শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ১১:৩০ অপরাহ্ন
আমার সুরমা ডটকম : রাজধানীর পুরান ঢাকার হোসনি দালানের সামনে পরপর তিনটি বোমা বিস্ফোরণে সানজু (১৮) নামে এব যুবক নিহত হয়েছেন। এছাড়া আহত হয়েছেন শতাধিক ব্যক্তি। তারা সবাই ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। শুক্রবার রাত দেড়টার দিকে এ বোমা বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। গুরুতর আহতরা হলেন আবদুর রহিম (৩০), নাঈম হোসেন (৩৫), লাবনী আকতার (১৪), আয়শা আকতার (১২), সালাউদ্দিন (৪৫), তুহিন (১২), সুদীপ (২১), মাহবুবুর রহমান (২৬), রাকিব হোসেন (২৬) ও আয়াত উদ্দিন (২৬)।
ইমরাম হোসেন নামে এক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, তাজিয়া মিছিল উপলক্ষে হোসনী দালানের সামনে রাতে সবাই জড়ো হয়। দেড়টার দিকে হঠাৎ পরপর তিনটি বোমার বিস্ফোরণ ঘটে। এ সময় অর্ধশতাধিক লোক আহত হয়। তাৎক্ষণিক আহতদের উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়।
ঢামেক হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির ক্যাম্প ইনচার্জ মোজাম্মেল হক জানান, আহতদের মধ্যে সানজু নামে এক যুবক রাত ৩টার দিকে মারা যায়। এছাড়া বেশ কিছু আহত অবস্থায় এসেছে তাদের শরীরের বিভিন্ন স্থানে স্প্লিন্টার বিদ্ধ হয়েছে। সবার চিকিৎসা চলছে।
পবিত্র আশুরা উপলক্ষে তাজিয়া মিছিলে অংশ নিতে পুরান ঢাকার হোসনি দালানে আসেন নগরীর বিভিন্ন এলাকার মানুষ। এদের অধিকাংশই শিয়া সম্প্রদায়ভুক্ত। হজরত মুহাম্মদ (সা) দৌহিত্র হজরত ইমাম হোসাইনের (রা) শহীদ হওয়ার দিনকে শিয়া সম্প্রদায়ের মানুষেরা ত্যাগ ও শোকের প্রতীক হিসেবে পালন করে থাকে।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গত রাত দেড়টা থেকে হোসনি দালানের মূল ফটকে একটি তাজিয়া মিছিলের প্রস্তুতি চলছিল। মিছিলটি পল্টনে যাওয়ার কথা ছিল। মিছিলে যোগ দিতে এসেছিলেন তরুণ, বৃদ্ধ, নারী ও শিশুরা। এরমধ্যেই রাত পৌনে দুইটার দিকে মুহুর্মহু বিস্ফোরণের শব্দে কেঁপে ওঠে পুরো এলাকা। কারও কারও মতে পরপর ১০-১৫টি বিস্ফোরণের শব্দ শুনেছেন। বিস্ফোরণের সঙ্গে সঙ্গে অনেকে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। কেউবা দৌড় দিতে গিয়ে হুমড়ি খেয়ে পায়ের তলায় পড়েছেন। আশপাশের বাসিন্দারা যে যেভাবে পারেন মোটরসাইকেল, অটোরিকশা, ভ্যান, লেগুনায় করে আহতদের ঢাকা মেডিকেল, মিটফোর্ড হাসপাতাল ও আশপাশের বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যান। ঘটনার পরে হোসনি দালান এলাকায় অনেককে পড়ে থাকতে দেখা যায়।
রনি নামের এক যুবক জানান, ঘটনার সময় তিনি দুলদুল ঘোড়ার কাছে ছিলেন। সবাই মোনাজাত করছিলেন। হঠাৎ আগুনের হলকার মতো কিছু ছুটে আসতে দেখেন। এরপর শুরু হয় হুড়োহুড়ি। তিনি ৮/১০টি আওয়াজ শুনেছেন বলে জানান।
আলোআমলিগোলার বাসিন্দা আবদুর রহমান বলেন, মিছিলটি হোসনি দালান থেকে শুরু হয়ে পল্টন ঘুরে আবার হোসনি দালানে এসে হওয়ার কথা ছিল। এজন্য মিছিলের আগে মোনাজাত করছিলেন সবাই। মোনাজাতের সময়ই বোমা হামলা হয়। রাবেয়া আক্তার নামের এক নারী বলেন, বোমায় তার হাত ও পা ঝলছে গেছে।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, হাসপাতালে ৫৭ জন চিকিৎসাধীন। ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার শেখ মারুফ হাসান বলেন, রাতে কোনো ধরনের মিছিল না করার জন্য পুলিশের পক্ষ থেকে নির্দেশনা ছিল। কিন্তু তা কেউ শোনেনি।