শুক্রবার, ২০ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৮:২৫ পূর্বাহ্ন
আমার সুরমা ডটকম : দিরাই উপজেলার ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দিরাই উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্রদের (শিক্ষাকাল ১৯৯৩-৯৮) পুণর্মিলনী অনুষ্ঠিত হয়েছে। ১৮ বছর পর ২৯ মে ২০১৬ খ্রিষ্টাব্দ রোববার “বন্ধু পুণর্মিলনী” আয়োজন করেন বহুমাত্রিক লেখক ও দিরাই উচ্চ বিদ্যালেয়ের প্রাক্তন ছাত্র ফারুকুর রহমান চৌধুরী মাজু। সার্বিক সহযোগীতায় ছিলেন প্রাক্তন ছাত্র জুনাইদ হোসেন, হেলাল তালুকদার, কাউসার আহমদ রিপন, মিজানুর রহমান মিজান এবং সেলিম মিয়া। দিরাই উপজেলা শিল্পকলা একাডেমীতে অনুষ্ঠিত “বন্ধু পুণর্মিলনী” অনুষ্ঠানে ছিল অংশগ্রহণ কারীদের রেজিষ্ট্রেশন, আনুষ্ঠানিক পরিচিতি, কেক কাটা, মুক্ত আলোচনা, স্মৃতিচারণ, আপ্যায়ন, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, নৃত্য পরিবেশন, কৌতুক ও উপস্থিত অভিনয়। সর্বোপরি দলিয় সঙ্গীত “আগে কী সুন্দর দিন কাটাইতাম”। “বন্ধু পুণর্মিলনী” অনুষ্ঠানটি শুভ উদ্বোধন করেন দিরাইয়ের ইউএনও মোহাম্মদ আলতাফ হোসেন সাহেবের পিতা “জামালপুর জেলার নেকজাহান উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক” আবুল খায়ের মোহাম্মদ জাহিদুল হক। উদ্বোধনী বক্তব্যকালে জাহিদুল হক বলেন, আজ “বন্ধু পুণর্মিলনী” অনুষ্ঠানে এসে আমার মনে হচ্ছে আমি যেন একটি সুরভিত ফুল বাগানে বসে আছি । এই ফুল বাগানের প্রতিটি গাছের ডালপালা তরুলতায় এমন কিছু ফুল ফুটেছে যে ফুলের মধু আহরণে এসে ভ্রমর স্বেচ্ছায় মালীর হতে চাইবে। আমি মহান আল্লাহর কাছে দোয়া করি, প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে যেন এমন মধু ভরা ফুল বাগান তৈরী হয়। যেখান ফুল বাগান থেকে আমাদের সমাজ, জাতি তথা দেশ ভালো কিছু উপহার পাবে। আমি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি দিরাই উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক মন্ডলীকে। তাঁদের শ্রম স্বার্থক। আমি শিক্ষক মন্ডলীসহ অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারী সকলের মঙ্গল কামনা করছি। দীর্ঘ ১৮ বছর পর “বন্ধু পুণর্মিলনী” অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারী প্রাক্তন ছাত্ররা আবেগে আপ্লুত হয়ে তাঁদের স্কুল জীবনের স্মৃতিচারণ করেন একং দীর্ঘ আটার বছর পর বন্ধুদের একত্রিত করার উদ্যোগ নেয়ায় আয়োজকসহ সার্বিক সহযোগীতা প্রদানকারীদের অভিনন্দন ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। “বন্ধু পুণর্মিলনী” অনুষ্ঠানে যারা সময় স্বল্পতা ও ব্যস্ততার কারণে অংশগ্রহণ করতে পারেন নি, তাদের অনেকেই অনুষ্ঠান চলাকালীন সময় দেশ এবং দেশের বাইরে থেকে টেলিফোনিক শুভেচ্ছা বিনীময় করেন। মুক্ত আলোচনা চলাকালীন সময় বক্তারা বলেন, চোখের পলকে আটার বছর চলে গেছে, আমার এরমধ্যে একত্রি হওয়ার সুযোগ পাইনি । আজ একত্রিত হতে পেরে মনে হচ্ছে আমরা যেন ফিরে পেয়েছি আমাদের টিনেজার বয়স। আজ যে আত্মতৃপ্তি আমাদের মনে এসেছে তা প্রকাশ করার ভাষা আমরা হারিয়ে ফেলেছি। আজ এই আনন্দঘন মুহুর্তে পুরনো অনেক বন্ধুদের একসাথে পেয়ে আমরা আবেগে আপ্লুত। তাই চোখের কোনে আনন্দের অশ্রু টলমল করছে। আজ যে সুখ আমাদের মনে বিরাজ করছে তা পৃথিবীর সমস্থ সম্পদ অর্জনের মাধ্যমে পাওয়া সম্ভব নয়। এভাকে আমরা যেন প্রতি বছর নির্ধারিত একটি দিনে একত্রিত হতে পারি সেই প্রচেষ্টা সকলে থাকুক এই কামনা করি। মুক্ত আলোচনা শেষে অংশগ্রহণকারীগণ আবেগাপ্লুত হয়ে একে অন্যকে বুকে জড়িয়ে ধরেন। “বন্ধু পুণর্মিলনী” অনুষ্ঠানের আয়োজক ফারুকুর রহমান চৌধুরী তাঁর বক্তব্যে বলেন, দীর্ঘ আটার বছর অনেক বন্ধুর সাথে দেখা না হওয়া এবং যোগাযোগ না থাকায় আমরা অনেকের চেহারা ভুলে গেছি। তাই সবার সাথে নতুন করে পরিচিত হওয়া এবং পারস্পরিক সম্পর্ক বৃদ্ধির জন্য আমার এই ক্ষুদ্র আয়োজন। একেবারেই সংক্ষিপ্ত সময়ে আয়োজন করেছি বিধায় অনেকের সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি, এজন্য দুঃখ প্রকাশ করছি। যাদের সাথে যোগাযোগ করেছি তাদের অনেকেই সময় স্বল্পতা কিংবা কাজে ব্যস্ততার কারণে ইচ্ছে থাকলেও হতে পারেন নি। তাই আগামীতে আরো ব্যাপক এবং ধারাবাহিকভাবে আয়োজনের লক্ষ্যে দেশ এবং দেশের বাইরে অবস্থানরত বন্ধুদের সাথে যোগাযোগ করে শীঘ্রই একটি কমিটি গঠন করা হবে। জুনাইদ হোসেন তার বক্তব্যে বলেন, আমরা এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে একটি সেতুবন্ধন তৈরী করতে যাচ্ছি। যার মাধ্যমে সকল বন্ধুদের সাথে আমৃত্যু যোগাযোগের একটি পথ তৈরী হবে। “বন্ধু পুণর্মিলনী” অনুষ্ঠানে আমেরিকা গমন কেন্দ্র করে কাউসার আহমদ রিপনকের বিদায়ী সম্মানানা ক্রেস্ট প্রদান করা হয়।