বুধবার, ৩০ অক্টোবর ২০২৪, ০৩:৩০ অপরাহ্ন
সাইফ উল্লাহ, বিশেষ প্রতিবেদক (সুনামগঞ্জ): সুনামগঞ্জ-জগন্নাথপুর সড়কে ২১ কিলোমিটারের মধ্যে সেতু আছে ১৬টি, এরমধ্যে ৯টি বেইলি সেতু রয়েছে ঝুঁকিপূর্ণ। প্রতিদিন এসব ঝুঁকিপূর্ণ সেতু দিয়ে চলছে যানবাহন। এতে ঘটতে পারে যে কোনো সময় বড় ধরণের দুর্ঘটনা। সুনামগঞ্জ সড়ক ও জনপথ বিভাগ (সওজ) সূত্রে জানা গেছে, সুনামগঞ্জ-সিলেট সড়কের পাগলা এলাকা থেকে জগন্নাথপুর পৌরশহর পর্যন্ত সড়কের দূরত্ব রয়েছে ২১ কিলোমিটার এবং ১৬টি সেতুর মধ্যে পাকা সেতু সাতটি এবং বেইলি সেতু নয়টি। এই নয়টি বেইলি সেতু আছে ঝুঁকিপূর্ণ। আবার এরমধ্যে সাতটি রয়েছে মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায়।
জগন্নাথপুর পৌরশহরে কয়েকজন বাসিন্দা জানান, জগন্নাথপুর উপজেলার রাণীগঞ্জ এলাকায় কুশিয়ারা নদীতে ফেরী চালু হওয়ায় এ সড়ক দিয়ে বেড়েছে যান চলাচল। এরমধ্যে একটি সেতু নির্মাণের উদ্যোগও নেওয়া হয়েছে। চলতি মাসেই সেতুর কাজ শুরু হবে। সুনামগঞ্জ থেকে এই সড়ক দিয়ে ঢাকা যেতে প্রায় একঘণ্টা সময় কম লাগে বিধায় অনেকেই এই রাস্তা দিয়ে ঢাকায় যাতায়াত করেন। পাগলা এলাকা থেকে জগন্নাথপুর যেতে আক্তাপাড়া, দরগাপাশা, বমবমি বাজার, ভাতগাঁও, কুন্দানালা, গয়াসপুর, কলকলি, খাসিলা, মজিদপুরসহ নয়টি ঝুঁকিপূর্ণ বেইলি সেতু রয়েছে। এসব সেতুর পাশে ‘ঝুঁকিপূর্ণ সেতু’ সাইনবোর্ড দিয়ে রেখেছে সওজ কর্তৃপক্ষ।
কুন্দানালা এলাকার সেতুটি একদিকে হেলে আছে। সেতুর মাঝখানে কয়েকটি স্টিলের পাটাতন ভেঙে যাওয়ায় সেগুলো জোড়াতালি দেওয়া হয়েছে। যানবাহনের ভারে এসব পাটাতন যাতে ভেঙে না পড়ে সে জন্য নিচে বাঁশ দিয়ে বেঁধে রাখা হয়েছে। একই অবস্থা গয়াসপুর গ্রামের পাশের বেইলি সেতুর। এই সেতুরও কয়েকটি স্থানে স্টিলের পাটাতন উচুঁ-নিচু হয়ে যাওয়ায় সেগুলোর ওপরে আবার স্টিলের পাটাতন দিয়ে জোড়াতালি দেওয়া হয়েছে। মজিদপুর এলাকার সেতুর মাঝখানে দুই জায়গায় জোড়াতালি দেওয়া আছে। কুন্দানালা গ্রামের বাসিন্দা আবুবক্কর (৪৫) বলেন, এখন এই পুলের যে অবস্থা যে কোনো সময় গাড়ি নিয়া ভাইঙ্গা পড়তে পারে। মাঝখানে স্টিলের কিছু অংশ দেবে যাওয়ার নিচে বাঁশ দিয়ে আটকাইয়া রাখছে।’ এই সড়কের বাসচালক সাব্বির আহমদ বলেন, ‘ব্রিজের উপরে গাড়ি উঠলে মনে অয় ভুমিকম্প শুরু অইছে। আমরা ত ভয়ে থাকি কোন সময় ব্রিজ ভাঙ্গে।’
জগন্নাথপুর পৌরশহরের বাসিন্দা আলী আহমদ বলেন, ‘সেতুগুলো ঝুঁকিপূর্ণ থাকায় সুনামগঞ্জে যাতায়াতের ক্ষেত্রে সময় বেশি লাগে। আবার কোনো কোনো বেইলি সেতু খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। এসব সেতুর স্থলে নতুন সেতু না হলে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। জগন্নাথপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জয়দ্বীপ সূত্রধর বীরেন্দ্র বলেন, ‘আমরা কয়েক বছর ধরে শুনছি, সেতুগুলো তুলে নতুন করে পাকা সেতু নির্মাণ করা হবে। একই সঙ্গে সড়কের সংস্কার কাজও হবে। কিন্তু এখন শুধুই আলোচনা হচ্ছে, কাজ আর হচ্ছে না।’
এ ব্যাপারে সুনামগঞ্জ সওজ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, এই সড়কে বেশ কয়েকটি ঝুঁকিপূর্ণ বেইলি সেতু আছে। এরমধ্যে আমরা বেশি ঝুঁকিপূর্ণ সাতটি সেতু চিহ্নিত করে পাকা সেতু নির্মাণের জন্য পরিকল্পনা কমিশনে একটি প্রকল্প প্রস্তাব পাঠিয়েছি, প্রকল্পটি বর্তমানে প্রক্রিয়াধীন আছে।