০১৬-২০১৯): ১৯ সদস্য বিশিষ্ট কমিটিতে আছেন: শেখ হাসিনা, সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী, আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত, সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম, আবুল হাসনাত আব্দুল্লাহ, কাজী জাফর উল্লাহ, মোহাম্মদ নাসিম, ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক, লে. কর্নেল (অব.) ফারুক খান, ওবায়দুল কাদের, প্রফেসর ড. আলাউদ্দিন আহমেদ, মো. রশিদুল আলম, মাহবুব-উল-আলম হানিফ, ডা. দীপু মণি, জাহাঙ্গীর কবির নানক, ড. আব্দুস সোবহান গোলাপ। সংসদীয় বোর্ড সংসদীয় বোর্ডের সদস্য মোট ১১ জন। তারা হলেন শেখ হাসিনা, সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী, আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত, সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম, কাজী জাফর উল্লাহ, ওবায়দুল কাদের, প্রফেসর, ড. আলাউদ্দিন আহমেদ ও মো. রশিদুল আলম।