শুক্রবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৮:৪৮ পূর্বাহ্ন
মুহাম্মদ আব্দুল বাছির সরদার :
রাষ্ট্রের সংবিধানে ইসলাম থাকবে কি থাকবেনা তা নির্ধারণ হবে এ মাসের ২৭ তারিখ। অবাক করার মতো কাণ্ড হলেও সত্য যে, বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম মুসলিম রাষ্ট্রের প্রধান বিচারপতি হিন্দু ব্যক্তি অধিষ্ঠিত! স্বাধিনতার পর কোন আমলেই সংসদে পুজা হয়নি, কিন্তু এখন হচ্ছে। এদেশে ইসলামি শিক্ষাকে সংকুচিত করা হচ্ছে। পাঠ্যবইয়ে নামমাত্র ধর্মীয় শিক্ষা আছে। অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে হিন্দু শিক্ষক ইসলাম ধর্মের বই পড়ান। ইসলাম, ইসলামি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তথা ইসলামের গন্ধ আছে যেখানে, সেখানেই জঙ্গিবাদের অপবাদ দেয়া আর এ নিয়ে নির্লজ্জ মিথ্যাচার করাই এখন সবচেয়ে বড় কাজ বলে মনে করে কথিত একটি গোষ্ঠি। অনেকেই বলেন এ দেশের সরকার প্রধান ধার্মিক; ফজরের নামায আর ক্বোরআন তেলাওয়াত দিয়ে তাঁর দিনের যাত্রা শুরু হয়। অথচ সরকার প্রধানের এ ধার্মিকতার কী মূল্য হতে পারে? যদি কেউ বঙ্গবন্ধুকে ‘জাতির পিতা’ মানিনা বলে হাইকোর্টে রিট করতে চায়, তবে সে নিশ্চয়ই গুম হবে, না হয় নিহত হবে কিংবা অপহরণের স্বীকার হবে। কিন্তু দুনিয়া ও আখেরাতের জন্য উপকারি ‘ইসলাম’ ধর্ম নিয়ে রিট করে দু:সাহিকতার পরিচয় দিয়েছে, তাদের কোন ক্ষতি হয়েছে? রাষ্ট্রের সংবিধানে ইসলামকে ‘রাষ্ট্রধর্ম’ না রাখতে রিট করা হয়েছে। এটা নাকি স্বাধিনতা যুদ্ধের পরিপন্থি? অথচ এই দেশ স্বাধিনের জন্য সর্বস্তরের মানুষ জীবনবাজি রেখেছে; তাদেরকে কোন মূল্যায়ন করা হয়না। শুধুমাত্র একটি চিহ্নিত গোষ্ঠিকেই মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের বলে দাবি করা হয়। এটা কি সংবিধানের সাথে সাংঘর্ষিক না?
একটি স্বাধিন রাষ্ট্রে জনগণের যতখানি মূল্যায়ন হওয়ার কথা ছিল, তা হচ্ছেনা। এদেশের বেশিরভাগ মানুষ ইসলাম ধর্মে বিশ্বাসি অর্থাৎ মুসলিম। এদেশের মানুষের রাষ্ট্রভাষাও বাংলা। কারণ, বেশিরভাগ মানুষ বাংলায় কথা বলে। এজন্য যুদ্ধও হয়েছে; আমরা বিজয়ী হয়েছি। এখন কী আবার ইসলামকে রাষ্ট্রধর্ম রাখতে যুদ্ধ করতে হবে? আমি বিশ্বাস করি এটার প্রয়োজন নেই। শুধুমাত্র সরকারের শুভবুদ্ধির উদয়ের প্রয়োজন।
বাংলাদেশের রাষ্ট্রপ্রধান হচ্ছেন একজন নারী; অথচ এ সরকারের একজন মন্ত্রী বর্ষবরণে নারী নির্যাতন নিয়ে তিনি যে বক্তব্য দিয়েছেন, তা বিশ্বের সকল নারীকে অপমান বলা যায়। তার ভাষায়, বর্ষবরণে নারী নির্যাতন এটা কোন গুরুতর অপরাধ না। আর্শ্চয্যের বিষয় হলো, তথাকথিত নারীবাদিরা নিশ্চুপ, নারী অধিকার নিয়ে যারা মাঠ-ঘাঠ কাঁপান তারাও কোন রহস্যের কারণে নিশ্চুপ আছেন, তার ব্যাখ্যা কোথাও পাওয়া যাচ্ছেনা। কিন্তু একই কথা যদি আর কেউ বলার দু:সাহস দেখাতো, তবে তার ফাঁসির দাবিতে শাহবাগে তথাকথিত গণজাগরণ মঞ্চের নেতারা পরিস্থিতি ঘোলাটে করে ফেলতো। সরকার প্রধান, সংসদ প্রধান ও বাংলাদেশের একটি বড় রাজনৈতিক দলের প্রধান নারী হওয়া সত্ত্বেও দেশে নারী নির্যাতন, হত্যা-খুন-ধর্ষণসহ নারীর উপর নির্যাতন কোনভাবেই কমছেনা বরং দিন দিন বেড়েই চলছে।
যারা চাচ্ছে যে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম বাতিল হোক; নারী নির্যাতন, ধর্ষণ-খুন-গুম করা তাদের জন্য সহজ হবে। কিন্তু একটি স্বাধিন ও স্বার্বভৌম রাষ্ট্রে এ অবৈধ কাণ্ড হতে কোন মানুষ সে শিক্ষিত হোক কিংবা মুর্খ, তা সহ্য করতে পারবেনা। এসব সমর্থন করা একমাত্র পশুদের জন্যই সাজে, কোন বিবেকবান, সুস্থ মস্তিষ্কের কেউ তা কোন দিন সমর্থন করতে পারেনা। সুতরাং কোন একটি ভুলের কারণে যদি রাষ্ট্রযন্ত্র অকেজো হয়ে পড়ে, তবে এর খেসারত একটি জাতিকে দিতে হবে। সরকার কিংবা সরকার প্রধান যদি এটি বুঝতে সময়ক্ষেপন করেন, তবে তার মাশুল তাদেরকেই দিতে হবে। অন্যায় সিদ্ধান্ত গ্রহণ করলে ইতিহাস কোনদিন ক্ষমা করবেনা। আল্লাহপাক আমাদের সবাইকে সঠিক বিষয় অনুধাবন করার জ্ঞান-বুদ্ধি ও সাহস প্রদান করুন।