মঙ্গলবার, ০১ Jul ২০২৫, ০৫:২১ পূর্বাহ্ন
আমার সুরমা ডটকম : সুদীর্ঘ ৬০ বছরের ঘটনাবহুল রাজনৈতিক জীবনের একটা চিত্র দলীয় নেতাকর্মী, ভক্তবৃন্দ ও দেশবাসীর কাছে রেখে যাওয়ার স্বপ্ন দেখছিলেন জাতীয় পার্টির প্রয়াত চেয়ারম্যান ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী কাজী জাফর আহমদ। এ লক্ষ্যে তিনি আত্মজীবনী মূলক একটি বই লেখার কাজ শুরু করেছিলেন ২০০৩ সাল থেকে। বইটির নাম দিয়েছেন “আমার রাজনীতির ৬০ বছর জোয়ার-ভাটার কথন”। ২২৭ পৃষ্টা লেখার পরই শারীরিক অসুস্থতা ও রাজনৈতিক ব্যস্ততার কারণে থেমে যায় বই লেখার কাজ। দীর্ঘদিন বন্ধ ছিল বই লেখার কাজ। গত এক বছর আগে তিনি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন। আমেরিকা থেকে চিকিৎসা শেষে দেশে ফেরার পরই তিনি আবার বই লেখার কাজটি সমাপ্ত করতে মনোযোগী হয়ে ওঠেন।
কিন্তু অসুস্থতা ও শারীরিক দুর্বলতার কারণে এবার আর নিজ হাতে লেখার কাজ করতে পারেননি।আত্মজীবনীর বাকি অংশ তিনি টেপরেকর্ডারে রেকর্ড করে গেছেন।
এ বিষয়ে কাজী জাফরের সহকারী ব্যক্তিগত সচিব কামরুজ্জামান রনি বলেন, দীর্ঘদিন যাবত বইটি লেখার কাজ বন্ধ ছিল। প্রায় এক বছর গুরুতর অসুস্থতা থেকে একটু আরোগ্য লাভের পর স্যার তাঁর আত্মজীবনী লেখা শেষ করার জন্য খুবই মনোযোগী হয়ে ওঠেন। অসুস্থ শরীরে নিজে লিখতে পারতেন না। দীর্ঘ সময় বসেও থাকতে পারতেন না। এত সব সত্ত্বেও বইটির প্রতি তাঁর যে অধীর আগ্রহ ছিল তা তাকে সকল বাধা অতিক্রম করতে সহায়তা করেছে।
তিনি বলেন, কামরুল হুদা ভাই ও আমাকে দিয়ে টেপরেকর্ডার কিনিয়ে তাঁতে তিনি রেকর্ড করে গেছেন তাঁর আত্মজীবনীর বাকি অংশ। দীর্ঘ সময় বলতে গিয়ে মাঝে মাঝে ক্লান্ত হয়ে পড়তেন স্যার। তাতেও থেমে থাকেন নি তিনি। একটু বিশ্রাম নিয়ে পুনরায় শুনতেন তাঁর সেই রেকর্ড। যে কেউ আসলেই তাকে বইটি পড়তে বলতেন আর নিজে মনোযোগ দিয়ে শুনতেন, মাঝে মাঝে নিজে পড়ে অন্যদের শুনাতেন। অবসর সময়ে আমাকে দিয়েও পড়াতেন এবং তিনি নিজে মনোযোগ দিয়ে শুনতেন।
রনি আরো বলেন, কেউ আসলেই তাঁকে সামনের টেবিলে রাখা বইটির ভিন্ন ধরনের ৪টি প্রচ্ছদ দেখিয়ে বলতেন, বলতো কোন প্রচ্ছদটি ভাল হয়েছে? সিদ্ধান্ত নিতে পারছিলেন না কোন ছবিটি তাঁর বইয়ের কভার পেইজে ব্যবহার করবেন। অবশেষে তাও ঠিক করে ছিলেন তিনি। অসুস্থ শরীরে হাসপাতালের বেডে শুয়ে শুয়ে নিজে তার আত্মজীবনী বইয়ের ফটোকপি পড়তেন। অধীর আগ্রহে অপেক্ষায় ছিলেন আগামী ফেব্রুয়ারি মাসের জন্য। তিনি সবাইকে বলতেন আগামী ফেব্রুয়ারিতে বই মেলায় আমার বইটা প্রকাশিত হবে। কেউ যদি জিজ্ঞেস করতেন কাকে দিয়ে বইয়ের মোড়ক উম্মোচন করবেন? তিনি তাঁর ডান দিকের দেওয়ালে ঝুলানো দুটি ছবির দিকে তাকিয়ে বলতেন ম্যাডামকে (বেগম খালেদা জিয়া) অথবা তাঁর বন্ধু ড. মুহম্মদ ইউনুছের কথা।
আগামী ফেব্রুয়ারিতে বইটি প্রকাশ করতে পারবেন বলে আশাবাদী কাজী জাফরের এপিএস কামরুজ্জামান রনি।