সোমবার, ১২ মে ২০২৫, ০৪:৩২ অপরাহ্ন
চান মিয়া, নিজস্ব প্রতিবেদক (ছাতক) সুনামগঞ্জ: ছাতকে সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পে ভূঁয়া বিল-ভাউচারে কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে। একটি শক্তিশালি লুঠেরা সিন্ডিকেট এ দূর্নীতির সাথে জড়িত রয়েছে। বিষয়টি সর্বত্র ব্যাপক তোলপাড় শুরু হয়েছে। জানা যায়, ১১ জানুয়ারি উপজেলা মাসিক উন্নয়ন ও সমন্বয় সভায় এ ভয়াবহ লুঠপাটের ঘটনায় বিভিন্ন ইউপি চেয়ারম্যানদের তোপের মূখে পড়েন ইউএনও এবং পিআইও। এটি ধামাচাঁপা দিতে ১২ জানুয়ারি রাতে ইউপি চেয়ারম্যানদের নিয়ে ইউএনও নিজ কার্যালয়ে সমোঝার বৈঠকে ৭ জন ইউপি চেয়ারম্যান উপস্থিত হন। কিন্তু ইউপি চেয়ারম্যানদের সাথে রাত প্রায় ৩টা পর্যন্ত বৈঠক করেও তারা দূর্নীতির সহযোগিতা না করায় বিপাকে পড়েন সংশ্লিষ্টরা। জানা গেছে, ভূঁয়া প্রকল্প ও বিল-ভাউচারে ১৩টি ইউনিয়নে ইউএনও মুহাম্মদ নাসির উল্লাহ খানও পিআইও শহিদুজ্জামানের বিরুদ্ধে সমন্বয় সভায় ইউপি চেয়ারম্যানরা দু’কর্মকর্তার বিরুদ্ধে লুঠপাটের অভিযোগ করেন। ২০১৬-১৭ অর্থবছরে মানবিক সহায়তার জন্যে প্রধানমন্ত্রীর তহবিল থেকে বিশেষ বরাদ্ধ ছাতকে ৩টি স্মারকে ২শ’ ৩২ বান্ডিল ঢেউটিন ও তাদেরকে জনপ্রতি নগদ ৩ হাজার টাকা করে দেয়ার নির্দেশ থাকলেও টাকা ছাড়াই উপকার ভোগিদের মধ্যে শুধু ঢেউটিন বিতরণ করা হয়েছে। ছাতকে মোট বরাদ্ধ ৩শ’ ৫৯ বান্ডিল টিনের মধ্যে ১শ’ ২৭ বান্ডিলের কোন হদিস পাওয়া যাচ্ছেনা। এতে ১শ’ ৩২ বান্ডিল টিনের ৬ লক্ষ ৯৬ হাজারসহ ৩শ’ ৫৯ বান্ডিলে মোট ১০ লাখ ৭৭ হাজার টাকা লুঠে নেয়া হয়। ২০১৭ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর ১৩ ব্যক্তির নামে স্থানীয় এমপির ডিও লেটারে ৩০ বান্ডিল ঢেউটিন বিতরণ দেখানো হলেও মাস্টার রোলের তালিকা গায়েব করার অভিযোগ করেন ইউপি চেয়ারম্যানরা। কিন্তু টিনের টাকা ইউএনও এবং পিআইওর স্বাক্ষরে পিআইও অফিসের সহায়ক দুলাল চন্দ্র রায়ের নামে উত্তোলন করা হয়। টিআর, কাবিখা, কাবিটা, কর্মসৃজন, ভিজিএফ, টেস্ট লিরিফসহ প্রথম ও দ্বিতীয় পর্যায়ে সোলার প্যানেল স্থাপনের নামে হাতিয়ে নেয়া হয়েছে কোটি কোটি টাকা। কোন ব্যক্তি বা মালিকানাধিন সোলার প্যানেল স্থাপনের আইন না থাকলেও নোয়ারাই ইউপির মানিকপুর গ্রামের জনৈক ব্যক্তির নামে একাধিক প্রজেক্ট দেয়া হয়েছে।
এদিকে সোলার প্যানেলের প্রায় ২২ লাখ, মৎসও কৃষি ৩ লাখ ৪৬ হাজার ৫শ’, ঢেউটিনের ১০ লাখ ৭৭ হাজারসহ মোট ৩৬ লক্ষ ২৩ হাজার ৫শ’ টাকা লুঠে নেয়া হয়েছে। সুনামগঞ্জ ত্রাণ ও দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগের স্মারক নং-২৫২, তাং ২৩.১০.২০১৭ইং মূলে ছাতক অফিস সহায়ক রুবেল খানের নামে পত্র ইস্যু করে এসব টাকা লুঠে নেয়া হয়। এছাড়া ও অন্যান্য খাতে লুঠে নেয়া হয়েছে আরো কোটি কোটি টাকা। পিআইও শহিদুজ্জামান বলেন, ঢেউটিনের সাথে টাকা চেকের মাধ্যমে বিতরণ করা হয়েছে। অন্যান্য বিষয়ের উপরে তিনি মূখ খুলতে নারাজ। ইউএনও নাসির উল্লাহ খান মিটিংয়ে থাকার অজুহাতে পরে কল করার কথা বলে মোবাইল কেটে দেন তিনি।