বুধবার, ২০ নভেম্বর ২০২৪, ০৭:১৯ অপরাহ্ন
আমার সুরমা ডটকম:
সুনামগঞ্জের দিরাইয়ে ওরসকে কেন্দ্র করে এলাকার তৌহিদী জনতা ও আয়োজন কমিটি মুখোমুখি অবস্থানে রয়েছে। এ নিয়ে যে কোন সময় ঘটে যেতে পারে অনাকাঙ্খিত ঘটনা। ওরস বন্ধ করতে এলাকার তৌহিদী জনতার পক্ষে মাওলানা জাকির হুসাইন, মাওলানা মুহিবুর রহমান, মাওলানা শামীম আহমদ, মাওলানা জাবির হোসাইন চৌধুরী ও মাওলানা সুহাইল আহমদ স্বাক্ষরিত দরখাস্ত সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার বরাবরে ৮ মার্চ এবং দিরাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বরাবরে গতকাল (রোববার) দেয়া হলে তিনি দিরাই থানা পুলিশকে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেন। যার স্মারক নং-০৫.৪৬.৯০২৯.০০০.৩০.০৬৬.১৯.৩৪৫, তারিখঃ ১৫ মার্চ ২০২০।
জানা যায়, প্রতিবছর ভাটিপাড়া গ্রামের কতিপয় ব্যক্তি কমলশাহ নামক একজনের নামে ওরসের আয়োজন করে থাকে। অথচ ভাটিপাড়া গ্রামে কোন মাজার নেই, তারপরও কতিপয় লোক কমল শাহ নামে এক ব্যক্তির নামে ওরসের আয়োজন করে রাতভর মদ, গাঁজা ও যুবক-যুবতীদের অশ্লীল নাচ-গানের আসর বসায়। এতে যুবক ছেলেদের মাদকাসক্ত ও চরিত্র হননের পাশাপাশি মুসুল্লিদের ঈমান আক্বিদায় আঘাত আসে। ২০১৮ সালেও ওরস আয়োজনকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা দেখা দিলে প্রশাসন ১৪৪ ধারা জারি করে। এ বছরও ইউপি সদস্য রুহেল মিয়া, ভাটিপাড়া গ্রামের মৃত আব্দুল মুতাহিরের ছেলে সুহেদ মিয়া, নোমানসহ স্থানীয় কিছু লোক ওরস আয়োজন করে প্যান্ডেল ও মঞ্চ নির্মাণ কাজ শুরু করলে আলেম-উলামা ও স্থানীয় লোকজন প্রতিবাদে সোচ্চার হয়ে উঠেন।
আর তাকে কেন্দ্র করেই গতকাল (১৫ মার্চ রোববার) একই স্থানে ইসলাম বিরোধী কার্যকলাপ প্রতিরোধ কমিটির ব্যানারে তাফসির মাহফিলের আয়োজন করে। এনিয়ে দু’পক্ষের মাঝে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। যেকোনো সময় সংঘর্ষের আশংকা করছেন এলাকাবাসী।
সূত্র জানায়, ওরস বন্ধের দাবী জানিয়ে গত ১০ মার্চ ভাটিপাড়া খেলার মাঠে এলাকাবাসীর উদ্যোগে সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভা থেকে ওরস প্রতিহত করে সেখানে তাফসির মাহফিল করার ঘোষণা দেন এলাকাবসী। ১৩ মার্চ শুক্রবার সন্ধ্যায় দরগাহপুর মাদরাসার মুহতামিম, বিশিষ্ট ইসলামিক ব্যক্তিত্ব, শায়খুল হাদিস আল্লামা নুরুল ইসলাম খানের নেতৃত্বে একদল ধর্মপ্রাণ মুসলমান ভাটিপাড়া বাজারে গিয়ে সেখানকার ইউপি সদস্য রুহেল মিয়াসহ আয়োজকদের ওরস না করার আহবান জানান। উদ্ভুত পরিস্থিতিতে সংঘর্ষ এড়াতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন এলাকাবাসী।
ইউপি সদস্য রুহেল মিয়া বলেন, কমল শাহ পীর ছিলেন, তিনি ভাটিপাড়াগ্রামে অনেকদিন বসবাস করেছেন, এখানে উনার মাজার না থাকলেও ভক্তবৃন্দ রয়েছেন। তারা ওরসের আয়োজন করেছে। মুর্শিদি গান হয়, কিছু বিনোদনেরও দরকার আছে।
দিরাই থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কেএম নজরুল জানান, ওরস বন্ধের জন্য এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে আবেদন করা হয়েছে, বিষয়টি আমরা গুরুত্বসহকারে দেখছি। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শফি উল্লাহ জানান, উত্তেজনা নিরসন এলাকার শান্তি শৃংখলা বজায় রাখার স্বার্থে সবকিছু বন্ধ রাখার জন্য ওসি সাহেবকে বলা হয়েছে।