বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৫:২৮ পূর্বাহ্ন
আমার সুরমা ডটকম ডেস্ক:
রোহিঙ্গা মুসলিম জনগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে সহিংসতায় অভিযুক্ত সৈন্যদের মিয়ানমার বিচার করবে এবং সহিংসতা বন্ধে অবিলম্বে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে-এটা বিশ্বাস করা যায় না।
রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর গণহত্যার অভিযোগে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে নেদারল্যান্ডসের হেগে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) দায়ের করা মামলার তৃতীয় দিনের শুনানিতে বৃহস্পতিবার গাম্বিয়ার আইনজীবী পাল রাখলার এ কথা বলেন। খবর রয়টার্সের
১৯৪৮ সালের গণহত্যা সনদের অধীনে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে পশ্চিম আফ্রিকার দেশ গাম্বিয়ার করা মামলার তৃতীয় ও শেষ দিনের শুনানিতেও বাদী পক্ষের আইনজীবীরা মামলাটির শুনানি সম্পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত মিয়ানমারের সেনাবাহিনীকে সহিংস কর্মকাণ্ড থেকে বিরত রাখার জন্য ‘অন্তর্বর্তীকালীন পদক্ষেপে’র দাবি জানান।
পল রাখলার বলেন, মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে সহিংসতার গুরুতর যেসব অভিযোগ উঠেছে শুনানিতে তারা এমনকি এগুলো অস্বীকার করার চেষ্টাও করেননি। এ ছাড়া ২০১৭ সালে নির্মূল অভিযান শুরুর পর গণহারে রোহঙ্গাদের দেশ ছেড়ে চলে যাওয়ার বিষয়টিও তার অস্বীকার করার চেষ্টা করেননি।
এছাড়া অভিযুক্ত সেনা সদস্যদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে যে বিবৃতি মিয়ানমার দিয়েছে সেটাকেও অবিশ্বাস্য বলে উল্লেখ করেন তিনি।
রাখলার বলেন, রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগে টাটমাডো (মিয়ানমারের সেনাবাহিনী) নিজেদের বিচার করবে-এটা কীভাবে কেউ বিশ্বাস করবে, যেখানে এই বাহিনীরই প্রধান সিনিয়র জেনারেল মিন অং হ্লাইংসহ শীর্ষস্থানীয় ছয় জেনারেলকে গণহত্যায় অভিযুক্ত করার পাশাপাশি অপধারী হিসেবে বিচারের সুপারিশ করেছে জাতিসংঘের ফ্যাক্ট-ফাইন্ডিং মিশন।
বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ সময় বিকেল ৩টায় তৃতীয় দিনের শুনানি শুরু হয়। এদিনের শুনানিতে গাম্বিয়ার পর মিয়ানমার তাদের যুক্তি তুলে ধরার সুযোগ পাবে। তবে তিন দিনের এই শুনানি শেষে কবে রায় ঘোষণা করা হবে সে বিষয়ে এখনও কিছু বলা হয়নি।
এর আগে মঙ্গলবার আন্তর্জাতিক আদালতে শুনানির প্রথম দিনে গাম্বিয়া তাদের বক্তব্য তুলে ধরে। ওই দিন মিয়ানমারে গণহত্যা বন্ধের নির্দেশ দিতে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতের (আইসিজে) প্রতি আহ্বান জানায় গাম্বিয়া। এরপর বুধবার শুনানিতে মিয়ানমারের পক্ষে বক্তব্য দেন দেশটির স্টেট কাউন্সিলর অং সান সু চি। রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর গণহত্যা চালানোর অভিযোগে করা মামলাটি ‘অসম্পূর্ণ’ ও ‘বিভ্রান্তিকর’ বলে দাবি করেন সু চি।
‘ওয়ার্ল্ড কোর্ট’ বা বিশ্ব আদালত হিসেবে পরিচিত আইসিজেতে গত মাসে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে মামলাটি করে গাম্বিয়া। এতে কূটনৈতিক ও আর্থিক সহায়তা দিচ্ছে ওআইসি। শুনানি শুরুর আগের দিন গাম্বিয়ার উদ্যোগকে সমর্থন দেয় কানাডা ও নেদারল্যান্ডস।