সোমবার, ২৭ জানুয়ারী ২০২৫, ০৯:৪৬ পূর্বাহ্ন
আমার সুরমা ডটকম:
বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত ঘূর্ণিঝড় ‘তিতলি’ প্রবল সামুদ্রিক ঝড়ে পরিণত হয়েছে। সমুদ্র বন্দরসমূহকে ৪ নম্বর সঙ্কেত দেখাতে বলা হয়েছে। তবে ঘূর্ণিঝড়ের শক্তি ও মতিগতি বুঝে সঙ্কেত বেড়ে যেতে পারে। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে চট্টগ্রামসহ উপকূলীয় অঞ্চলে আকাশ মেঘাচ্ছন্ন রয়েছে। থেমে থেমে বৃষ্টিপাত হচ্ছে। দমকা থেকে ঝড়ো হাওয়ার সাথে বর্ষণের কারণে চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরে খোলা সাধারণ মালামাল (বাল্ক কার্গো) খালাস বন্ধ রয়েছে। ব্যাহত হচ্ছে বন্দরের স্বাভাবিক কাজকর্ম। থমকে গেছে ব্যবসা-বাণিজ্য।
আজ বুধবার দুপুর নাগাদ ঘূর্ণিঝড় তিতলির সর্বশেষ অবস্থান ছিল চট্টগ্রাম বন্দরের ৯৪৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, মংলা বন্দর থেকে ৮১৫ কিলোমিটার দক্ষিণ, দক্ষিণ-পশ্চিমে। ঘূর্ণিঝড়ের ৬৪ কিমি কেন্দ্রস্থলে বাতাসের গতিবেগ দমকা ও ঝড়ো হাওয়ার আকারে ঘণ্টায় ৯০ থেকে ১১০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে।
আবহাওয়ার বিশেষ বুলেটিনে জানা গেছে, পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগর এবং সংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত ঘূর্ণিঝড় তিতলি উত্তর, উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর ও ঘনীভূত হয়ে আজ সকালে প্রবল ঘূর্ণিঝড়ের আকারে একই এলাকায় অবস্থান করছে। এটি আরও ঘনীভূত হয়ে উত্তর, উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হতে পারে। তিতলির কাছে সাগর বিক্ষুব্ধ রয়েছে। চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরকে ৪ নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারী সঙ্কেত দেখাতে বলা হয়েছে। উত্তর বঙ্গোপসাগর এবং গভীর সমুদ্রে অবস্থারত সকল মাছ ধরার ট্রলার নৌযানকে নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।
গোপালগঞ্জ-ফরিদপুরে আঘাত হানতে পারে
বাংলাদেশ ও ভারতের আবহাওয়া বিভাগ এবং আন্তর্জাতিক আবহাওয়া নেটওয়ার্ক সূত্রে জানা গেছে, ঘূর্ণিঝড় তিতলির গতিমুখ এখন পর্যন্ত দক্ষিণ-পূর্ব ভারতের দিকেই রয়েছে। তবে যে কোনো সময়েই যদি গতিপথ পরিবর্তন হয় তাহলে ঘূর্ণিঝড়টি ভারতের পাশাপাশি বৃহত্তর খুলনা উপকূলের দিকে ধেয়ে আসতে পারে। তখন আঘাত হানতে পারে গোপালগঞ্জ-ফরিদপুর অঞ্চলে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা জানান, তিতলি বিরাট আকারের ঘূর্ণিঝড়। আবহাওয়া অধিদপ্তর ঘূর্ণিঝড়ের অবস্থা সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণ করছে। ঘূর্ণিঝড় তিতলি ভারতের পাশাপাশি বাংলাদেশেও আঘাত হানার আশঙ্কা রয়েছে। ১১ অক্টোবর বৃহস্পতিবার অথবা ১২ অক্টোবর শুক্রবার ভোরে ঘূর্ণিঝড়টি ভারত হয়ে বাংলাদেশ উপকূল অতিক্রম করতে পারে। ভারতের উড়িষ্যা-অন্ধ্রপ্রদেশ-পশ্চিমবঙ্গ হয়ে বাংলাদেশের খুলনা, সুন্দরবনের ওপর দিয়ে এসে গোপালগঞ্জ, ফরিদপুর অঞ্চলের ওপর দিয়েও আঘাত হানতে পারে ঘূর্ণিঝড় তিতলি। তবে সেই সময় ঘূর্ণিঝড়ের শক্তি হ্রাস পেয়ে সেটি দুর্বল হয়ে পড়ারও সম্ভাবনা রয়েছে। জনগণের জানমালের ক্ষয়ক্ষতি যাতে না হয় এরজন্য আজ ৪ নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারী সঙ্কেত দেখানো হচ্ছে। আজ দিনভর পর্যবেক্ষণ করে বোঝা যাবে ঘূর্ণিঝড়ের মতিগতি। তখন সতর্ক সঙ্কেত বাড়াতে হলে বেড়ে যাবে।
ইতোমধ্যে ভারতের অন্ধ্র, উড়িষ্যাসহ বিভিন্ন অঞ্চলে রেড অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে। সেখানে অতিবৃষ্টিতে বন্যারও আশঙ্কা রয়েছে। বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। তিতলি আগামীকাল বৃহস্পতিবার উপকূল অতিক্রম করতে পারে। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে বাংলাদেশের বিরাট অংশে এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে আকাশজুড়ে ঘনঘোর মেঘমালা সৃষ্টি হয়েছে। তিতলি আবহাওয়ায় পরিবর্তন আনতে পারে।