রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৭:০৬ পূর্বাহ্ন
আমার সুরমা ডটকম:
গ্রামের পঞ্চায়েতের টাকার হিসেব চাওয়াকে কেন্দ্র করে সুনামগঞ্জের দিরাইয়ে প্রতিপক্ষের বন্দুকের গুলিতে ঘটনাস্থলেই গ্রামের সাইদুল্লাহর ছেলে আমির উদ্দিন (৪৫) নামে একজন নিহত হয়েছেন। গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হয়েছেন সালিশসহ উভয়পক্ষের আরো ৩০ জন। রবিবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে উপজেলার জগদল ইউনিয়নের কালধর গ্রামের মনু মিয়ার বাড়ির সামনে এ ঘটনা ঘটে।
খবর পেয়ে দিরাই থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে এবং হত্যাকা-ের সাথে জড়িত সন্দেহে গ্রামের মৃত হাজী আব্দুল আলীর ছেলে ফারুক মিয়াকে বন্দুকসহ আটক করে থানা হেফাজতে নিয়ে আসা হয়। ঘটনায় গুলিবিদ্ধ দেলোয়ার হোসেন (৩০), রাজেল মিয়া (৩২), এলাইছ মিয়া (৫২), শহিদ মিয়া (৩৬), চন্দন মিয়া (৩০), মিলন মিয়া (৩০), করম আলী (৫২), বিল্লাল মিয়া (২৯), জাকারিয়া (২৫), ছাদ হোসেন (২৯), মাহবুব মিয়া (১৮), জুয়েল মিয়া (১৯), কুতুব মিয়া (৩০)-কে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
গ্রামবাসী ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গ্রামের পঞ্চায়েতের হিসেব রক্ষক হিসেবে ছিলেন আব্দুল আলীর ছেলে ফারুক মিয়া, মৃত আন্তাজ উল্লাহর ছেলে মনু মিয়া ও মৃত মনাফ উল্লাহর ছেলে আওয়াল মিয়া। গ্রামবাসির সাথে উন্নয়ন ফান্ডের প্রায় ১২-১৪ লক্ষ টাকা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছে। এনিয়ে ইউপি চেয়ারম্যানসহ এলাকাবাসী কয়েকবার শালিস বৈঠকের মাধ্যমে সমাধানের চেষ্টা করা হলেও তারা ব্যর্থ হন।
নিহতের ভাই কুতুব উদ্দিন জানান, রোববার সকালের দিকে আমার ভাতিজা মৃত আব্দুল আজিজের ছেলে শফিকুল ইসলামসহ গ্রামের শফিক মিয়া, আইয়ুব মিয়া ও জুয়েল মিয়া মোটর সাইকেল যোগে দিরাই আসার পথে মনু মিয়ার বাড়ির সামনে আসলে মনু মিয়া, মিলিক মিয়া ও ফারুক মিয়াসহ তাদের লোকজন এদের উপর হামলা চালায়। এ খবর পেয়ে গ্রামের লোকজন তাদের উদ্ধারে এগিয়ে আসলে ফারুক মিয়ার নেতৃত্বে আগ্নেয়াস্ত্র ও দেশীয় অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে তাদের উপর অতর্কিত হামলা চালানো হয়। এতে গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান আমির উদ্দিন। ঘটনার সময় ৭ রাউন্ড গুলি চালানো হয় বলেও তিনি জানান।
সূত্র আরও জানায়, প্রায় তিন বছর ধরে গ্রামের উন্নয়ন ফান্ডের প্রায় ১২-১৪ লক্ষ টাকা ফারুক মিয়া, মনু মিয়া ও আউয়াল মিয়ার কাছে রয়েছে। গ্রামবাসি টাকার হিসাব চাইলে তারা বিভিন্ন টালবাহানা ও মিথ্যা মামলা দিয়ে গ্রামবাসিকে হয়রানী করে আসছেন। ইউনিয়ন চেয়ারম্যান শিবলী আহমেদ বেগ জানান, বিষয়টি সমাধানের জন্য একাধিকবার চেষ্টা করা হলেও সমাধান হয়নি।
দিরাই থানার অফিসার ইন-চার্জ কেএম নজরুল ইসলাম জানান, পুলিশ ঘটনাস্থলে রয়েছে, ঘটনার সাথে জড়িত সন্দেহে ফারুক মিয়াকে তার বন্দুকসহ আটক করে থানা হেফাজতে রাখা হয়েছে। গ্রামের পরিবেশ এখন শান্ত রয়েছে, নিহত আমির উদ্দিনের লাশ ময়না তদন্তের জন্য সুনামগঞ্জে প্রেরণ করা হয়েছে।