শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:৩৮ অপরাহ্ন

ব্রেকিং নিউজ :
প্রতিনিধি আবশ্যক: অনলাইন পত্রিকা আমার সুরমা ডটকমের জন্য প্রতিনিধি নিয়োগ দেয়া হবে। আগ্রহীরা যোগাযোগ করুন : ০১৭১৮-৬৮১২৮১, ০১৭৯৮-৬৭৬৩০১

নৌ যানে চাঁদা আদায়কালে পাটলাই নদী হতে চাঁদাবাজ গ্রেফতার

amarsurma.com

চাঁদবাজির নেপথ্যের কারিগড় জাতীয় শ্রমিক লীগ নেতা সেই মতিউর অধরা!

আমার সুরমা ডটকম:

সুনামগঞ্জের তাহিরপুরের সীমান্ত নদী পাঠলাই নদীতে কয়লা, চুনাপাথর, বালুপাথর পরিবাহি নৌযানে জোরপুর্বক চাঁদা আদায়কালে মানিক নামে এক নৌ চাঁদাবাজকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার বিকেলে তাকে জেলা কারাগারে প্রেরণ করা হয়।
গ্রেফতারকৃত মানিক উপজেলার বালিজুড়ী ইউনিয়নের দক্ষিণকুল গ্রামের নিজাম উদ্দিনের ছেলে ও উপজেলার শ্রীপুর ইউনিয়নের শিবরামপুর মনতলা গ্রামের মৃত তোতার ছেলে নৌপথের দুদর্ষ চাঁদাবাজ মতিউর রহমান ওরফে মইত্যার অন্যতম সহযোগী।
বৃহস্পতিবার দুপুরে এ ব্যাপারে মানিককে গ্রেফতার ও অপর দুজন পলাতক এবং বেশ কয়েকজনকে পলাতক আসামি দেখিয়ে তাহিরপুর থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়। জব্দ করা হয় চাঁদা আদায়ের নগদ টাকা ও চাঁদা আদায়ে নৌপথে ব্যবহ্নত একটি ইঞ্জিন চালিত ট্রলার।
মামলার এজাহার সুত্রে জানা যায়, উপজেলার বড়ছড়া শুল্ক ষ্টেশন হতে কয়লা চুনাপাথর পরিবাহি বিভিন্ন নৌযান (ইঞ্জিন চালিত স্টীল বডি, ট্রলার, বাল্ক হেড, কার্গো) হতে জোর পুর্বক গতিরোধ ও ভয়ভীতি দেখিয়ে পাটলাই নদীর সংসার বিলপাড় এলাকায় চাঁদা আদায়কালে বৃহস্পতিবার সকালে তাহিরপুর থানা ও ট্যাকেরঘাট পুলিশ ফাঁড়ির যৌথ অভিযানে মানিক নামের এক নৌ চাঁদাবাজকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারকালে উপজেলার শ্রীপুর উত্তর ইউনিয়নের বেতাগড়া গ্রামের রহিছ উদ্দিনের ছেলে সোলেমান মিয়া, পার্শ্ববর্তী শিবরামপুরের বলাইর ছেলে বাবুল মিয়া তাদের অপর কয়েক সহযোগীকে নিয়ে সাতরিয়ে পালিয়ে যায়।
মূলহোতা সেই মতিউর অধরা:
নৌ পরিবহন মালিক, শ্রমিক ও বিভিন্ন ব্যবসায়ীদের অভিযোগ রয়েছে বড়ছড়া, চারাগাঁও, বাগলী স্থল ষ্টেশন থেকে আমদানিকৃত কয়লা-চুনপাথর, পাহাড়ি ছড়ায় থেকে উক্তোলনকৃত বালু পাথর সিঙ্গেল সারা দেশে নৌযানে পরিবহনকালে গত কয়েক বছর যাবৎ উপজেলার শিবরামপুর মনতলা গ্রামের মৃত তোতা মিয়ার ছেলে নিজেকে সরকারি দল আওয়ামী লীগের বড় নেতা দাবি করে পাটলাই নদীর ডাম্পের বাজার, বালিয়াঘাট, শ্রীপুর বাজার, সংসার বিলপাড়, কামালপুর, মন্দিয়াতায় ওয়াকফ ষ্টেইট, তালুকদারী ষ্টেইট, দেবোত্তর ষ্টেইট, খাস কালেকশানের নামে ১০ থেকে ১২ পয়েন্টে কয়েকটি লাঠিয়াল গ্রুপের সাহায্যে নৌপথে নৌযান আটকে ইচ্ছে মাফিক হারে জোরপুর্বক নৌযান মালিক শ্রমিক ও ব্যবসায়ীদের চাঁদা প্রদানে বাধ্য করে আসছে। ইতিপুর্বে আইন-শৃংখলা বাহিনীর হাতে মতিউরের পাঁচ সহযোগী নৌপথে চাঁদা আদায়কালে গ্রেফতার হলে জেল হাজতে পাঠানো হয়। কিন্তু বারবার বেপরোয়া চাঁদা আদায়ের সময় হাতে নাতে মতিউরের সহযোগীরা পুলিশ বা আইন-শৃংখলা বাহিনীর হাতে গ্রেফতার, মামলার শিকার হলেও নৌপথে যেমন বন্ধ হয়না বেপরোয়া চাঁদাবাজি তেমনি মামলা বা গ্রেফতারেও রহস্যজনক কারনে মতিউর থাকেন সব সময়ই অধরা বা অদৃশ্য। চাঁদাবাজির আয়ের টাকা মতিউর চারপাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়ে যান বহাল তবিয়্যতে।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আলোচিত মতিউর নিজেকে সুনামগঞ্জ জেলা জাতীয় শ্রমিক লীগের সহ-সভাপতি দাবি করে গণমাধ্যমকে বলেন, গ্রেফতার মানিক আমার লোক। তিনি আরো বলেন, আমি শ্রীপুর বাজারঘাট ইউএনও অফিস থেকে ইজারা নিয়েছি, অহেতুক আমার লোকজনকে পুলিশ গ্রেফতার করে নিয়ে গেছে।
তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) মো. মুনতাসির হাসানের নিকট নৌকাঘাট ইজারা প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় গণমাধ্যমকে বলেন, নৌকাঘাট ইজারা প্রদানের বিষয়টি এই মুহুর্তে আমার জানা নেই, হয়ত আমার পুর্ববর্তী দায়িত্বপ্রাপ্ত ইউএনও মহোদয় ইজারা দিয়েও থাকতে পারেন কিন্তু ইজারাপ্রাপ্ত নির্ধারিত নৌকাঘাটের বহি:র্ভুত নৌপথে গিয়ে জোরপুর্বক টাকা আদায় করাটা চাঁদাবাজি বলেই গণ্য হবে। নির্ধারিত ঘাটের বাহিরে গিয়ে একাধিক নৌপথে নৌযান শ্রমিক, মালিক, ব্যবসায়ীদের নিকট থেকে টোল আদায়ের নামে বেনামে চাঁদা আদায়ের ব্যাপারে মতিউর ও তার লোকজনের বিরুদ্ধে অসংখ্য অভিযোগ রয়েছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2017-2019 AmarSurma.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com