শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০২:২০ পূর্বাহ্ন
আমার সুরমা ডটকম:
দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় (শুক্রবার সকাল ৮টা থেকে শনিবার সকাল ৮টা পর্যন্ত) ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে সর্বোচ্চ ১৯৬ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এদের মধ্যে ১৯৪ জনই রাজধানীর। ঢাকার বাইরে ২ জন। গতকাল স্বাস্থ্য অধিদফতরের পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। এর আগে গত ২৮ জুলাই একদিনে ১৯৪ জন ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। চলতি বছরে এটি একদিনে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রোগী ভর্তির রেকর্ড।
এছাড়া বর্তমানে দেশের বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে সর্বমোট ৭৭৭ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি রয়েছেন। এর মধ্যে ঢাকার ৪১টি সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে বর্তমানে সর্বমোট ভর্তি রোগী ৭৪৭ জন এবং অন্যান্য বিভাগে ভর্তি রয়েছেন ৩০ জন। স্বাস্থ্য অধিদফতরের তথ্য অনুসারে, চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ৩১ জুলাই পর্যন্ত দেশে সর্বমোট ডেঙ্গু রোগী ২ হাজার ৬৫৮ জন। এর মধ্যে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ১ হাজার ৮৭৭ জন।
চলতি মৌসুমে ডেঙ্গু সন্দেহে ৪টি মৃত্যুর তথ্য পাওয়া গেলেও এখনও কোনো মৃত্যুই ডেঙ্গুজনিত বলে নিশ্চিত করেনি আইইডিসিআর।
এদিকে গত এক সপ্তাহে হাসপাতালে পাঁচ গুণ বেড়েছে ডেঙ্গু রোগী ভর্তির সংখ্যা। চিকিৎসকরা বলছেন, শিশুদের মধ্যে আক্রান্তের হার বেশি। এক্ষেত্রে এডিস মশা বেশি ঘায়েল করছে ১ থেকে ৫ বছর বয়সীদের। আক্রান্তের সংখ্যা এভাবে বাড়তে থাকলে অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে যাওয়ার শঙ্কা চিকিৎসকদের।
চিকিৎসকরা বলছেন, গত এক সপ্তাহে প্রায় পাঁচ গুণ বেড়েছে রোগী ভর্তির সংখ্যা। কঠোর বিধিনিষেধের সময়ে বাসাবাড়িতে থাকায় এক থেকে পাঁচ বছর বয়সী শিশুরাই আক্রান্ত হচ্ছে বেশি। আক্রান্তের তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে স্কুল পড়ুয়া বাচ্চারা।
শিশুসহ সব বয়সীদের জ্বর দেখা দিলেই করোনা ও ডেঙ্গু পরীক্ষার পরামর্শ বিশেজ্ঞদের। এছাড়া বিপদ চিহ্ন দেখা দিলেই হাসপাতালে নেওয়ার তাগিদ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা।
ঢাকা শিশু হাসপাতালের সহকারী অধ্যাপক ডা. রিজওয়ানুল আহসান বিপুল জানান, বাসায় যদি হাইজিন মেন্টেইন না করি, পরিষ্কার-পরিছন্ন বজায় না রাখি, তাহলে কিন্তু ডেঙ্গুর প্রকোপ দিনদিন বাড়তে থাকবে। ডেঙ্গু আক্রান্ত হলে পেটে ব্যথা, বমি, মাথা ব্যথা ও ইউরিন আউটপুট কমে যেতে পারে। এসব লক্ষণ দেখা দিলে শিশুকে অবশ্যই হাসপাতালে নিয়ে আসতে হবে।
ডেঙ্গুর প্রকোপের এ সময়ে বাসাবাড়িতে অব্যবহৃত বিভিন্ন জিনিসপত্রে পানি জমতে না দেয়াসহ দিনে ও রাতে মশারি টানানোর পরামর্শ বিশেজ্ঞদের। প্রতিবছর বর্ষাকালেই রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বড় শহরগুলোতে ডেঙ্গু জ্বরের প্রকোপ দেখা দেয়। ২০১৯ সালে দেশে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা অতীতের রেকর্ড ছাড়িয়েছিল। দেশের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৯ সালে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে প্রায় ৩০০ মানুষ প্রাণ হারান। তবে সরকারি হিসাবে মৃতের সংখ্যা ১৭৯।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের হিসাবে, ওই বছর সারা দেশে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছিল ১ লাখ ১ হাজার ৩৫৪ জন।