শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৮:২৮ পূর্বাহ্ন
আমার সুরমা ডটকম: সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলায় ওয়াজ মাহফিলকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের ঘটনা নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন জামেয়া ইসলামিয়া মাদরাসাতুল উলুম দারুল হাদীস হরিপুর বাজার মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ। মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৭টায় সিলেট হযরত শাহজালাল (র.) মাদ্রাসায় এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন হরিপুর বাজার মাদ্রাসার শিক্ষা সচিব নজরুল ইসলাম। তিনি বলেন- সোমবার রাতে জৈন্তাপুর উপজেলার ১নং লক্ষীপুর আমবাড়ি গ্রামের জামে মসজিদে গ্রামবাসীর উদ্যোগে এক মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করা হয়। এতে জামেয়া ইসলামিয়া মাদরাসাতুল উলুম দারুল হাদীস হরিপুর বাজার মাদ্রাসার সিনিয়র মুহাদ্দিস মাওলানা আব্দুস সালামকে দাওয়াত দেন ওয়াজ মাহফিলের প্রধান আয়োজক আবুল বাশার মোল্লা। দাওয়াত পেয়ে মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে তিনি আমবাড়ি মাদ্রাসার ওয়াজ মাহফিলস্থলে উপস্থিত হন। এসময় মঞ্চে বক্তব্য রাখছিলেন মাওলানা গাজী সোলায়মান হোসাইন।
তিনি দাবী করেন-বক্তব্যকালে মাওলানা গাজী সোলায়মান হোসাইন কোরআন বিরোধী উক্তি করেন। এ সময় মাওলানা আব্দুস সালাম কোরআন বিরোধী মর্মে এই বক্তব্যের আপত্তি জানালে লাঠি, সোটা নিয়ে তার উপর হামলা চালায় সন্ত্রাসীরা। এ সময় হরিপুর বাজার মাদ্রাসার কয়েকজন ছাত্রসহ কিছু লোক মাওলানা আব্দুস সালামকে রক্ষা করতে এগিয়ে এলে সন্ত্রাসীরা পূর্বপরিকল্পিতভাবে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে তাদের উপর হামলা চালায়। এ সময় ঘটনাস্থলেই মৌলভি মুজম্মিল আলী মারা যান। মাওলানা আব্দুস সালাম এর অবস্থাও আশংকাজনক। এছাড়া তাদের হামলায় হরিপুর বাজার মাদ্রাসার ১৩ জন ছাত্র এবং ৩জন সাধারণ মুসলমান আহত হয়ে বর্তমানে চিকিৎসাধীন আছেন এবং অপর গুরুতর আহত মৌলভি আবদুল কাদেরের এখনো জ্ঞান ফেরেনি।
তিনি আরো দাবী করেন-তাদের উপর হামলায় এক ছাত্রের মৃত্যু এবং বেশকজন আহত হওয়ার বিষয়টি ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার জন্য ওয়াজ মাহফিলের আয়োজকরা এবং স্থানীয় সন্ত্রাসীরা বিভিন্ন বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে এবং মাহফিলের প্যান্ডেল পুড়িয়ে দেয়। এমনকি, হামলার মাওলানা আব্দুস সালামের উপর হামলা পর আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে স্থানীয় মাওলানা নাসির উদ্দিন তার বাড়িতে নিয়ে গেলে সেখানেও হামলা চালায় এবং অগ্নিসংযোগ করে সন্ত্রাসীরা। এতে তার বাড়ি পুরে ছাই হয়ে যায়। এছাড়া এ ঘটনায় নিহত হওয়া হরিপুর বাজার মাদ্রাসার ছাত্র মৌলভি মুজম্মিল আলীর উপর হামলাকারীদের দৃষ্টান্তমুলক মাস্তি দাবী করা হয় সংবাদ সম্মেলনে।
সংবাদ সম্মেলনে ঘটনার মামলার প্রস্তুতির ব্যাপারে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বক্তারা বলেন-ওয়াজ মাহফিলে ৮-১০ হাজার মানুষ ছিল। সেখানে হামলাকারীদের শনাক্ত করা কষ্ট হচ্ছে। প্রকৃতপক্ষে যে বা যারা হামলা চালিয়েছে তাদের শনাক্ত করতে কিছুটা বিলম্ব হচ্ছে। জড়িতদের শনাক্ত করে মামলার প্রস্তুতি চলছে বলেও জানান তারা। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন এবং বক্তব্য রাখেন সিলেটের বিভিন্ন মাদ্রাসার শিক্ষক-কর্মকর্তাবৃন্দ।