মঙ্গলবার, ০৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:৩০ পূর্বাহ্ন

ব্রেকিং নিউজ :
প্রতিনিধি আবশ্যক: অনলাইন পত্রিকা আমার সুরমা ডটকমের জন্য প্রতিনিধি নিয়োগ দেয়া হবে। আগ্রহীরা যোগাযোগ করুন : ০১৭১৮-৬৮১২৮১, ০১৭৯৮-৬৭৬৩০১

সুনামগঞ্জ জেলার জনশুমারি ও গৃহগণনার রিপোর্ট প্রকাশ

সুনামগঞ্জ জেলার জনশুমারি ও গৃহগণনার রিপোর্ট প্রকাশ

পুরুষের চেয়ে নারীর সংখ্যা বেশী 

আমার সুরমা ডটকম ডেস্ক:
সুনামগঞ্জ জেলার মোট জনসংখ্যা ২৬ লক্ষ ৯৫ হাজার ৪৯৬ জন। এরমধ্যে পুরুষ ১৩ লক্ষ ২৩ হাজার ১৫৫ জন এবং নারী ১৩ লক্ষ ৭২ হাজার ১৩৯ জন। হিজরা ভোটার রয়েছেন ২০২ জন। মোট জনসংখ্যার মধ্যে শহরে বসবাস করেন ৪ লক্ষ ২ হাজার ১৩২ জন এবং পল্লীতে বসবাস করেন ২২ লক্ষ ৯৩ হাজার ৩৬৪ জন। জেলায় স্বাক্ষরতার হার ৬৪.৯২ শতাংশ। এরমধ্যে নারী ৬৩.৭৬ শতাংশ এবং পুরুষ ৬৬.১৪ শতাংশ। মোট জনসংখ্যার মধ্যে অবিবাহিত পুরুষ ৪৪.৩৯ শতাংশ এবং অবিবাহিত নারী ৩১.৪৩ শতাংশ।

বৃহস্পতিবার সকালে সুনামগঞ্জ জেলার প্রথম ডিজিটাল জনশুমারি ও গৃহগণনার রিপোর্ট প্রকাশকালে এসব তথ্য জানানো হয়। সুনামগঞ্জ পরিসংখ্যান কার্যালয়ের আয়োজনে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে রিপোর্ট প্রকাশ করেন জেলা পরিসংখ্যান কার্যালয়ের উপপরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) কামাল উদ্দিন।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রাশেদ ইকবাল চৌধুরী। এসময় তিনি বলেন, পরিসংখ্যান তথ্য আমাদের সকলের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। প্রথমবারের মতো ডাটা পরিসংখ্যান তথ্যের জন্য ডেটা সেন্টার করা হয়েছে। ডেটাগুলো সংরক্ষণের এক মাসের মধ্যে তথ্য দেওয়া যাবে। পরিসংখ্যান বিভাগের কাজগুলো সহজ ও অনেক ইউনিক হয়েছে। তাদের কাছ থেকে সঠিক তথ্য নিয়ে আমাদের ভাতা সহ সকল ধরনের সেবামূলক কাজ করতে সুবিধা হবে।

অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন পৌর মেয়র নাদের বখত, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রাজন কুমার দাস, শান্তিগঞ্জ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান সাদাত মান্নান অভি, জেলা সমাজসেবা উপপরিচালক সুচিত্রা রায়, জেলা প্রতিবন্ধী বিষয়ক কর্মকর্তা তানজিল হক প্রমুখ।
জেলা পরিসংখ্যান কার্যালয়ের উপপরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) কামাল উদ্দিন জানান, ছাতক উপজেলার জনসংখ্যা সবচেয়ে বেশী, ৪ লক্ষ ৪৫ হাজার ৭৯৭ জন। এছাড়াও বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার জনসংখ্যা ১ লক্ষ ৯০ হাজার ৩৫০ জন, দিরাইয়ে ২ লক্ষ ৫৩ হাজার ৭০৫ জন, ধর্মপাশায় ১ লক্ষ ৩৩ হাজার ২৫০ জন, দোয়ারাবাজারে ২ লক্ষ ৬০ হাজার ৫১৩ জন, জগন্নাথপুরে ২ লক্ষ ৬৪ হাজার ১৯৮ জন, জামালগঞ্জে ১ লক্ষ ৮৫ হাজার ৮৬৬ জন, মধ্যনগরে ৯৬ হাজার ২৩৭ জন, শাল্লায় ১ লক্ষ ১৭ হাজার ৬৩০ জন, শান্তিগঞ্জে ২ লক্ষ ৪ হাজার ৯৯৮ জন, সুনামগঞ্জ সদরে ৩ লক্ষ ১৮ হাজার ৯৯ জন, তাহিরপুরে ২ লক্ষ ২৪ হাজার ৮৫৩ জন।
তিনি আরও জানান, জনসংখ্যা বার্ষিক গড় বৃদ্ধির হার ০.৭৮ শতাংশ। প্রতি বর্গকিলোমিটারে জনসংখ্যা ঘনত্ব ৭১৯ জন। জেলায় প্রতি ১০০ জন নারীর বিপরীতে পুরুষের সংখ্যা ৯৬.৪৩ শতাংশ। প্রতি ১ হাজার নারীর বিপরীতে শিশুর অনুপাত ৪২৭.২৬ শতাংশ এবং ১৪ বছরের কম এবং ৬৫ বছরের উর্ধ্বে বয়সী জনসংখ্যার মধ্যে নির্ভরশীলতার অনুপাত ৬৭.১৮ শতাংশ।

জেলার মোট জনসংখ্যার মধ্যে অবিবাহিত পুরুষ ৪৪.৩৯ শতাংশ এবং নারী ৩১.৪৩ শতাংশ। বিবাহিত নারী ৫৭.১৯ শতাংশ এবং পুরুষ ৫৪.৪১ শতাংশ। বিধবা ১০.৩৬ শতাংশ, বিপতœীক ০.৮৭ শতাংশ, তালাকপ্রাপ্ত নারী ০.৫২ শতাংশ, পুরুষ ০.১২ শতাংশ, দাম্পত্য বিচ্ছিন্ন নারী ০.৫০ শতাংশ, পুরুষ ০.২১ শতাংশ।
শিক্ষার ক্ষেত্রে ৫ বছরের উর্ধ্ব জনসংখ্যার মধ্যে সাধারণ শিক্ষায় শিক্ষিত ৮৮.৮৯ শতাংশ, কারিগরি ০.৩৫ শতাংশ, ধর্মীয় ৭.৩৫ শতাংশ এবং অন্যান্য ৩.৪১ শতাংশ। কৃষিকাজে জড়িত জনসংখ্যার ৬৩.২৭ শতাংশ মানুষ। এছাড়াও শিল্পে ৭.৩৬ শতাংশ এবং সেবাখাতে ২৯.৩৭ শতাংশ মানুষ।
শুমারিকালে বিদেশে অবস্থানরত ছিলেন জেলার ৯৯ হাজার ৪৫৬ জন। সবচেয়ে বেশী ছাতকে, ২৮ হাজার ৬৭৮ জন। এছাড়াও বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার ২ হাজার ৭৩৫ জন, দিরাইয়ের ৭ হাজার ৪১৯ জন, ধর্মপাশার ১ হাজার ১০৫ জন, দোয়ারাবাজারের ১২ হাজার ৮৮৮ জন, জগন্নাথপুরের ২০ হাজার ২৩৭ জন, জামালগঞ্জের ৩ হাজার ৩৮২ জন, মধ্যনগরের ৫৪৮ জন, শাল্লার ৯৫১ জন, শান্তিগঞ্জে ৯ হাজার ৫৯১ জন, সুনামগঞ্জ সদরের ৯ হাজার ৭১০ জন  এবং তাহিরপুর উপজেলার ২ হাজার ২১২ জন বিদেশে ছিলেন।
জেলায় খানার সংখ্যা ৫ লক্ষ ২৮ হাজার ৫৫০টি। এরমধ্যে পল্লীতে ৪ লক্ষ ৪৬ হাজার ৭৭৮টি এবং শহরে ৮১ হাজার ৭৭১টি। খানার আকার ৫.০৯ শতাংশ। বাসগৃহ রয়েছে ৪ লক্ষ ৬৬ হাজার ৪৩৮টি। এরমধ্যে শহরে ৬৫ হাজার ৪২৮টি এবং পল্লীতে ৪ লক্ষ ১ হাজার ১০টি। এরমধ্যে পাকা বাড়ি ১০.৪৫ শতাংশ, আধাপাকা ১৪.৫৬ শতাংশ, কাঁচা ৭৩.৯৬ শতাংশ এবং ঝুপড়ি ১.০২ শতাংশ। খাবার পানির প্রধান উৎস হলো নলকূপ, ৯৬.৮৭ শতাংশ। এছাড়াও পুকুর/নদী/খাল/লেক ১.৩৬ শতাংশ, কূপ/কুয়া ০.৮৬শতাংশ, সাপ্লাই ০.৬৮ শতাংশ, বোতলজাত পানি/পানির জার ০.২১ শতাংশ এবং অন্যান্য ০.০৩ শতাংশ।
টয়লেটে এখন খোলা জায়গা ব্যবহার করেন ৩.৫৭ শতাংশ মানুষ। ফ্লাশ করে/পানি ঢেলে নিরাপদ নিষ্কাশন ব্যবস্থা রয়েছে ২৮.২২ শতাংশ মানুষের, অনিরাপদ ১৯.০৬ শতাংশ, স্ল্যাবসহ পিট ল্যাট্রিন/ভ্যান্টিলেটেড ইমপ্রুভ ল্যাট্রিন/কম্পোস্টিং ল্যাট্রিন ১৯.৮০ শতাংশ, স্ল্যাব ছাড়া পিট ল্যাট্রিন/উন্মুক্ত পিট ১৬.৭০ শতাংশ, কাঁচা/খোলা বা ঝুলন্ত ল্যাট্রিন ১৬.৭০ শতাংশ। বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় আছেন ৯৮.৭২ শতাংশ মানুষ। রেমিটেন্স গ্রহণকারী খানা আছে জনসংখ্যার ১২.০৩ শতাংশ। রান্নার কাজে লাকড়ি ব্যবহার করেন ৬৫.৯৪ শতাংশ মানুষ। কাঠ-কয়লা/কারকোল/শুকনো গোবর ১৬.৮৭ শতাংশ, এলপি গ্যাস ৭.৩০ শতাংশ, খড়/পাতা/তুষ/ভূষি ব্যবহার করেন ৫.১৫ শতাংশ, সাপ্লাই গ্যাস ২.৭০ শতাংশ, বিদ্যুৎ ০.০৫ শতাংশ, বায়োগ্যাস ০.০৭ শতাংশ, অন্যান্য ০.০৭ শতাংশ, কেরোসিন/প্যারাফিন ০.০২ শতাংশ এবং পেট্রোল/ডিজেল ০.০২ শতাংশ।

amarsurma.comপ্রসঙ্গত, ২০২২ সালের ১৫ থেকে ২১ জুন শুমারির তথ্য সংগ্রহ করা হয়। প্রাথমকি তথ্য প্রকাশ করা হয় ২৭ জুলাই। ৩৭৮টি এলাকার নমুনা জরিপ যাচাই করা হয় ১০ থেকে ১৬ অক্টোবর। প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয় ২০২৩ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি। আর্থসামাজিক ও জনমিতিক জরিপের তথ্য সংগ্রহ করা হয় ২০২৩ সালের ২১ মে থেকে ২২ জুন। প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয় ২০২৪ সালের ৫ জুন।
শুমারিকালে সুনামগঞ্জ জেলার ১৫-২৪ বছর বয়সী জনসংখ্যার মধ্যে ৪০.৯১ শতাংশ অধ্যয়নরত, কর্মে নিয়োজিত বা কোন রকম বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেনি। এদের মধ্যে নারী ৫৭.৯০ শতাংশ এবং পুরুষ ২১.৯৩ শতাংশ। মোবাইল ফোন ব্যবহার করেন জনসংখ্যার ৫৭.০৩ শতাংশ। এরমধ্যে পুরুষ ৭৭.৬০ শতাংশ এবং নারী ৩৮.০৮ শতাংশ। ইন্টারনেট ব্যবহার করেন জেলার ২৬.৯৪ শতাংশ মানুষ। এরমধ্যে নারী ১৭.৪৯ শতাংশ এবং পুরুষ ৩৭.২১ শতাংশ। ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানে একাউন্ট রয়েছে ১২.৫৮ শতাংশ মানুষের এবং মোবাইল ব্যাংকিং একাউন্টধারী ২৬.৪৩ শতাংশ।
জেলা শুমারিতে ২ জন সমন্বয়কারী, উপজেলা সমন্বয়কারী ৯ জন, জোনাল অফিসার ৬০ জন, ৬০ জন আইটি সুপারভাইজার, ৯৫৪ জন সুপার ভাইজার, ৫ হাজার ৩৮৫ জন গণনাকারী দায়িত্ব পালন করেছেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2017-2019 AmarSurma.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com