সুনামগঞ্জে ছাত্র জমিয়তের ৩২তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উদযাপন
ছাত্র জমিয়ত বাংলাদেশ এর ৩২তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে দেশব্যাপী কর্মসূচির অংশ হিসেবে ছাত্র জমিয়ত সুনামগঞ্জ জেলা শাখা এক বর্ণাঢ্য র্যালী অদ্য ২৪ জানুয়ারি, বুধবার, সকাল সাড়ে ১১ ঘটিকায় সুনামগঞ্জ সার্কিট হাউসের সম্মুখ থেকে যাত্রা করে ট্রাফিক পয়েন্ট, বক পয়েন্ট, জামাইপাড়া হয়ে ঘুরে মাদানিয়া মাদরাসায় এসে সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভায় মিলিত হয়।
শাখা সভাপতি ছাত্রনেতা সুহাইল আহমদ ইয়াহ্ইয়ার সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক ছাত্রনেতা জিয়াউল করীম’র পরিচালনায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন, জমিয়তের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি প্রিন্সিপাল মাওলানা শায়খ আব্দুল বছীর হাফিযাহুল্লাহ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ বাংলাদেশের ধর্মপ্রাণ মুসলমানেরা তাদের জীবনের সর্বক্ষেত্রে স্বীয় ধর্ম ইসলামকে অগ্রাধিকার দিয়ে থাকেন। দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেও অধিকাংশ শিক্ষক-শিক্ষার্থী মুসলিম হওয়ায় জাতীয় শিক্ষা কারিকুলামেও ইসলাম শিক্ষা অগ্রাধিকার পাওয়ার দাবী রাখে। অথচ আজ পাঠ্যপুস্তকে এই ইসলাম শিক্ষাকে গুরুত্বহীন করেই ক্ষান্ত হয়নি বরং পাঠ্যপুস্তকে ঈমানবিরোধী গল্প, রচনা ও কবিতা যুক্ত করে মুসলিম শিক্ষার্থীদের জন্মগত ঈমানী চেতনাকে ধ্বংস করার পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। নতুন শিক্ষানীতির মাধ্যমে মানুষকে বানর বানানোর চেষ্টা চলছে। ট্রান্স জেন্ডারের মত ঈমানবিধ্বংসী চক্রান্ত নতুনভাবে যুক্ত করেছে। এজন্য মানবতা ও সভ্যতা টিকিয়ে রাখতে এবং আদর্শবান জাতি গঠনে ছাত্র জমিয়তকে অগ্রণী ভুমিকা পালন করতে হবে। স্কুল, কলেজ ও ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীদের সহীহ দীন শিখাতে ছাত্র জমিয়তকে এগিয়ে আসতে হবে। অন্যথায় নতুন শিক্ষানীতি এদেশের কোমলমতি শিক্ষার্থীদের মেধাকে গ্রাস করে পশুতে পরিনত করবে৷
সভাপতির বক্তব্যে ছাত্রনেতা সুহাইল আহমদ ইয়াহ্ইয়া বলেন, যেই ছাত্র সমাজের ভূমিকায় অতীতের বিভিন্ন আন্দোলন-সংগ্রাম সফল হয়েছিল এবং বহু স্বৈরাচারীর পতন হয়েছিল, সেই ছাত্রসমাজ আজ বিজাতীয়দের আবিষ্কৃত বিভিন্ন হারাম খেলাধূলার নেশায় মত্ত হয়ে গিয়েছে। ছাত্রসমাজ আজ হিংস্র হায়েনার ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে। তাই তাদেরকে সকল প্রকার অন্যায় অবিচার এবং বিপর্যয় থেকে রক্ষা করতে হলে গৌরব ও ঐতিহ্যের সংগঠন ছাত্র জমিয়তকেই ভূমিকা পালন করতে হবে।
তিনি বলেন, যেই শিক্ষা জাতির মেরুদণ্ড সেই শিক্ষা ব্যবস্থায় বিবর্তনবাদ ও ইসলাম বিরোধী মতবাদ প্রণয়ন করে আগামী প্রজন্মকে মেরুদণ্ডহীন করে দেয়ার ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। শিক্ষা সিলেবাসে ভারতীয় মুসলিম শাসকদের চরিত্রহীন অবিহিত করে ৯০ ভাগ মুসলমানের দেশে মুসলমানদের সন্তানদেরকে নাস্তিক-মুরতাদ বানানোর চক্রান্ত করা হচ্ছে। এবারেও নতুনকরে সপ্তম শ্রেণীর ‘বিজ্ঞান ও ইতিহাস’ বইয়ে ট্রান্সজেন্ডারকে প্রমোট করতে “শরিফ থেকে শরিফা” পাঠ এনে আপামর ছাত্রসমাজের মস্তিষ্ক ধোলাই করে সমকামী বানানোর অপচেষ্টা চলছে।
ছাত্র জমিয়ত সভাপতি অনতিবিলম্বে এই অভিশপ্ত শিক্ষানীতি বাতিল করার আহবান জানিয়ে বলেন, এই শিক্ষানীতি নিয়ে বিতর্ক আজ থেকে নয়, কয়েক বছর যাবত তা নিয়ে বিতর্ক হচ্ছে। অতীতে সরকার ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বিতর্কিত সিলেবাস পরিবর্তনের আশ্বাস দেয়া হলেও আজ পর্যন্ত তার কোন সুষ্ঠু সমাধান পাওয়া যায়নি। ছাত্র জমিয়ত অচিরেই তার সুষ্ঠু সমাধানের জন্য সরকার এবং শিক্ষামন্ত্রনালয়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করছে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, জেলা জমিয়তের সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক ছাত্রনেতা মাওলানা রফিক আহমদ উলাশনগরী, ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক ও সাবেক সভাপতি হাফিজ মাওলানা ত্বাহা হোসাইন, সুনামগঞ্জ সদর উপজেলা জমিয়তের প্রচার সম্পাদক মুফতি আব্দুল মালিক ত্বাহা, পৌর যুব জমিয়ত সভাপতি হাফিজ হেলাল আহমদ, সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা আসআদ আহমদ, হাফিজ মাওলানা আখলাক আহমদ, ছাত্রনেতা নূর আহমদ সালমান, মারজান আহমদ।
এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন, জেলা ছাত্র জমিয়তের সহ-সাধারণ সম্পাদক রিয়াজ উদ্দীন, প্রশিক্ষণ সম্পাদক আসআদ আহমদ তালুকদার, প্রচার সম্পাদক সুমন আহমদ, সমাজসেবা সম্পাদক ওলিউর রহমান, কলেজ-ভার্সিটি বিষয়ক সম্পাদক আতিকুর রহমান, সদস্য ও পৌর ছাত্র জমিয়তের ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি মাহমুদ হাসান ফারাবী, সদস্য ও দিরাই উপজেলা সাংগঠনিক সম্পাদক কয়েস আহমদ তালুকদার, সদস্য ও শান্তিগঞ্জ উপজেলা সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুল হাসান, পৌর ছাত্র জমিয়ত নেতা আবুল হাসানাত, জামিয়া মাদানিয়া ক্যাম্পাস শাখা সেক্রেটারি আব্দুল বাসিত, আব্দুল বাসিত নোমান, সহ-সাধারণ সম্পাদক নাঈম আহমদ, আব্দুল্লাহ আল-মামুন, সুনামগঞ্জ সদর উপজেলা ছাত্র জমিয়ত সেক্রেটারি রেজওয়ান আহমদ, প্রচার সম্পাদক সজিব আহমদ, উত্তর বড়দল ইউনিয়ন ছাত্র জমিয়ত সেক্রেটারি শেখ নেছার আহমদ, রাকিব, মুহিবুর রহমান, হাম্মাদ আহমদসহ বিভিন্ন উপজেলা ও ক্যাম্পাসের দায়িত্বশীল ও কর্মীবৃন্দ।