রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:২৬ অপরাহ্ন
সিলেট প্রতিনিধি:
সুনামগঞ্জের তাহিরপুরে চার সন্তানের জনক কর্তৃক মাদরাসায় চতুর্থ শ্রেণিতে পড়–য়া ১১ বছরের শিশু কন্যা ধর্ষণের ১১ দিন পেরিয়ে গেলেও থানা পুলিশ ওই ঘটনায় মামলা নিচ্ছে না। এদিকে লোক লজ্জার ভয়ে ওই শিশু কন্যা ঘটনার পর থেকে মাদরাসায় আসা যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছেন।
মামলা না নিয়ে শিশু কন্যা ধর্ষণের মত ঘটনা টাকার বিনিময়ে সালিসে নিষ্পক্তির জন্য থানা পুলিশের তদন্তকারী অফিসার উল্টো ভিকটিমের পরিবারকে চাপ দিচ্ছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে।
এ ব্যাপারে ভিকটিমের মা থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করলেও ঘটনার ১১ দিন পেরিয়ে গেলেও অভিযোগটি রোববার দুপুর পর্য্যন্ত মামলা হিসাবে থানায় রেকর্ড করা হয়নি। এমনকি তদন্তকারী থানা পুলিশের এসআই ঘটনাস্থলে তদন্তই করতে যান নি।
লিখিত অভিযোগ ও ভিকটিমের পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, উপজেলার শ্রীপুর (উত্তর) ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী লাকমা পুর্বপাড়া গ্রামের মৃত হানিফার ছেলে চার সন্তানের জনক মতিউর রহমান (৩৪) একই পাড়ার স্থানীয় মহিলা মাদরাসায় চতুর্থ শ্রেণিতে পড়–য়া ১১ বছরের শিশু কন্যাকে গত ১০ অক্টোবর ট্যাকেরঘাট সীমান্তের মরাটিলায় লাকড়ি কুড়াতে গেলে হাত পা ও মুখ বেঁধে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে।
এদিকে ধর্ষণের ঘটনা চাপা দিতে শিশু কন্যাকে হত্যা ও লাশ গুমের পরিকল্পনার অংশ হিসাবে কাঁধে করে শিশু কন্যাকে ভারতের পাহাড়ের গহীনে নিয়ে যাবার পথে ওপারের ভারতীয়দের ধাওয়ার মুখে মতিউর ব্যর্থ হয়। পরবর্তীতে পরিবার ও স্থানীয় লোকজন সন্ধ্যায় টিলা থেকে ওই শিশু কন্যাকে উদ্ধার করে বাড়ি নিয়ে আসলে ধর্ষণ, হত্যা ও লাশ গুমের পরিকল্পনার বিষয়টি জানাজানি হয়।
ঘটনাটি রাতেই মোবাইল ফোনে ভিকটিমের মা তাহিরপুর থানার ওসিকে অবহিত করে পরদিন ১১ অক্টোবর এ ব্যাপারে থানায় গিয়ে লিখিত অভিযোগ করেন।
অভিযোগের তদন্তভার দেয়া হয় থানার সেকেন্ড অফিসার এসআই আমির উদ্দিনকে। এরপর রহস্যজনক কারনে ঘটনা তদন্তে রোববার দুপুর পর্যন্ত ওই অফিসার সরেজমিনে আসে নি। এমনকি অভিযোগটি মামলা হিসাবে রেকর্ডভুক্ত করেন নি।
ভিকটিমের মা রোববার দুপুরে জানান, অভিযুক্ত মতিউরের ভাই রফিকুল ও তার মা সাবেক ইউপি সদস্যা সখিনা বেগমের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে নানা অজুহাতে থানার তদন্তকারী অফিসার ঘটনা তদন্তে সরেজমিনেই আসেন নি, এমনকি অভিযোগটি মামলা হিসাবে রেকর্ডভুক্ত না করে উল্টো টাকা পয়সা নিয়ে সালিসে নিষ্পক্তির জন্য চাপ দিয়ে যাচ্ছেন। তিনি আরো বলেন, তদন্তকারী অফিসারের গাফিলতির কারণে ঘটনার আলামতই এখন নষ্ট হতে চলছে পরবর্তীতে এ দায় কে নেবে?
অভিযুক্ত সহোদর বড় ভাই রফিকুল ইসলামের নিকট এ বিষয়ে জানতে চাইলে রোববার তিনি বলেন, ঘটনা যা হবার তা তো হয়েই গেছে, আমার ভাই অপরাধ করেছে, এখন চেষ্টা করছি বিষয়টি সামাজিকভাবে সালিসে মীমাংসার জন্য।
তাহিরপুর থানার সেকেন্ড অফিসার এসআই আমির উদ্দিনের নিকট এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি রোববার বলেন, আমি সালিসের জন্য ভিকটিমের পরিবারকে কোন ধরণের চাপ দেইনি বরং অভিযুক্তকে গ্রেফতারের জন্য চেষ্টা করছি।