সুনামগঞ্জের শাল্লায় হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়িঘরে হামলা ও লুটপাটের ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী আজ (১৯ মার্চ) সংবাদমাধ্যমে এক বিবৃতি দিয়েছেন।
বিবৃতিতে আজিজুল হক ইসলামাবাদী বলেন, সুনামগঞ্জের শাল্লায় রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়িঘরে হামলার আমরা নিন্দা জানাচ্ছি। সেই সাথে আমরা ক্ষতিগ্রস্ত নিরীহ হিন্দু পরিবারদের প্রতি সমবেদনা প্রকাশ করছি এবং সরকারের কাছে এহেন নিন্দনীয় হামলায় জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণপূর্বক দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করছি।
তিনি বলেন, আমরা জানতে চাই কারা এই হামলার নেতৃত্ব দিয়েছে এবং কারা হাজার হাজার জনতাকে ভুল বুঝিয়ে সংগঠিত করেছে? এই হামলার পেছনে উস্কানীদাতা ও মদদদাতা কারা, নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে আমরা এসব হোতাদের পরিচয় জানতে চাই। পাশাপাশি মোদির বাংলাদেশ সফরের প্রাক্কালে হিন্দু সম্প্রদায়ের যুবক কর্তৃক ইসলাম অবমাননার ঘটনা ঘটিয়ে সাম্প্রদায়িক সাম্প্রীতি বিনষ্টের ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে দেশবিরোধী অপতৎপরতার রহস্য উদ্ঘাটনও করতে হবে। তাহলেই ষড়যন্ত্রকারীদের মুখোশ খসে পড়বে।
মাওলানা ইসলামাবাদী বলেন, ইসলাম অবমাননার ঘটনাতেই সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টের ষড়যন্ত্রের বীজ লুকিয়ে আছে। সুতরাং ইসলাম অবমাননার ঘটনার রহস্য উদ্ঘাটন খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
তিনি বলেন, স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন বলেছেন, তারা আগেই মাইকে হামলার খবর শুনে গ্রাম ছেড়ে নিরাপদ স্থানে পালিয়ে গেছেন। এই হামলার খবর তাদেরকে আগে কারা জানালো? আগে ভাগে হামলার আশঙ্কা জেনেও স্থানীয় প্রশাসন কেন যথাসময়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়নি? এই অবহেলা বা ব্যর্থতার দায় অবশ্যই সেখানকার প্রশাসনকেই নিতে হবে।
তিনি বলেন, এটি একটি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হামলা। আর হিন্দু গ্রাম শাল্লায় জলমহালের দখল নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বীদের মধ্যে দাঙ্গা ও হানাহানির ঘটনা নিয়মিত এবং পুরোনো।
আজিজুল হক বলেন, পর্যাপ্ত তদন্ত, অনুসন্ধান ও প্রমাণ ছাড়াই হেফাজতে ইসলামকে জড়িয়ে উদ্দেশ্যমূলক প্রপাগান্ডা চালাচ্ছে কয়েকটি চিহ্নিত ভারতপন্থী মিডিয়া। আমরা তাদের এহেন অপেশাদার ও হলুদ সাংবাদিকতার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। অতীতে হিন্দু সম্প্রদায়ের উপাসনালয়ে হামলা বা ভাঙচুরের ঘটনা ঘটলে হেফাজতে ইসলাম সেটার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে। আমরা সবাইকে স্পষ্ট জানাতে চাই যে, ভিন্ন ধর্মাবলম্বীর উপাসনালয় ও বাড়িঘরে কোনো ধরনের হামলাকে হেফাজত সমর্থন করে না।
তিনি আরো বলেন, ভারতের ক্ষমতাসীন হিন্দুত্ববাদী শাসকদলের প্রধানমন্ত্রী ও গুজরাটের কসাইখ্যাত নরেন্দ্র মোদীর আসন্ন বাংলাদেশ আগমনের প্রাক্কালে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে পরিকল্পিতভাবে কথিত ফেসবুক পোস্টের নাটক সাজিয়ে নিরীহ হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়িঘরে এমন ন্যক্কারজনক হামলার ঘটনা ঘটানো হয়েছে বলে আমরা মনে করি। ভারতের পশ্চিমবঙ্গে ক্ষমতায় আসার জন্য উগ্র হিন্দুত্ববাদী বিজেপি সেখানে বাংলাদেশের তথাকথিত হিন্দু নির্যাতনের কাহিনী প্রচার করে রাজনৈতিক সুবিধা নিতে চায় সবসময়।
তিনি বলেন, আমাদের স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উপলক্ষে বাংলাদেশে গুজরাটে মুসলমানদের ওপর গণহত্যার মূল হোতা এবং কাশ্মিরের স্বাধীনতাকামী মুসলমানদের ওপর বর্বরোচিত জুলুম নিপীড়নকারী নরেন্দ্র মোদীর আগমন প্রতিহত করা এদেশের মুসলমানদের ঈমানি দায়িত্ব। কোনো ধরনের সাবোট্যাজ ঘটিয়ে সচেতন জনগণের দৃষ্টি ভিন্ন দিকে ঘুরিয়ে দেয়া যাবে না।
বিজ্ঞপ্তি