রবিবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:১৮ অপরাহ্ন
আমার সুরমা ডটকম : আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের নামে গণমাধ্যমে আসা ই-মেইলটি আওয়ামী ওলামা লীগের একাংশের নেতারাই পাঠিয়েছিলেন বলে দাবি করেছেন সংগঠনটির আরেক অংশের নেতারা। সরকার সমর্থক সংগঠনটির বিবদমান দুই পক্ষের মধ্যে ইলিয়াস হোসাইন বিন হেলালী ও দেলোয়ার হোসেন নেতৃত্বাধীন অংশটি বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে এই দাবি করে। ওলামা লীগের অন্য অংশের নেতা আক্তার হোসেন ও আবুল হাসানসহ কয়েকজনকে রিমান্ডে নিলে ‘প্রকৃত সত্য’ বেরিয়ে আসবে বলেও সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়।
আওয়ামী লীগ সমর্থক ওলামা লীগের দুই অংশের মধ্যে বেশ কিছু দিন ধরে বিবাদ চলছে। কয়েক দিন আগে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে দুই পক্ষের মধ্যে মারামারিও বাঁধে। দুই পক্ষই নিজেদের ‘প্রকৃত আওয়ামী ওলামা লীগ’ বলে দাবি করে আসছেন। তবে এই সংগঠনটি আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন হিসেবে স্বীকৃত নয়।
বুধবারের সংবাদ সম্মেলনে একাংশের সভাপতি ইলিয়াস বিন হেলালী, সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেনের পাশাপাশি ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি ময়েজ উদ্দিন মিয়াও ছিলেন। সংবাদ সম্মেলনটি হয় বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে। হেলালী বলেন, “ওলামা লীগকে কলঙ্কিত করার জন্য একটি মহল ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে। সোমবার বিভিন্ন গণমাধ্যমে আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের নামে একটি ই-মেইল ঠিকানা থেকে যে বার্তা এসেছে, আমাদের ধারণা এই বার্তাটি ওলামা লীগের নামধারী সেই নেতারা পাঠিয়েছেন। এই নেতাদের রিমান্ডে নিলে প্রকৃত সত্য বেরিয়ে আসবে।” ‘জেহাদবিরোধী’ সংবাদ প্রকাশ থেকে বিরত থাকাসহ গণমাধ্যমকে ছয় দফা ‘নির্দেশনা’ দিয়ে নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের নামে সোমবার একটি ই-মেইল গণমাধ্যমে আসে। নারীদের ঘরের বাইরে চাকরি করা ইসলামী শরিয়াহ মতে ‘শাস্তিযোগ্য অপরাধ’ বলে দাবি করা হয় ওই বার্তায়। এতে বলা হয়, সংবাদমাধ্যমের নারী কর্মীদের চাকরি থেকে অব্যাহতি দিতে হবে। এর আগে ওলামা লীগের বিবদমান নেতারা পরস্পরকে হেফাজত ও জামায়াত ঘনিষ্ঠ বলে পাল্টাপাল্টি অভিযোগ করে আসছিলেন। এই চিত্র গত শনিবার প্রেস ক্লাবের সামনে দুই পক্ষের সংঘর্ষের এখন জঙ্গি সংশ্লিষ্টতার অভিযোগও বিরুদ্ধপক্ষের বিরুদ্ধে তুললেন হেলালী। “ওলামা লীগের নামে আক্তার হোসেন ও আবুল হাসান প্রেস ক্লাবের সামনে ১৩ দফা দাবি দিয়ে আনসারুল্লাহ বাংলাটিমকে শক্তিশালী করতে চায়। জামাত-হেফাজতের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে চায়।” “অতি দ্রুত তাদের গ্রেপ্তার করে রিমান্ডে নিলে কারা আনসারুল্লাহ বাংলাটিমের সদস্য, তা বেরিয়ে আসবে,” বলেন হেলালী। সংবাদ সম্মেলনের মধ্যেই তিনি আক্তার হোসেন ও আবুল হাসান অংশকে উদ্দেশ করে ‘আনসারুল্লাহর দালালেরা, হুঁশিয়ার সাবধান’, ‘জামাত- শিবিরের দালালেরা, হুঁশিয়ার সাবধান’, ‘হেফাজতের দালালেরা, হুঁশিয়ার সাবধান’ স্লোগান তোলেন। জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বিভিন্ন কর্মসূচিতে আক্তার হোসেন ও আবুল হাসান নেতৃত্বাধীন অংশ যে দাবিগুলো তুলে ধরেন, তার অধিকাংশই হেফাজতে ইসলামীর বিতর্কিত ১৩ দফার অনুরূপ। ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের নেতা ময়েজ উদ্দিন বলেন,“আমি দীর্ঘদিন ধরে ওলামা লীগের কার্যক্রম দেখে আসছি। আমাদের পার্টি থেকে হেলালী ও দেলোয়ার হোসেনদেরই ওলামা লীগের সংগঠন হিসাবে ধরা হয়। “আক্তার হোসেন ও আবুল হাসানরা মূলত বিএনপিতে ছিলেন, কবে এরা আওয়ামী লীগে আসলেন, তা জানি না। এরা তো বিএনপি থেকে পদত্যাগ করে আসেনি। তাই ওদের অংশকে আওয়ামী লীগের অংশ বলে আমি মনে করি না।”