রবিবার, ১২ জানুয়ারী ২০২৫, ০১:৫৭ পূর্বাহ্ন

ব্রেকিং নিউজ :
প্রতিনিধি আবশ্যক: অনলাইন পত্রিকা আমার সুরমা ডটকমের জন্য প্রতিনিধি নিয়োগ দেয়া হবে। আগ্রহীরা যোগাযোগ করুন : ০১৭১৮-৬৮১২৮১, ০১৭৯৮-৬৭৬৩০১
সংবাদ শিরোনাম :
সিলেটে আসছেন উপমহাদেশের বিজ্ঞ রাজনীতিবিদ মাওলানা ফজলুর রহমান শায়খুল হাদীস আল্লামা মুকাদ্দাস আলীর ইন্তেকাল সভাপতি মুহিউদ্দিন, সেক্রেটারি মুখতার : দিরাই উপজেলা জমিয়তের কাউন্সিল সম্পন্ন বিজ্ঞান ও টেকনোলজিতে মুসলমানদের অধ:পতন : কারণ ও প্রতিকার জমিয়ত নেতার আগমনে দিরাইয়ে মোটর শোভাযাত্রা হাওর রক্ষা বাঁধ নির্মাণে জিরো টলারেন্স: মাহমুদুর রহমান খন্দকার মাধ্যমিকে যুক্ত হচ্ছে আরবি : বাতিল হচ্ছে চার লেখকের গল্প-প্রবন্ধ শায়খ জয়নুল আবেদীন সুজানগরী রহঃ-এর জীবন ও কর্মী শীর্ষক আলোচনা সভা ইসরাইলে রাতভর ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালাল হিজবুল্লাহ গাজায় ইসরায়েলি মেজরসহ ৩ সৈন্য নিহত
‘ধান নিছেগা বানে, ঘর নিছেগা তুফানে’

‘ধান নিছেগা বানে, ঘর নিছেগা তুফানে’

সাইফ উল্লাহ, বিশেষ প্রতিবেদক (সুনামগঞ্জ): ‘হাওরের ধান নিছেগা বানে, ঘর নিছেগা তুফানে। পিন্দনের কাপড় নাইগা, পেটে নাইগা ভাত। বাঁচতাম কেমনে?’ কথাগুলো একশ্বাসে বললেন পোষাকের মা। তার বাড়ি ধর্মপাশা উপজেলার মধ্যনগর ইউনিয়নের সালিয়ানী গ্রামে। সামাজিক সংগঠন হাওরপাড়ের ধামাইলের আয়োজনে সম্প্রতি সালিয়ানী গ্রামে অকাল বন্যায় হাওরের ফসল হারানো প্রান্তিক কৃষকদের নিয়ে উঠান বৈঠক চলাকালে পোষাকের মায়ের মত আরো অনেক কৃষাণি উপস্থিত ছিলেন। হাজেরা বেগম নিঃসন্তান। পেটে-পিঠে কেউ নাই। অন্য বছর হাওরে ধান কুড়াতেন। কয়েক মাসের খোরাক সংগ্রহ করতেন হাওর থেকে। এবার শূণ্য হাড়ি। বাবুর মার দুই ছেলে। এক ছেলে বউ বাচ্ছা নিয়ে ঢাকা চলে গেছে। আরেকটা ছেলে বউ বাচ্ছা নিয়েই আছে। তাদের ঘর উড়িয়ে নিয়েছে কাল বৈশাখী ঝড়ে। ইতি আক্তার এবার এসএসসি পাশ করেছে। কিন্তু টাকার অভাবে কলেজে ভর্তি হতে পারছেনা। বৈঠকে আবেগ তাড়িতভাবে নিজেদের আক্ষেপের কথা জানালেন সালিয়ানী গ্রামের মসজিদের ইমাম ক্বারী আলী হোসেন, প্রান্তিক কৃষক আব্দুস সাত্তার, আব্দুল মালেক, রইচ খান, তাহেরা খাতুন, রায়হান আলমসহ আরো অনেকেই। স্থানীয় বোয়ালা হাওরের উত্তর পশ্চিমপাড়ে এই সালিয়ানী গ্রামে রয়েছে ১২২টি খানা। বৈঠকে উপস্থিত গ্রামবাসি জানান, এখন পর্যন্ত কেউ মৌখিক শান্তনার জন্যও আসেনি। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত ক্ষুদ্রচাষি ও অসহায়দের জন্য সরকারি যে খাদ্য নিরাপত্তা দেয়া হয়েছে, তাতে প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্ত আরো অনেকেই বাদ পড়ে গেছে। তারা বর্তমানে মানবেতর জীবন যাপন করছে। উপস্থিতরা জানিয়েছেন এই গ্রাম থেকে প্রায় ত্রিশ শতাংশ পরিবার গ্রাম ছেড়ে চলে গেছে। তাছাড়া রোগব্যাধি জেঁকে বসেছে অভাব তাড়িত পরিবারগুলোতে। অর্থাভাবে চিকিৎসা নিতে পারছেন না। জানা গেছে, এই গ্রামের অধিকাংশ কর্মজীবি মানুষ শুকনো মৌসুমে হাওরে বোরো ফসল ফলায়। আর বর্ষায় মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করে। কিন্তু হাওরের ভাসান পানিতে ইজারাদারদের দাপটে স্বাধীনভাবে মাছ ধরতে পারছেন না। মৎস্যজীবিরা এ বছর হাওরে অবাধে মাছ ধরার দাবি জানিয়েছেন। তারা বলেন, হাওরের বর্তমান সমস্যা বিবেচনা করে মৎস্য জলাভূমি আপাতত উন্মুক্ত করে দেয়া হোক। উঠান বৈঠকের আয়োজনকারী সংগঠন হাপাধার সভাপতি সজল কান্তি সরকার বলেন, হাওরের বর্তমান সময়ের প্রেক্ষাপটে তিন পর্যায়ে কার্যকরী পদক্ষেপ নিতে হবে। কারণ বর্তমান সমস্যা ধাপে ধাপে আরো কঠিনতর হতে পারে। তাই যথাযত পদক্ষেপ এক্ষুনি নিতে হবে। বৈঠকে হাপাধার সদস্যবৃন্দ, বিভিন্ন পেশাজীবি, সাংবাদিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2017-2019 AmarSurma.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com