সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০২:৩৭ পূর্বাহ্ন
আমার সুরমা ডটকম:
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ঢাকা সফর বাতিল করা হয়েছে। এ খবর দিয়েছে ভারতের বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যম। আগামী ১৭ই মার্চ মুজিববর্ষের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দিতে নরেন্দ্র মোদির ঢাকায় আসার কথা ছিল। কিন্তু বাংলাদেশ সরকার এরইমধ্যে মুজিববর্ষের মূল উদ্বোধনী অনুষ্ঠান স্থগিত করেছে। করোনার কারণে জনসমাগম এড়াতে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। পরবর্তী কোনো সময়ে এ অনুষ্ঠান আয়োজন করা হতে পারে। এর প্রেক্ষিতে মোদির সফর বাতিলের বিষয়টি ভারত আনুষ্ঠানিকভাবে নিশ্চিত করেছে।
ভারতের গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়, গত রোববার (৮ মার্চ) প্রথমবারের মতো ৩ জন করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সন্ধান পাওয়া যায় বাংলাদেশে। এদের মধ্যে একজন নারী ও দুইজন পুরুষ। দেশটিতে যাতে করোনা ভাইরাস আরও ছড়িয়ে পড়তে না পারে, সে জন্য আগামী ১৭ মার্চ অনুষ্ঠিতব্য শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকীর অনুষ্ঠান সীমিত ও গণজমায়েত না করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়, করোনা ভাইরাসের ক্রমবর্ধমান হুমকির মুখে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীর অনুষ্ঠান সীমিত ও পুনর্বিন্যস্ত করা হয়েছে। আগামীতে সুবিধাজনক কোনো সময়ে এ উপলক্ষে বড় আয়োজন করার পরিকল্পনা আছে কর্তৃপক্ষের। আগামী ১৭ মার্চ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জন্মশতবার্ষিকীর অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করলেও, অনুষ্ঠান ঘিরে কোনো ধরনের গণজমায়েত না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
সার্বিক প্রেক্ষাপটেই আপাতত বাংলাদেশ সফর বাতিল হয়েছে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর। শুধু মোদিই নন, করোনার হুমকির মুখে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অন্য বিদেশি অতিথিদেরও বাংলাদেশ সফর বাতিল হয়েছে।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিসহ আমন্ত্রিত বিদেশি অতিথিরা আসছেন না মুজিববর্ষের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে। বিশ্বব্যাপি করোনাভাইরাসের কারণে আপাতত স্থগিত করা হয়েছে মুজিববর্ষের প্যারেডগ্রাউন্ডের মূল উদ্বোধনী অনুষ্ঠান। জনস্বাস্থ্যের কথা বিবেচনা করে জনসমাগম এড়িয়ে ঘরোয়াভাবে উদ্বোধন করা হবে মুজিববর্ষের অনুষ্ঠান। আজ মুজিববর্ষ উদযাপন বাস্তাবায়ন জাতীয় কমিটির বৈঠকে অনুষ্ঠানসূচি পুনর্বিন্যাস করে ঘোষণা করা হবে।
গতকাল গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠক শেষে মুজিববর্ষ উদযাপন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির আহবায়ক কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান। আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিটিউসে রাত সাড়ে দশটায় এ সাংবাদিক সম্মেলন করা হয়। গতকাল বাংলাদেশে করোনা ভাইরাস শনাক্ত হওয়ার পর আগামী ১৭ মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠান কিভাবে আয়োজন করা যেতে পারে তাই নিয়ে এ প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও বাস্তবায়ন কমিটির আহবায়কের বৈঠক হয়।
কামাল আবদুল নাসের বলেন, করোনাভাইরাসের কারণে জনসমাগম এড়িয়ে মুজিববর্ষের অনুষ্ঠান পুনর্বিন্যাস করা হয়েছে। প্যারেডগ্রাউন্ডের মূল অনুষ্ঠান পরবর্তী সময়ে কবে হবে তা আলোচনা করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানানো হবে। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, প্যারেড গ্রাউন্ডের অনুষ্ঠান স্থগিত করা হয়নি, পরবর্তীতে করা হবে। যেহেতু এই অনুষ্ঠান আপাতত হচ্ছে না তাই আমন্ত্রিত বিদেশি অতিথিরাও আসছেন না। পরবর্তীতে যখন অনুষ্ঠান হবে তখন তারা আসবেন আশা করি। তবে ১৭ মার্চ জনসমাগম এড়িয়ে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান আয়োজন করা হবে। স্বাভাবিক যে কর্মসূচিগুলো ছিল তা পালন করা হবে। সারাবছর নানা আয়োজনের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুকে শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করা হবে।
তিনি বলেন, আজ মুজিববর্ষ উদযাপন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির বৈঠকে অনুষ্ঠানসূচি পুনর্বিন্যাস করা হবে। ১৭ মার্চের অনুষ্ঠান কোথায় করা হবে তা জানানো হবে।
এর আগে গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর সাথে বৈঠক শেষে পররাষ্ট্রমী ড. একে আবদুল মোমেন বলেন, সার্বিক বিশ্ব পরিস্থিতির বিবেচনায় জনস্বাস্থ্যের স্বার্থে অনুষ্ঠানসমূহ পুনর্বিন্যাস করা হয়েছে। ব্যাপক জনসমাগম এড়িয়ে বছরব্যাপি মুজিববর্ষের অনুষ্ঠানমালা চলবে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠান করলে এখানে হাজার হাজার লোক আসবে। তাদের কারও করোনা থাকতে পারে। আমরা কাউকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলতে চাই না। জনস্বাস্থ্যের বিষয়টি বিবেচনা করে পুরো বিষয়টি রিভিউ করা হয়েছে। ব্যাপক জনসমাগম এড়িয়ে সীমিত পরিসরে জন্মশতবর্ষের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান হবে।
মুজিববর্ষের অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত বিশ্বনেতাদের মধ্যে উপস্থিত থাকার কথা ছিল- ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব বান কি মুন, জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মারকেল, ভারতের সাবেক প্রেসিডেন্ট প্রণব মুখার্জি, কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো, ভুটানের রাজা জিগমে নামগিয়েল ওয়াংচুক প্রমুখ।