মঙ্গলবার, ১২ নভেম্বর ২০২৪, ০১:০৭ পূর্বাহ্ন
আমার সুরমা ডটকম ডেক্স : ইতালির মধ্যাঞ্চলে ছয় দশমিক দুই মাত্রার একটি শক্তিশালী ভূমিকম্পে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২৪৭ হয়েছে বলে জানিয়েছে বিবিসি। বেশ কিছু ভবন ধসে পড়ে লোকজন চাপা পড়ে আছে এবং মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। দেশটির নাগরিক সুরক্ষা বিষয়ক একজন মুখপাত্র ইমাকোলাতা পসটিগ্লিওন জানান, পার্বত্য এলাকার গ্রাম ও শহরগুলোতে এ ভূমিকম্প হওয়ায় উদ্ধারকাজ করা খুব কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। সাংবাদিকদের তিনি বলেন, অ্যাকুমোলি এবং অ্যামাত্রিসি শহর জুড়ে নিহত হয়েছে ২৭ জন। আর কাছাকাছি আরকুয়াটা এলাকায় নিহত হয়েছে আরও ১০ জন। নিহত বাকিদের সম্পর্কে কোনো তথ্য দেননি তিনি। যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা (ইউএসজিএস) জানায়, বুধবার ভোররাত ৩টা ৩৬ মিনিটে উমব্রিয়া অঞ্চলের পেরুজিয়া প্রদেশের নরচা টাউনের কাছে ভূমিকম্পটির উৎপত্তি।
ইতালির ভূমিকম্প ইনিস্টিটিউট (আইএনজিভি) জানিয়েছে, ভূমিকম্পের প্রাথমিক ধাক্কার পর পরবর্তী চার ঘন্টায় ৬০টি পরাঘাত হয়েছে, এর মধ্যে একটি পাঁচ দশমিক পাচ মাত্রার ছিল। আইএনজিভি ভূমিকম্পটির মাত্রা ছয় বলে জানিয়েছে। ভূমিকম্পে দেশটির মধ্যাঞ্চলের পার্বত্য এলাকাগুলোর শহর ও গ্রামগুলোর ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হলেও ঘনবসতিপূর্ণ এলাকাগুলোর তেমন ক্ষতি হয়নি বলে ধারণা করা হচ্ছে। সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলো অ্যাকুমোলি, আমাত্রিসি, পোস্তা এবং আরকুয়াটা দেল টরোনটো। অ্যাকুমোলির মেয়র স্তেফানো পেত্রুচ্চি বলেন, ‘দিনের আলোতে আমরা বুঝতে পারছি যা ভেবেছিলাম পরিস্থিতি তার চেয়ে ভয়ঙ্কর। ভবনগুলো ধসে পড়েছে, ধ্বংসস্তূপের নিচে লোকজন চাপা পড়েছে আর সেখানে জীবনের কোনো সাড়া নেই।’
এর আগে পেত্রুচ্চি রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারক আরএআইকে জানিয়েছিলেন, একটি বাড়ি ধসে এক পরিবারে চারজন চাপা পড়েছেন, তারা বেঁচে আছেন এমন কোনো ইঙ্গিত মিলেনি। অ্যামাত্রিসির মেয়র সেরগিও পিরোজ্জি বলেছেন, ‘শহরের ৭৫ ভাগ অংশ আর সেখানে নেই। এখন লক্ষ্য হল যত বেশি মানুষকে সম্ভব বাঁচিয়ে রাখা। ধ্বংসস্তূপের নিচে লোকজনের আওয়াজ পাওয়া যাচ্ছে, তাদের রক্ষা করতে হবে।’ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক সংবাদিক জানিয়েছেন, টাউনটির হাসপাতালেরও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, রোগীদের বের করে রাস্তায় এনে রাখা হয়েছে।
ভূমিকম্পে তিন অঞ্চল, উমব্রিয়া, ল্যাজিও ও মার্চে-র টাউনগুলোর ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। নরচার মেয়র নিকোলা আলেম্যানো জানিয়েছেন, এই টাউনের কারো নিহত হওয়ার খবর পাওয়া যায়নি। আরএআইকে তিনি বলেন, ‘টাউনের ভূমিকম্প-প্রতিরোধী কাঠামোগুলো অক্ষত আছে। তবে ঐতিহাসিক স্থাপনা ও ভবনগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে আমাদের এখানে কেউ গুরুতর আঘাত পায়নি।’
ভোররাতে প্রবল ঝাঁকুনিতে ভূমিকম্প উপকেন্দ্রের ১৭০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বে রাজধানী রোমের বাসিন্দাদের ঘুম ভেঙে যায়। উমব্রিয়ার সিসেল্লি এলাকার লিনা মেরক্যান্টিনি বলেন, ‘এটা অত্যন্ত শক্তিশালী ছিল। মনে হচ্ছিল বিছানাটা আমাদের নিয়ে রুমের মধ্যে হাঁটাহাঁটি করছে।’