রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০২:১৩ পূর্বাহ্ন
মাসের মধ্যে হাইড্রোলিক হর্ন রাজধানীতে বন্ধ করা হবে : পরিবেশমন্ত্রী
আমার সুরমা ডটকম:
ঢাকা শহরে শব্দ দূষণ বন্ধে আগামী দু’মাসের মধ্যে যানবাহনে হাইড্রোলিক হর্ন বন্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন। অন্যদিকে ২৭তম বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলনে জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ক্ষতি মোকাবিলায় অভিযোজন তহবিলে অর্থায়নে উন্নত দেশগুলো থেকে প্রায় ৩০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার সহায়তার আশ্বাস পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন মন্ত্রণালয়ের সচিব ফারহিনা আহমেদ।
গতকাল মঙ্গলবার সচিবালয়ে পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন ২৭তম বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলনে (কপ-২৭) বাংলাদেশের প্রত্যাশা ও প্রাপ্তি নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা জানান। পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী বলেন, আমরা প্রতিটি বিভাগে সভা করছি। ঢাকায় শব্দ দূষণের সঙ্গে যারা সংশ্লিষ্ট যেমন ড্রাইভার অ্যাসোসিয়েশন, তাদের নিয়ে আমরা সভা করেছি। আমরা শিক্ষার্থীদের নিয়েও আলোচনা করছি। মোবাইল কোর্টও আমরা করে যাচ্ছি।
তিনি বলেন, আজকের সভায়ও আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, অন্তত ঢাকা শহরে আগামী দু’মাসের মধ্যে হাইড্রোলিক হর্ন সবার আগে আমাদের বন্ধ করতে হবে। হাইড্রোলিক হর্ন যেটা নিষিদ্ধ, সেটা কোনোক্রমেই আমাদের দেশে চালানো ঠিক নয়।
পরিবেশ দূষণ রোধে নেওয়া পদক্ষেপে আপনি সন্তুষ্ট কিনা-এমন প্রশ্নের জবাবে পরিবেশ মন্ত্রী বলেন, আমরা যদি পরিকল্পনা কিছু বাস্তবায়ন করতে না পারতাম, বাংলাদেশে যেভাবে টিলা কাটা শুরু হয়েছিল তাতে এখন বাংলাদেশে একটাও টিলা থাকতো না। পরিবেশ মন্ত্রণালয় থেকে কার্যক্রম শুরু হওয়ার কারণে মানুষ কিছুটা হলেও বুঝতে পেরেছে যে, টিলা কাটাটা ঠিক নয়, এটা দেশের জন্য ক্ষতিকর। সে কারণ হয়তো টিলা রক্ষা করা যাচ্ছে।
পলিথিন বন্ধের বিষয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, পলিথিন নিষিদ্ধ আছে। যারা উৎপাদন করছে, ব্যবহার করছে তাদের বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি। এটা থেকে বের হয়ে আসতে আমরা পরিকল্পনা নিয়েছি পাট থেকে সোনালী ব্যাগ তৈরি করার। আমরা ১০ কোটি টাকা দিয়েছি। সেটা আমরা যখন বাজারজাত করতে পারব আশা করি তখন পলিথিন ব্যাগ পুরোপুরি বন্ধ করতে পারব।
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব বলেন,একটি জাতি হিসেবে আমরা যে অত্যন্ত মর্যাদাপূর্ণ ও অত্যন্ত সংগঠিতভাবে জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ঝুঁকি মোকাবিলা করছি সেই জায়গাটি তুলে ধরেছি। একই সঙ্গে বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে ঐক্যবদ্ধভাবে গুণগত মানসম্পন্ন বক্তব্য যাতে সম্মেলনে যায় সেই জায়গাটা বাংলাদেশ নিশ্চিত করেছে। সচিব বলেন, আমাদের লবিংয়ের কারণেই তাপমাত্রা বৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেডের মধ্যে রাখা সম্ভব হয়েছে। এখানে বাংলাদেশের অবদান রয়েছে। অভিযোজনের লক্ষ্যমাত্রা এখনো ঠিক হয়নি, এটি নিয়ে দর কষাকষি চলছে। প্রথম ৪০টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশ জাতীয় অভিযোজন পরিকল্পনা গ্রহণ করতে পেরেছে। সেটা আমরা নিয়েও গিয়েছি। একটি বৈশ্বিক অভিযোজন পরিকল্পনা করার ক্ষেত্রেও বাংলাদেশ লবিং করেছে। সেটিও গৃহীত হয়েছে।
সচিব বলেন, আগামী দু-বছর কারিগরি পর্যায়ের চারটি সংলাপ হবে। মিনিস্ট্রিয়াল পর্যায়ে একটি একটি সংলাপ হবে, এর মাধ্যমেই এটি চূড়ান্ত রূপ নেবে। এই যে ফ্রেমওয়ার্ক তৈরি হবে সেখানেও বাংলাদেশ অবদান রাখবে। আমরা সেখানে আমাদের দর্শন ও দৃষ্টিভঙ্গি সেখানে প্রতিফলন ঘটাতে সক্ষম হয়েছি। সুনির্দিষ্টভাবে বললে অভিযোজন তহবিলে ২৩০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার অঙ্গীকার এসেছে। সেখান থেকে বাংলাদেশে সুনির্দিষ্টভাবে ৯ দশমিক ৯ মিলিয়ন ডলার পাবে। পাশাপাশি এই সম্মেলনে আমরা অত্যন্ত সফলভাবে দ্বিপাক্ষিক ও বহুপাক্ষিক মিটিং করতে সক্ষম হয়েছি। নেগোসিয়েশন মিটিং করেছি। সেটা আমাদের অভিযোজন তহবিলে অর্থায়নের জন্য প্রাথমিক পটভূমি তৈরি করেছে বলে আমরা মনে করছি। পরিবেশ সচিব বলেন, এছাড়া আমরা ২০ মিলিয়ন ডলারের অঙ্গিকার সেখান থেকে নিয়ে এসেছি। যাদের সঙ্গে আলোচনা শুরু হয়েছে, আশা করি আমরা এখানে আরও অনেক অর্জন করতে পারবো।