শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০১:৪৫ অপরাহ্ন
হাবিব সারোয়ার আজাদ:
বাংলাদেশের অভ্যন্তরে সুনামগঞ্জের তাহিরপুর সীমান্তের একাধিক বিভিন্ন পাহাড়ি ছড়া ও সীমান্তনদী দিয়ে প্রবল বর্ষণে ঢলে কিংবা বন্যার পানির সাথে বয়ে আসা কয়লা পাথর কুড়িয়ে কয়েক হাজার হতদরিদ্র সুবিধাবঞ্চিত নারী পুরুষ কিশোর কিশোরীর জীবিকা নির্বাহ কওে আসছেন।
কিন্তু এসব কুড়ানো কয়লা বা মরা পাথর বিক্রি করতে গেলেও ক্রেতাদের নিকট বিভিন্ন সীমান্ত পয়েন্টে হাত পাতেন চাঁদাবাজরা।
যে কারনে রোদ বৃষ্টি বজ্রপাত উপেক্ষা করে হারভাঙ্গা খাটুনির পরও চাঁদাবাজদের হাত প্রসারিত থাকায় ন্যায়মুল্য থেকে কুড়িয়ে তোলা বাংলা কয়লা বা মরা পাথর বিক্রির ন্যায্য মুল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন সুবিধা বঞ্চিত মানুষেরা।
প্রতিটন বাংলা কয়লা ২০০ থেকে ২৫০ টাকা, প্রতিট্রলি মরা পাথররের জন্য ২৫০ থেকে ৩০০’শ টাকা হারে সেটেল বা চাঁদা দিতে হয় ক্রেতাদের চাঁদা আদায়ে থাকা নির্ধারিত সোর্স বা এজন্ট গ্রুপকে। চাঁদা না পেলেই এসব কুড়িয়ে তোলা বাংলা কয়লা বা মরা পাথর হয়ে যায় অবৈধ কিংবা চোরাই মালামাল।
অতচ দিনভর সীমান্তের বুরুঙ্গা, বড়ছড়া, ট্যাকেরঘাট, লাকমা, লালঘাট, বাঁশতলা, চারাগাঁও, কলাগাঁও পাহাড়ি ছড়ায় বাংলাদেশ অভ্যন্তরে হাজারো নারী পুরুষ কিশোর কিশোরী জাল, চালুনি, বেলচা, কুদাল দিয়ে হাতে কুড়িয়ে উক্তোলন করেন ভেসে আসা বাংলা কয়লা বা মরা পাথর। উক্তোলনকালে এসব বাংলা কয়লা বা মরা পাথর অবৈধ বা চোরাই মালামাল না হলেও চাঁদাবাজ চক্রের থাবায় বিক্রির সময় চাঁদা না পেলেই এসব কয়লা , মরা পাথর হয়ে হয়ে যায় অবৈধ বা চোরাই মালামাল।
মঙ্গলবার বিকেলে সরজমিনে গেলে দেখা যায় চারাগাঁও ছড়ার বাংলাদেশ অভ্যন্তরে সদ্য বিধবা এক মা ছড়ার ওপারে ভেসে আসা কয়লা কুড়াচ্ছেন আর ছড়ার অপর পাড়ে বসে সীমান্তের সেই ক্ষুদে রাজকন্যা মায়ের কুড়ানো ভেসে আসা কয়লা পাহাড়া দিচ্ছেন। একই ভাবে সীমান্তের বিভিন্ন ছড়া গুলোতে দিনভর কয়লা বা মারা পাথর কুড়ান হাজারো মানষজন।
সীমান্তের পাহাড়ি ছড়ায় বাংলা কয়লা ও মরা পাথর উক্তোলকারীদের অভিযোগ, সুবিধাবঞ্চিত মানুষজনের কুড়ানো কয়লার নাম ‘বাংলা’ কয়লা হলেও চাঁদাবাজদের কারনে সেই কুড়ানো কয়লার ন্যায্য মুল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন সীমান্তের সুবিধাবঞ্চিত হাজারো হতদরিদ্র মা বাবা, কিশোর-কিশোরীরা।
চাঁদাবাজ চক্রের বাঁধার মুখে গত কয়েকদিন ধরে ভয়ে বাংলা কয়লা বা মরা পাথর কেনা বন্ধ রেখেছেন ব্যবসায়ীরা। হতদরিদ্ররা পড়েছেন নানা শংকায়, কারন ছড়ার তীরে, বাড়ির উঠোনে রাখা এসব কুড়ানো কয়লা বা মরা পাথর এখনই বিক্রি করতে না পারলে আবারো ঢল বা বণ্যা হলে সবই ভেসে যাবে হাওর নদীর পেটে।
এসব চাঁদাবাজ চক্রের পৃষ্টপোষক এবং চাঁদাবাজীর আয়ে সুবিধাভোগীদের থাবা থেকে রেহাই পেতে সুবিধাবঞ্চিত লোকজন জেলা প্রশাসন, ২৮ বর্ডারগার্ড ব্যাটালিয়ন (বিজিবি) বাংলাদেশ’র অধিনায়ক, পুলিশ সুপার ও সীমান্তরক্ষায় নিয়োজিত বিজিবি এমনকি গণমাধ্যমের সহায়তা চেয়েছেন।
ছবিগুলো সুনামগঞ্জ সীমান্তের তাহিরপুরের চারাগাঁও স্থল শুল্ক ষ্টেশনের চাড়াগাঁও ও ট্যাকেরঘাট ছড়া থেকে মঙ্গলবার ক্যামেরাবন্দি করা হয়।