ফিলিস্তিনি কর্মকর্তারা বলছেন, ২০২২ সালের শুরু থেকে দখলকৃত পশ্চিম তীরে অভিযান জোরদার করে ইসরায়েল। গতকাল সকালে জেনিনের একটি শরণার্থী শিবিরে অভিযান চালায় দেশটির সেনা সদস্যরা। এ ঘটনায় এক বৃদ্ধ নারীসহ ১০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।
ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে ১০টার দিয়ে ইসরায়েলি সেনারা গুলি চালায়। আহতদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। অভিযান পরবর্তী পরিস্থিতি খুবই কঠিন। আমরা আহতদের চিকিৎসা দিয়ে যাচ্ছি; কিন্তু ইসরায়েলি বাহিনী অ্যাম্বুলেন্স ও চিকিৎসকদের কাজে বাধা দিচ্ছে।
জেনিন পাবলিক হাসপাতালের প্রধান উইসাম বেকার বলেন, ইসরায়েলি বাহিনী এখানে যে আগ্রাসন চালিয়েছে, তা নজিরবিহীন। হতাহতের সংখ্যাও অনেক বেশি। আমাদের একজন অ্যাম্বুলেন্স চালক মাটিতে পড়ে থাকা এক নিহতের কাছে যাওয়ার চেষ্টা করেছিলেন; কিন্তু ইসরায়েলি বাহিনী সরাসরি অ্যাম্বুলেন্স লক্ষ্য করে গুলি চালায়। তারা চালককে নিহতের কাছে যেতে বাধা দেয়। এ ছাড়া ইসরায়েলি বাহিনী হাসপাতালের দিকে টিয়ার গ্যাস ছোড়ে। গ্যাসভর্তি ক্যানিস্টারটি শিশু বিভাগের ভেতর পড়ে। এতে কয়েকজন শিশু অসুস্থ হয়ে পড়ে। তাদের শ্বাসকষ্ট দেখা দিয়েছে। তবে হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে সুস্পষ্ট করে কিছু না বললেও অভিযানের কথা নিশ্চিত করেছে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী।
প্রত্যক্ষ্যদর্শীরা জানান, গতকাল সকালে কয়েক ডজন সাঁজোয়া যান ও স্নাইপার নিয়ে জেনিনের শরণার্থী শিবিরে অভিযান চালায় ইসরায়েলি বাহিনী। এ সময় তাদের একটি ‘গোপন বাহিনী’ ওই শিবিরে ঢুকে পড়ে। মুহূর্তেই ফিলিস্তিনিদের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ শুরু হয়।
ফিলিস্তিনের রাজনৈতিক বিশ্লেষক আলিফ সাব্বাগ বলেন, জেনিনে ইসরায়েলের এই অভিযানকে একটি সংকেত হিসেবে দেখা উচিত। ইসরায়েল শিগগির এখানে বড় ধরনের অভিযান চালাবে। বৃহস্পতিবার অভিযান ছিল এর ভূমিকা মাত্র। ইসরায়েল যা করছে, তা নিয়ে আরব বা আন্তর্জাতিক মহল চুপ রয়েছে। তাদের এ নীরবতা ইসরায়েলকে অভিযান ও হত্যাযজ্ঞ চালিয়ে যেতে পরোক্ষভাবে উৎসাহিত করছে। অভিযানে অ্যাম্বুলেন্স ও হাসপাতালগুলো লক্ষ্যবস্তু করা, আহতদের সাহায্যে বাধা দেওয়া, মাঠের হত্যাকাণ্ড এবং এর আগে শিরীন আবু আকলেহকে হত্যাÑ কোনো ঘটনারই জবাবদিহিতা নেই।
প্রসঙ্গত, চলতি বছরের শুরু থেকে এ পর্যন্ত অধিকৃত পশ্চিম তীর ও পূর্ব জেরুজালেমে ইসরায়েলি বাহিনীর অভিযানে পাঁচ শিশুসহ ২৯ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। ২০২২ সালে এ ধরনের অভিযানে ১৭০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হন।