বুধবার, ৩০ অক্টোবর ২০২৪, ০৩:৩০ অপরাহ্ন
আমার সুরমা ডটকম : রোহিঙ্গা ইস্যুতে ৫০টি দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে চিঠি দিবেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। তিনি জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী ৫ ও অস্থায়ী ১০টি দেশ এবং অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কো-অপারেশন (ওআইসি)’র অন্তর্ভূক্ত দেশগুলোকে এই চিঠি দিবেন। রোহিঙ্গা সঙ্কট সমাধানে বিএনপির কূটনৈতিক তৎপরতার অংশ হিসেবেই এটি করা হবে বলে দলীয় সূত্রে জানানো হয়েছে। চিঠিতে রোহিঙ্গা সঙ্কট সমাধানে ৫দফার ওপর বিশেষ গুরুত্ব দিবেন সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী।
বিএনপি সূত্রে জানা যায়, দু’এক দিনের মধ্যে বিশ্বের অর্ধ শতাধিক দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের কাছে একযোগে এ চিঠি পাঠানো হবে। মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশে সামরিক বাহিনীর অভিযান ও উগ্রপন্থী রাখাইনদের নির্মম নির্যাতন ও ব্যাহত হত্যাযজ্ঞের ঘটনায় জীবন বাঁচাতে বাংলাদেশে পালিয়ে আসে লাখ লাখ রোহিঙ্গা। বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে প্রথমে তাদের প্রবেশে বাধা দেয়া হলে বিএনপি রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেয়ার দাবি জানিয়েছিল। রোহিঙ্গা সংকট নিরসনে ব্যাপক ভিত্তিতে কূটনৈতিক তৎপরতা চালাতে সরকারকে পরামর্শও দিয়েছিলেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এরই ধারাবাহিকতায় সরকারের পাশাপাশি রোহিঙ্গা ইস্যুতে রাজনৈতিক দল হিসেবে কূটনৈতিক তৎপরতা শুরু করে বিএনপি। খালেদা জিয়ার চিঠি ছাড়াও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন মহলে যোগাযোগ করছেন দলটির সিনিয়র নেতারা। বিএনপির কূটনৈতিক উইং সূত্র জানিয়েছে, রোহিঙ্গা জাতিগোষ্ঠীর ওপর পরিচালিত গণহত্যা বন্ধ, মৌলিক ও মানবাধিকার নিশ্চিত এবং নাগরিকত্ব ফিরিয়ে দেয়ার মাধ্যমে ‘রাষ্ট্রহীনতার’ ইতি ঘটাতে মিয়ানমার সরকারের ওপর সম্ভাব্য সব ধরনের পদক্ষেপ নিতে বিশ্ববাসীর প্রতি চিঠির মাধ্যমে আহŸান জানাবেন খালেদা জিয়া।
খালেদা জিয়ার ৫ দফা সুপারিশ: রোহিঙ্গা ইস্যুতে বিএনপি চেয়ারপারসন ৫০টি দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের কাছে যে চিঠি দেয়া হবে সেখানে তিনি ৫ দফা সুপারিশ তুলে ধরবেন। এসব সুপারিশের মধ্যে থাকবে- মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের বাস্তব অবস্থা নির্ধারণের জন্য জাতিসংঘের অধীনে নিরপেক্ষ আন্তর্জাতিক তদন্ত সংস্থা গঠন করতে হবে। যদি প্রয়োজন পড়ে জাতিসংঘের অধীনে যথাযথ পদক্ষেপ নিতে হবে। রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী জরুরি সহায়তা হিসেবে যেসব ত্রাণ পায়- এর ওপর থেকে সমস্ত বিধিনিষেধ তুলে নিতে মিয়ানমার সরকারকে তাগিদ দিতে হবে। রোহিঙ্গাদের সঙ্গে যোগাযোগ এবং রাখাইন রাজ্যে পর্যবেক্ষণ করতে সাংবাদিক ও মানবাধিকার বিষয়ক পর্যবেক্ষকদের প্রবেশের অনুমতি দিতে মিয়ানমার সরকারকে বলতে হবে। রোহিঙ্গা শরণার্থীদের আশ্রয় ও ত্রাণ সহায়তা এবং তাদের নিজ দেশে ফেরত পাঠাতে বাংলাদেশের সকল প্রচেষ্টায় সহযোগিতা করতে হবে। রোহিঙ্গাদের মৌলিক ও মানবিক মর্যাদা এবং শিশুদের অধিকার নিশ্চিত করতে তাদের ‘রাষ্ট্রহীন’ অবস্থার ইতি ঘটাতে হবে।