বুধবার, ০৯ Jul ২০২৫, ০৫:১০ পূর্বাহ্ন

ব্রেকিং নিউজ :
প্রতিনিধি আবশ্যক: অনলাইন পত্রিকা আমার সুরমা ডটকমের জন্য প্রতিনিধি নিয়োগ দেয়া হবে। আগ্রহীরা যোগাযোগ করুন : ০১৭১৮-৬৮১২৮১, ০১৭৯৮-৬৭৬৩০১
সংবাদ শিরোনাম :
আবনায়ে ক্বাদিম সাকিতপুর মাদরাসার কমিটি গঠন জুলাই গণঅভ্যুত্থান ছিল নব্য ফেরাউনের বিরুদ্ধে গণবিস্ফোরণ: ইউকে জমিয়ত সমাজ ও রাষ্ট্রের দুষ্টচক্রকে নির্মূল করে দেশকে এগিয়ে নিতে হবে: বিভাগীয় কমিশনার খান মোঃ রেজা-উন-নবী সুনামগঞ্জ সদর উপজেলা জমিয়তের প্রার্থী বাছাই সম্পন্ন সুনামগঞ্জ-৩ আসনে জমিয়তের হেভিওয়েট প্রার্থী হাফিজ মাওলানা সৈয়দ তামীম আহমদ দিরাই পৌরসভার বাজেট পেশ সুনামগঞ্জ সীমান্তে ভারতীয় মাদকের চালান আটক দিরাইয়ের সেনা বাহিনীর অভিযানে গ্রেফতার ৪, গুলিতে নিহত নিরীহ আবু সাইদ হেফাজতে ইসলাম মিডল‍্যান্ডস শাখা গঠন: সভাপতি মাওলানা এখলাছুর রহমান, সেক্রেটারী মাওলানা এনামুল হাসান সাবীর লন্ডন মহানগর জমিয়তের ঈদ পুনর্মিলনী ও কার্যনির্বাহি কমিটির সভা অনুষ্ঠিত
শিশু তুহিন হত্যা: বাবা-চাচাসহ পাঁচ স্বজনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট

শিশু তুহিন হত্যা: বাবা-চাচাসহ পাঁচ স্বজনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট

amarsurma.com

আমার সুরমা ডটকম:

সুনামগঞ্জের দিরাইয়ে কেজাউড়া গ্রামে শিশু তুহিনের আলোচিত  হত্যাকান্ডের ঘটনায় বাবা-চাচাসহ পাঁচ স্বজনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেছে পুলিশ।

সোমবার দুপুরে নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে এই তথ্য জানিয়েছেন সুনামগঞ্জের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মিজানুর রহমান।

অভিযুক্তরা হলেন, তুহিনের পিতা আব্দুল বাছির, চাচা মোছাব্বির, জমসেদ, নাছির ও চাচাতো ভাই শাহরিয়া (শাহারুল)। শাহারুলের বয়স ১৮ বছরের কম হওয়ায় তার বিরুদ্ধে শিশু আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়েছে।

হত্যাকান্ডের সাথে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত থাকার প্রমানণসহ তাদের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট প্রদান করা হয়েছে বলে জানান পুলিশ সুপার। আদালত চার্জশিট আমলে নিয়েছেন। প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে ও প্রতিবেশীদের সমর্থন পেতে নির্মমভাবে এই হত্যাকান্ড ঘটানো হয়েছে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছে পুলিশ।

সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান জানান, গত ১৪ অক্টোবর ভোরে দিরাই উপজেলার রাজানগর ইউনিয়নের কেজাউড়া গ্রামে আব্দুল বাছিরের ছেলে তুহিন মিয়াকে নৃশংসভাবে খুন করে গাছে ঝুলিয়ে রাখে দুর্বৃত্তরা। খবব পেয়ে লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। সেই সময় তুহিনের বাবা, তিন চাচা, চাচাতো ভাই, চাচি ও চাচাতো বোনসহ সাতজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়। তুহিন হত্যায় অজ্ঞাতনামা কয়েকজনকে আসামি করে থানায় মামলা দায়ের করেন তুহিনের মা মনিরা বেগম। পরদিন আদালতে চাচা নাসির ও চাচাতো ভাই শাহরিয়ার  ১৬৪ ধারায় হত্যাকান্ডে জড়িত থাকার স্বীকারোক্তিমূলক জবানন্দি দেন।

পুলিশ জানায়, গ্রাম্য কোন্দল, গ্রামের সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আনোয়ার মেম্বারের লোকদের সঙ্গে পুরনো বিরোধ ছিল তুহিনের পরিবারের। ২০০২ সালে গ্রামে একটি হত্যাকান্ড হয়। যা মুুজিব হত্যাকান্ড নামে পরিচিত। তুহিনের বাবা বাছির এই মামলার আসামি ছিলেন। এই ঘটনার জেরে দুই পক্ষের মধ্যে একাধিক মামলা হয়। সর্বশেষ ২০১৫ সালের দিকে তুহিনের বাবা বাছিরের বেয়াই জবর আলীর মেয়ে নিলুফাকে হত্যা করা হয়। নিলুফা হত্যার আসামি ছিলেন তুহিনের বাপচাচাদের প্রতিপক্ষ আনোয়ারর মেম্বারের গোষ্ঠীর ১৫-১৬ জন। ঐ মামলার সাক্ষী ছিল তুহিনের চাচা মোছাব্বির। বর্তমানে এই মামলা গ্রামের একজনের হস্তক্ষেপে জবর আলী আনোয়ার মেম্বারের সাথে বিরোধ মিমাংশা করার প্রক্রিয়া চলমান ছিল। তুহিনের বাবা বাছিরের বিরুদ্ধে মুুজিব হত্যায় যে মামলাটি চলছিল তার যুক্তিতর্ক শুনানির তারিখ ছিল ১৪ অক্টোবর। পুলিশ তদন্ত করতে গিয়ে জানতে পেরেছি তুহিনের বাবার আশঙ্কা করছিলেন এই মামলায় হয়তো তার শাস্তি হয়ে যেতে পারে। প্রতিপক্ষের মামলা মিমাংশা ও নিজের মামলার শাস্তির আশঙ্কা থেকে প্রতিপক্ষকে চাপে রাখার কৌশল হিসেবে ৩ দিন আগে নিজ সন্তানকে হত্যা করার পরিকল্পনা করেন বাছির। বাছির তার ভাই ও ভাতিজারা এই পরিকল্পনায় জড়িত ছিল। পরর্তীতে হত্যাকান্ডের রাতে ঘর থেকে তুলে নিয়ে বাড়ির পাশে নিসংশভাবে হত্যা করে গাছে ঝুঁলিয়ে রাখে প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে এবং হত্যায় ব্যবহৃত দুই ছুরিতে প্রতিপক্ষের সালাতুন ও সোলেমানের নাম লিখে রাখে। তদন্তে করতে গিয়ে বিশেষজ্ঞদের দেয়া রিপোর্ট অনুযায়ী সালাতুল ও সোলেমানের সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়নি। তাদের রির্পোট আব্দুল বাছির ও তার ভাইদের বিরুদ্ধে বলে জানান তিনি।

হত্যাকান্ডে বাবা আব্দুল বাছিরের সম্পৃক্তা প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে পুলিশ সুপার বলেন, হত্যাকান্ডের রাতে বাবার সাথে একই খাটে শিশু তুহীন ঘুমিয়ে ছিল। বাবা ভিন্ন অন্যকেউ তুহীনকে বাইরে নিয়ে যাওয়া বাস্তবসম্মত নয়। তুহিনের চাচা নাছির আদালতে যে স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দী দিয়েছে তাতে সে পরিস্কারভাবে বলেছে এই হত্যাকান্ডে তুহিনের বাবা আব্দুল বাছির জড়িত।

হত্যাকান্ডে পরিবারের স্বজনদের এমন নৃসংশতার কারণ হিসেবে পুলিশ সুপার জানান, ঘটনার তদন্ত করতে গিয়ে যা জানতে পেরেছি, হত্যাকান্ডে নিসংশতার মূল কারণ জনমতকে পক্ষে নেয়। প্রতিবেশীরা যাতে শিশুর মৃতদেহ দেখে প্রতিপক্ষের বিরোদ্ধে ক্ষুব্ধ হয়, আক্রমনাত্মক হয়।

নিউজটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2017-2019 AmarSurma.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com