মঙ্গলবার, ১৮ মার্চ ২০২৫, ১১:৩১ অপরাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার সুনামগঞ্জ:
সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার সুরমা ইউনিয়নের বাঘমারা মেজর ইকবাল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নামে রেজিষ্ট্রিকৃত ৩৪ শতাংশ ভূমি উদ্ধারের জন্য জেলা প্রশাসক বরাবরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন বাঘমারা গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা মো ওমর আলী। গতকাল মঙ্গলবার সকালে অবৈধ দখলদার মৃত আব্দুল আজিজের ছেলে ভূমি খেকো মো: আক্তারুজ্জামান মাষ্টারের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ দায়ের করা হয়।
অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, সদর উপজেলার ঘাসীগাঁও মৌজার ৫২নং জেএলস্থিত, ৪১৩নং খতিয়ানের ভূমি। বিদ্যালয়ে প্রায় ৫ শতাদিক কোমল মতি শিক্ষার্থী পড়াশোনা করেন। দু:খজনক হলেও সত্য যে, স্কুলের জায়গা একটি প্রভাবশালী ভূমি খেকো সিন্ডিকেট চক্রের জবর দখলে থাকার কারণে শিক্ষার্থীদের খেলাধুলা করার মত কোন জায়গা নেই। ১নং পুরাতন স্কুল ভবনটি প্রতিষ্ঠাকালে তৎকালীন স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আমেনা খাতুন ও তার স্বামী বিদ্যালয়ের শিক্ষক আক্তারুজ্জামান ৩৫১৭, ৩৬১২, ৩৬১৩নং দাগে ৩০ শতাংশ ও ৩৬১৪নং ৪ শতাংশ মোট ৩৪ শতাংশ ভূমি বিদ্যালয়ের নামে তৎকালীন জেলা প্রশাসক বরাবরে রেজিষ্ট্রারি করে দেন।
এদিকে প্রায় ১০ বছর পূর্বে উল্লেখিত কোন কোন দাগের ভূমি আক্তারুজ্জামান তার দ্বিতীয় স্ত্রী মরিয়ম বিবির নামে ১৯৮১ সনে ৬০২০নং দলিল মূলে ৬০ শতাংশ এবং একই সনে ৬১৩৭ নং দলিল মূলে ৪৫ শতাংশ ভূমি বিবাহের মহরানা বাবত দান করেন। পরবর্তীতে প্রতারণা ও জাল জালিয়াতির মাধ্যমে ঐ ভূমি বিদ্যালয়ের নামে হস্তান্তর করেন। ১নং স্কুল ভবনটি নিমার্ণ হওয়ার কথা ছিল আক্তারুজ্জামানের রের্কডীয় ভূমিতে কিন্তু তাদের চালাকির কারণে নির্মাণ হয় ৩৬১৫ নং দাগে মো: মনিরুজ্জামানের মালিকানাধীন ভূমিতে। এছাড়াও ১নং পুরাতন ভবনের পেছনে শিক্ষার্থীদের জন্য টয়লেট ও টিউবওয়েল স্থাপন করলেও আক্তারুজ্জামানের ছেলে মো: রফিকুজ্জামান (রুহেল) শিক্ষার্থীদের এগুলো ব্যবহার করতে দিচ্ছেন না। তালাবদ্ধ করে রেখে তারা নিজেরা ইচ্ছে মত ব্যবহার করছেন।
স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি, প্রধান শিক্ষক ও স্থানীয় এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গরা বহুবার আক্তারুজ্জামান তার স্ত্রী আমেনা খাতুনকে বিদ্যালয়ের ৩৪ শতাংশ জায়গা বুঝিয়ে দেওয়ার জন্য চাপ দিলে তাদের হুমকির মুখে পড়তে হয়। সমাজ সেবক মো: মনিরুজ্জামান এলাকার কোমল মতি শিক্ষার্থীদের শিক্ষা বিস্তারের কথা বিবেচনা করে স্কুলে তার নামীয় ৪ শতাংশ জায়গা স্কুলের নামে দিয়ে দেন। কিন্তু বিদ্যালয়টি ১৯৮৬ সালে স্থাপিত হলেও অদ্যবদি স্কুলের ৩৪ শতাংশ ভূমি তাদের দখলে রয়েছে। এই ভূমি উদ্ধার হলে শিক্ষার্থীদের খেলাধুলার পর্যাপ্ত জায়গা হবে। রফিকুজ্জামান রুহেল এর বিরুদ্ধে সুনামগঞ্জ সদর থানা ও বিঞ্জ আদালতে হাফ ডর্জন মামলা রয়েছে। যার মামলা নং-২৬, তারিখ: ২০-০২-১৯, ৭/৩১১ তারিখ: ৯-১২-১৬, ২৬/৫৭ তারিখ: ২০-০২১৭ ইং।
এ ব্যাপারে ২নং স্কুল ভবনের দাতা মো: মনিরুজ্জামান জানান, আমার আপন বড় ভাই মো: আক্তারুজ্জামান মাষ্টার উনার মালিকানাধীন চারটি দাগে মোট ৩৪ শতাংশ জায়গা স্কুলের নামে দিয়ে পূনরায় আবার উনার দ্বিতীয় স্ত্রীর মহরানা বাবত ঐ জায়গা টুকু দিয়ে দেন।
এ ব্যাপারে অসুস্থ্য মো: আক্তারুজ্জামানের ছেলে মো: রফিকুজ্জামান রুহেল জানান, স্কুলের কোন জায়গা আমার জানা মতে আমাদের দখলে নাই। স্কুল স্কুলের জায়গায় আছে আমি আমার বাবার জায়গায় আছি। জায়গা পরিমাপ করলে যদি আমাদের কাছে পায় আমরা দিয়ে দেব।
এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক মো: আব্দুল আহাদ মহোদয় মুঠোফোনে একাধিক বার ফোন দিলেও তিনি রিসিভ করেন নি।