মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৩:৪১ পূর্বাহ্ন
আমার সুরমা ডটকম ডেক্স : ভারতের উত্তর প্রদেশ রাজ্যের মীরাট শহরে গত বছরের জুলাইয়ে সংঘটিত ‘লাভ জিহাদ’ সংবাদ মাধ্যমে দারুণ আলোড়ন তুলেছিল।‘লাভ জিহাদ’ ভারতের উগ্রবাদীদের তৈরি একটি শব্দ, যা মূলত মুসলিমদের প্রতি বিদ্বেষ ছড়ানোর একটি বাহানা মাত্র। তাদের মতে, মুসলিম যুবকরা হিন্দু নারীদের প্রেমের ফাঁদে ফেলে ধর্মান্তরিত করে বিয়ে করছে এবং মুসলিম জনসংখ্যা বাড়ানোর চেষ্টা করছে। প্রেমের ফাঁদে ফেলে ধর্মান্তরিত করার এই প্রক্রিয়াকে নাম দেয়া হয়েছে ‘লাভ জিহাদ’।
গত বছর মীরাটের ২২ বছর বয়সী এক হিন্দু নারী মাদ্রাসা শিক্ষিকাকে অপহরণ করে ১০ জন মিলে গণধর্ষণ এবং পরে তাকে জোর করে ইসলাম ধর্ম গ্রহণে বাধ্য করে। এরপর স্থানীয় বিজেপি নেতারা আদালতে মামলা করেন এবং মামলায় উল্লেখ করেন আরো অনেক হিন্দু মেয়ের মতো এই মেয়েটিকেও ধর্মান্তরিত করার উদ্দেশ্যে অপহরণ করা হয়েছে। প্রায় এক বছর নারী নিকেতনে বন্দি থাকা ওই নারী গত দুই মাস আগে তার মুসলিম প্রেমিকের কাছে পালিয়ে যায় এবং মামলায় উল্লেখিত সব অভিযোগ মিথ্যা বলে সাক্ষ্য দেয়।
জেলা পুলিশ কর্মকর্তা পুষ্পেন্দ্র সিং বলেন, ‘অক্টোবরের ১৫ তারিখে কথিত ধর্ষিতা এলাহাবাদ হাইকোর্টে উপস্থিত থেকে সাক্ষ্য দেন এবং তার কথিত ধর্ষক কলিমের সঙ্গে বসবাস করার ইচ্ছা পোষণ করেন। কোর্ট বলেছে, তিনি পূর্ণবয়স্কা এবং কলিম বা অন্য যার সঙ্গে ইচ্ছা তার সঙ্গেই থাকার অধিকার তিনি পাবেন।’ গত বছরের আগস্টে দায়ের মামলার এজাহারে বলা হয়েছিল, ওই নারীকে কিছু লোক অপহরণ করে মুজাফফরনগর মাদ্রাসায় আটকে রেখে ধর্ষণ করে। গুজব আছে ওই মাদ্রাসায় আরো অনেক মেয়েকে আটকে রাখা হয়েছে এবং তাদের ধর্মান্তরিত করা হয়েছে।
অভিযোগ দায়েরের দুই মাস পর কথিত ধর্ষিতা যখন দায়ের অভিযোগগুলোকে মিথ্যা বলেছে তখন তার পরিবারের সদস্যরাই তাকে হত্যার হুমকি প্রদান করে। তার পরিবারের সদস্যদের নামে স্থানীয় থানায় তিনি অভিযোগ দায়ের করেন। ওই নারীর আইনজীবী বলেন, ‘অভিযুক্ত ১০ জন বর্তমানে জামিনে আছেন এবং আশা করছি তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগের দ্রুত নিষ্পত্তি করে মামলার কার্যক্রমের অবসান ঘটানো হবে।’ ঘটনার অনুসন্ধানে আরো জানা গেছে, সে ঘটনায় মুসলিমদের জড়িয়ে মিথ্যা ধর্ষণ মামলা করার জন্য ওই মেয়ের পরিবারকে স্থানীয় বিজেপি নেতারা প্রচুর টাকার লোভ দেখায় এবং শেষ পর্যন্ত মামলা দাখিল করায়। সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া