রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:২২ অপরাহ্ন

ব্রেকিং নিউজ :
প্রতিনিধি আবশ্যক: অনলাইন পত্রিকা আমার সুরমা ডটকমের জন্য প্রতিনিধি নিয়োগ দেয়া হবে। আগ্রহীরা যোগাযোগ করুন : ০১৭১৮-৬৮১২৮১, ০১৭৯৮-৬৭৬৩০১
দেশের সর্ববৃহৎ ঈদ জামাত শোলাকিয়ায় অনুষ্ঠিত

দেশের সর্ববৃহৎ ঈদ জামাত শোলাকিয়ায় অনুষ্ঠিত

আমার সুরমা ডটকম :
এবারো দেশের সর্ববৃহৎ ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হলো শোয়ালাখিয়ায়। প্রথা অনুযায়ি শর্টগানের গুলি ছুড়ে প্রতি বছরের মতো এবারো কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানে অনুষ্ঠিত হয়েছে দেশের সর্ববৃহৎ ঈদের জামাত। বৃষ্টিকে উপেক্ষা করে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে হাজার হাজার মুসল্লি ঈদের জামাতে অংশ নেন। মুসল্লিদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে ওঠে গোটা ঈদগাহ ময়দান। আজ সকাল ১০টায় অনুষ্ঠিত হয় বৃহত্তম এই ঈদ জামাত। জামাতে ইমামতি করেন মাওলানা মো. ফরিদ উদ্দিন মাসউদ। এর আগে সুষ্ঠুভাবে জামাত অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে ৫ জুলাই একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী প্রস্তুতিমূলক কর্মকাণ্ড চলে। ঈদগাহ ময়দান জুড়ে কাতারের লাইন টানা, মাঠ পরিষ্কার পরিচ্ছন্নকরণ ও ধোঁয়ামোছার কাজ করা হয়। মাঠে পানি সরবরাহ, পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা উন্নয়নসহ মুসল্লিদের নামাজ পড়ার উপযোগী করে তোলার জন্য নেওয়া হয়েছিল সব ধরনের প্রস্তুতি। নেওয়া হয়েছিল পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা। কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপার মো. আনোয়ার হোসেন খান জানান, শোলাকিয়ার ঈদ জামাত উপলক্ষে মাঠ ও এর আশপাশের এলাকায় পর্যাপ্ত সংখ্যক ক্লোজসার্কিট ক্যামেরা বসানো হয়। প্রবেশদ্বারে বসানো হয় আর্চওয়ে। এছাড়া জামাতের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুলিশের ক্যাম্প বসানো হয় এবং সাদা পোশাকে পুলিশের গোয়েন্দা দল মোতায়েন করা হয় ঈদগাহ এলাকায়। এদিকে মুসল্লিদের যাতায়াতের সুবিধার্থে ‘শোলাকিয়া স্পেশাল’ নামে দুটি বিশেষ ট্রেন চালু করা হয়। শোলাকিয়া মাঠ থেকে জামাত সরাসরি সম্প্রচার করে বেশ কয়েকটি স্যাটেলাইট টেলিভিশন চ্যানেল।
প্রায় তিনশ বছর ধরে শোলাকিয়ায় ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হচ্ছে
এ মাঠের রেওয়াজ অনুযায়ি জামাত শুরুর ৫ মিনিট, ৩ মিনিট ও ১ মিনিট আগে নামাজের প্রস্তুতি হিসেবে শর্টগানের গুলি ছোঁড়া হয়। ১৮২৮ সালে শোলাকিয়ায় ঈদের বড় জামাত অনুষ্ঠিত হলেও এর যাত্রা শুরু হয় ১৭৫০ সালে। মসনদ-ই-আলা ঈশা খাঁর ৬ষ্ঠ বংশধর দেওয়ান হযরত খানের উত্তরসূরি দেওয়ান মান্নান দাদ খান ১৯৫০ সালে ৪.৩৫ একর ভূমি শোলাকিয়া ঈদগাহে ওয়াকফ করেন। বর্তমানে এ জায়গার পরিমাণ দাঁড়িয়েছে সাত একর। যা আগত মুসল্লিদের মাত্র অর্ধেকের বেশি ধারণ করতে পারে। এ এলাকার পূর্বনাম ছিল রাজাবাড়িয়া। জনশ্র“তি আছে, ঈদগাহ মাঠে প্রথম বড় জামাতে সোয়ালাখ লোক অংশ নিয়েছিল। যে কারণে এর নামকরণ করা হয় ‘সোয়ালাখিয়া’। তবে ভিন্নমতে, মোঘল আমলে এখানকার পরগণার রাজস্বের পরিমাণ ছিল সোয়ালাখ টাকা। উচ্চারণগত কারণে এই ঈদগাহ মাঠ শোলাকিয়া নামে পরিচিতি লাভ করে।
মাঠের দৈর্ঘ্য পূর্ব পশ্চিমের দক্ষিণ পার্শ্ব ৯১৪ ফুট, উত্তর সীমারেখা ৭৮৮ ফুট। প্রস্থ উত্তর দক্ষিণে পশ্চিম সীমা রেখা ৩৩৫ ফুট ও পূর্ব সীমা রেখা ৩৬১ ফুট। মাঠের ভেতরে ২৬৫টি কাতার রয়েছে। মূল ঈদগাহে জায়গা সংকুলানের অভাবে মাঠের চারপাশের খালি জায়গা-জমি, ক্ষেত, বসত বাড়ির আঙ্গিনায় এবং রাস্তা-ঘাটে অগণিত মুসল্লিকে নামাজ আদায় করতে হয়। এতবড় জামাত চোখে না দেখলে বিশ্বাস করাই কঠিন। প্রতি বছরই এ জামাতের প্রতি ধর্মপ্রাণ মুসল্লিদের আকর্ষণ বাড়ছে। কিন্তু সেই তুলনায় এর উন্নয়ন ও পরিধি বিস্তৃত হয়নি।

নিউজটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2017-2019 AmarSurma.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com