শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ০৭:৫১ অপরাহ্ন
মুহাম্মদ আব্দুল বাছির সরদার:
একটি সড়ক দুর্ঘটনায় পঙ্গুত্ব বরণ, শুয়ে-বসে দিন কাটানো কিংবা বগলী ব্যবহারের মাধ্যমে সামান্য হাটাচলা করা ছাড়া আর কোন কাজ করতে পারছেন না জামাল মিয়া। পরিবার-পরিজন নিয়ে খেয়ে না খেয়ে দিনাতিপাত করা তরুণ জামাল মিয়া (৩৮) এখন অসহায় অবস্থায় রয়েছেন। তিনি সুনামগঞ্জের দিরাই পৌরশহরের ৮নং ওয়ার্ডের আনোয়ারপুর উত্তরহাটির মৃত জহুর আলী মড়লের ছেলে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত বছরের ৩০ জুন সকালে দিরাই থেকে সিএনজি চালিয়ে সুনামগঞ্জ যাওয়ার পথে দিরাই-মদনপুর সড়কের সাদিরপুর নামক পয়েন্ট পার হওয়ার পরই বিপরীত দিক থেকে আসা একটি লেগুণা তার গাড়িকে ধাক্কা দেয়। সাথে সাথে তিনি ও একজন যাত্রী ছিটকে পড়লে তার ডান পায়ের উরুতে ভেঙ্গে যায়। লোকজন তাকে উদ্ধার করে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ৯নং ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়।
জামাল মিয়া জানান, প্রায় ২ মাস চিকিৎসাধীন থাকার পর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ছাড়পত্র দিয়ে বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়। পরবর্তীতে চেকআপের জন্য গেলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের খামখেয়ালীপনায় ভাঙ্গা অংশের লাগানো জোড়া আবার ছুটে যায়। তিনি আরও জানান, আগে দিরাই থানা পয়েন্টের পার্শ্ববর্তী ইউআরসি অফিসের সামনে ফুটপাতে বসে রিকসা-বাই সাইকেল বানানো ও মেরামত করে সংসার চালাতেন। কিন্তু তাদের ভবনের সৌন্দর্য্য বর্ধনের কাজ শুরু করায় আমাদেরকে সেখান থেকে তুলে দেয়া হয়। পরে আয়ের পথ না পেয়ে অবশেষে সিএনজি চালানো শুরু করি। প্রায় ১০-১৫ দিন গাড়ি চালানোর পরই দুর্ঘটনার শিকার হন জামাল মিয়া। তিনি বলেন, আমার আর্থিক অবস্থা ভালো না থাকায় উন্নত চিকিৎসা করাতে পারতেছি না। আর ভালো চিকিৎসা করাতে না পারলে স্বাভাবিক জীবনে আসতে পারবো না। বাকি জীবন পঙ্গুত্ব বরণ করেই থাকতে হবে। আর আয়ের পথ বন্ধ থাকায় ৬ জনের পরিবারটি খেয়ে না খেয়ে থাকতে হবে।
বর্তমানে পরিবারে তিনিসহ মা, স্ত্রী, ১ ছেলে ও ২ মেয়ে রয়েছে। দুর্ঘটনার পর নিজের আর্থিক সচ্ছলতা না থাকায় অনেকেই সাহায্যের হাত বাড়িয়েছেন। বিভিন্ন ব্যক্তির দেয়া সাহায্য থেকে এ পর্যন্ত প্রায় দুই লক্ষাধিক টাকা ব্যয় হয়ে গেছে। তাছাড়া লেগুণার মালিক ৬ হাজার টাকা দিলেও তিনি পেয়েছেন মাত্র তিন হাজার টাকা। বাকি টাকা যার মাধ্যমে এসেছে, সে রেখে দিয়েছে বলেও জানান তিনি। জামাল মিয়া স্বাভাবিক ও সুস্থ জীবনে ফিরতে প্রধানমন্ত্রীসহ সকলের সাহায্য-সহযোগিতা কামনা করেন।
সাহায্য পাঠানোর ঠিকানা:
মোঃ জামাল মিয়া, পিতা মৃত জহুর আলী মড়ল, গ্রাম: আনোয়ারপুর উত্তরহাটি, দিরাই পৌরসভা, দিরাই, সুনামগঞ্জ। মোবাইল ঃ ০১৭৮২-৩৫৬৪৭০, ০১৭১৮-৬৮১২৮১