মঙ্গলবার, ১৯ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:৪৯ অপরাহ্ন
আমার সুরমা ডটকম:
সুনামগঞ্জের তাহিরপুরের তিন শুল্ক ষ্টেশন কয়লা-চুনাপাথর পরিবাহী নৌযান হতে উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতির ছেলের চাঁদাবাজি বন্ধের দাবিতে এক হাজারের বেশি নৌ-শ্রমিক মানববন্ধন করেছেন। মঙ্গলবার উপজেলার মন্দিয়াতা বাজারে এ মানববন্ধন কর্মসুচী পালিত হয়েছে।
মানববন্ধনে নৌ শ্রমিকগণ অভিযোগ করেন, তাহিরপুর উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আবুল হোসেন খাঁর বড় ছেলে আবুল কালাম খাঁ পারুল প্রশাসন কতৃক ইজারাদার দাবি করে কয়লা চুনাপাথর পরিবাহী নৌযান হতে প্রাইভেট গ্যাং দিয়ে ইচ্ছেমত অতিরিক্ত টোল আদায়ের নামে ঘাটে ঘাটে চাঁদাবাজি করছেন।
পারুল খাঁর এই বাহিনী প্রতিনিয়ত কয়লা চুনাপাথরবাহী নৌযান আটক রেখে শ্রমিকদের মারধর করছে। অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে রশিদ ছাড়াই একাধিক ঘাটে একাধিকবার টোলের নামে চাঁদাবাজি করছে।
মানববন্ধনে অংশ নেয়া ভুক্তোভোগী শ্রমিকরা বলেন, তাহিরপুরের বড়ছড়া, চারাগাঁও, বাগলী এ তিন শুল্ক ষ্টেশন দিয়ে কয়লা চুনাপাথর আমদানি হয়। ইঞ্জিন চালিত ট্রলার, বাল্কহেড, কার্গোতে এসব চুনাপাথর পরিবহনকালে পাটলাই নদীতে অতিরিক্ত টোল আদায়ের নামে প্রাইভেট বাহিনী নিয়োগ করেছেন পারুল খাঁ।
তারা জানান, চাহিদা মাফিক চাঁদা না দিলে পারুল খাঁর বাহিনীর এসব সদস্যরা নৌযান আটকে রাখে। নৌযান শ্রমিকদের মোবাইল ফোন, ইঞ্জিন চালনা যন্ত্র, গ্যাসের চুলো কেঁড়ে নেয়। এছাড়া ওই বাহিনীর হাতে নানা রকম শারীরিক নির্যাতনের শিকার হচেছন নৌযান শ্রমিকরা।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী নৌযান শ্রমিক তাহিরপুর উপজেলার মাহতাবপুর গ্রামের আব্দুর রশিদ বলেন, তিনঘাটে পারুল খাঁর নিয়োজিত লোকদের প্রতি ঘাটে দেড় হাজার করে টাকা চাঁদা দিতে হয়। অথচ অতীতে প্রশাসন নির্ধারিত এসব নৌকার বিপরীতে মাত্র ২০০ টাকা টোল পরিশোধ করতে হত।
একই বক্তব্য দিয়ে জেলার ছাতক উপজেলার কুচবাড়ি গ্রামের নৌযান শ্রমিক মাসুম আহমদ বলেন, অন্য এলাকার নৌযান হলে প্রতি ঘাটে তিন থেকে চার হাজার টাকা করে চাঁদা দিতে হচ্ছে আমাদেরকে।
উপজেলার শ্রীপুর উত্তর ইউনিয়নের ইউপি সদস্য মো. সাজিনূর মিয়া বলেন, পারুল খাঁ তার পিতার দাপট দেখিয়ে পাটলাই নদীর নৌপথে একাধিক ঘাটে টোল আদায়ের নামে ইচ্ছেমত চাঁদাবাজি করছেন। এই চাঁদাবাজ চক্রের কালো টাকার জোর এতটাই বেশি যে, প্রতিবাদ করতে গেলে উল্টো তারা নানামুখী হয়রানি, চাঁদাবাজিসহ মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে দিচ্ছে।
বুধবার তাহিরপুর উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি পুত্র আবুল কালাম খাঁ পারুল চাঁদাবাজির অভিযোগ অস্বীকার করে গণমাধ্যমকে বলেন, আমি ১৪ লাখ ৪০ হাজার টাকা খরচ করে প্রশাসন হতে খাঁস কালেকশন আদায়ে ঘাটের ইজরাদার নিযুক্ত হয়েছি। নির্ধারিত হারে রশিদের মাধ্যমে টোল আদায় করছি। স্থানীয় ইউপি সদস্যকে চাঁদা না দেয়ায় টোল আদায়ে নিয়োজিত আমার লোকদের পিটিয়ে ওই ইউপি সদস্যের লোকজন পানিতে ফেলে দেয়ার পরও আমি প্রতিবাদ করি নি।