বুধবার, ৩০ অক্টোবর ২০২৪, ০৩:২৯ অপরাহ্ন
আমার সুরমা ডটকম : স্বল্প মূল্যে এবং মানুষের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে ইন্টারনেট পৌঁছে দিতে সাত বছরে ব্যান্ডউইথের দাম কমানো হয়েছে ৯০ শতাংশ। গত এক বছরেই এর মূল্য কমেছে ৩০ শতাংশ। কোন কোন ক্ষেত্রে এই সময়ে মোবাইল ফোন ইন্টারনেটের মূল্য কমেছে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত। আগামীতে ব্যান্ডউইথের দাম আরও কমাতে পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানিয়েছে টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ সংস্থা (বিটিআরসি)। গত বৃহস্পতিবারই ব্যান্ডউইথের দাম সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে রাখতে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ সংস্থা সূত্রে জানা যায়, সরকারের ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নে এবং দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষের কাছে তথ্য প্রযুক্তির সেবা পৌঁছে দিতে উদ্যোগ গ্রহণ করেছে সরকার। এরই অংশ হিসেবে প্রতিবছরই কমানো হচ্ছে ব্যান্ডউইথের দাম। গত সাত বছরেই এই ব্যান্ডউইথের দাম কমেছে ৯০ শতাংশ পর্যন্ত। আর মোবাইল ইন্টারনেটের ক্ষেত্রে গত এক বছরে এটি কমেছে ৩০ শতাংশ থেকে কোন কোন ক্ষেত্রে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত। বিভিন্ন অপারেটরের ডাটা পর্যালোচনা করে দেখা যায়, গত এক বছরে রাষ্ট্রায়ত্ত মোবাইল অপারেটর টেলিটকের প্রতি জিবিপিএস ব্যান্ডউইথের গড় মূল্য ৫০ শতাংশ এবং বেসরকারি মোবাইল ফোন অপারেটর গ্রামীণফোন তাদের প্রতি জিবিপিএস মোবাইল ব্যান্ডউইথের গড় মূল্য ৫৬ শতাংশের অধিক কমিয়েছে। কমিশন সূত্রে আরও জানা যায়, দেশে ইন্টারনেট সেবা সুলভ ও সাশ্রয়ী করার জন্য ২০০৮ সাল থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত সাত দফায় প্রতি এমবিপিএস ব্যান্ডউইথের চার্জ কমানো হয়েছে। ২০০৮ সালের জুলাইয়ে ব্যান্ডউইথের মূল্য ছিল ২৭ হাজার টাকা, ২০০৯ সালের জুলাইয়ে তা কমে হয় ১৮ হাজার টাকা। ২০১১ সালের ফেব্রুয়ারিতে তা আরও কমিয়ে ১২ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয় এবং ওই সালের আগস্টে আরও এক দফা কমিয়ে ১০ হাজার টাকা করা হয়। এর পর ২০১২ সালের সেপ্টেম্বরে ব্যান্ডউইথের দাম নির্ধারণ করা হয় আট হাজার, ২০১৩ সালের এপ্রিলে চার হাজার ৮০০ ও সর্বশেষ ২০১৪ সালের এপ্রিলে দুই হাজার ৮০০ টাকায় কমিয়ে আনা হয়। এই মূল্য এখন পর্যন্ত কার্যকর রয়েছে। আগামীতে এই ব্যান্ডউইথের মূল্য আরও কমিয়ে আনার পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ সংস্থার সচিব মোঃ সরওয়ার আলম। তিনি বলেন, বর্তমান সরকার ঘোষিত ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নে ইন্টারনেটকে প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলের মানুষের কাছে পৌছে দেয়ার উদ্যোগ নিয়েছে কমিশন। এজন্য ইন্টারনেট স্বল্প মূল্যে গ্রাহক পর্যায় পর্যন্ত পৌঁছে দিতে চায়। পাশাপাশি গ্রাহকরা যেনো ইন্টারনেটের গুণগত মানের সেবা পায় সে বিষয়েও লক্ষ্য রাখছে। আগামী দিনে ব্যান্ডউইথের দাম আরও কমাতে কমিশনের পরিকল্পনা রয়েছে বলে তিনি জানান। যদিও গত বৃহস্পতিবার ডিজিটাল বাংলাদেশ টাস্ক ফোর্সের দ্বিতীয় বৈঠকে ইন্টারনেট ব্যান্ডউইথের দাম সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে রাখতে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা । বর্তমান প্রতিযোগিতামূলক বাজারে মোবাইল অপারেটররা বিভিন্ন সময়ে তাদের ব্যান্ডউইথের মূল্য প্রদত্ত মূল্যের চেয়েও বেশি কমিয়েছে। বর্তমানে দেশে ১২৫ টাকায় এক জিবিপিএস মোবাইল ব্যান্ডউইথের সেবা সুবিধা পাওয়া যায়। তবে বেসরকারি মোবাইল ফোন অপারেটর রবি আজিয়াটা লিমিটেড ও বাংলালিংক ৮৭ টাকায় এক জিবি ব্যান্ডউইথের অফার চালু করেছে। গ্রাহক সংখ্যায় দ্বিতীয় বৃহত্তম মোবাইল অপারেটর বাংলালিংক বিশেষ অফারে ৮৬ শতাংশ মূল্য ছাড় দিয়ে ৩৫ টাকায় পর্যন্ত এক ডিবি ডাটার অফার চালু করেছে। অন্যদিকে অপারেটররা বিটিআরসির নির্দেশনার পরিপ্রেক্ষিতে তাদের দেয়া ব্যান্ডউইথ ক্যারি ফরওয়ার্ড (আগের মাসের অব্যবহৃত ডাটা পরের মাসে একই প্যাকেজে যোগ করে যা ছয় মাস পর্যন্ত বহাল থাকে) সেই সেবা চালু করেছে।