সোমবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:০২ অপরাহ্ন
আমার সুরমা ডটকম:
মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করে চলমান কঠোর বিধি-নিষেধ প্রত্যহারের প্রজ্ঞাপন জারি করেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।
আজ রোববার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। মাস্ক পরার ওপর জোর দিয়েছি। সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে।
গত ১ জুলাই থেকে কঠোর বিধি-নিষেধ শুরু হয়। এরপর ঈদুল আজহার সময় কোরবানির পশু বেচাকেনা এবং মানুষের চলাফেরার সুযোগ দিয়ে আটদিন বিরতির পর গত ২৩ জুলাই সকাল ৬টা থেকে কঠোর বিধি-নিষেধ শুরু হয়। তা আগামী ৫ আগস্ট মধ্যরাতে শেষ হবে। কিন্তু করোনা পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়ায় কঠোর বিধি-নিষেধ আরও ১০ দিন বৃদ্ধিও সুপারিশ করেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এরই মধ্যে ব্যবসায়ীদের দাবির প্রেক্ষিতে গত ১ আগস্ট থেকে রপ্তানিমুখী শিল্প-কলকারখানা খুলে দেওয়া হয়েছে। এরপর আবার গত ২৩ জুলাই সকাল ৬টা থেকে (৫ আগস্ট মধ্যরাত পর্যন্ত কঠোর বিধিনিষেধ দিয়েছে সরকার। এর পরে আগামী ১০ আগস্ট থেকে কঠোর বিধি-নিষেধ চলমান রয়েছ্।
বিধি-নিষেধ উঠলেও মানতে হবে যেসব শর্ত
চলমান লকডাউন আগামী বৃহস্পতিবার (১০ আগস্ট) রাতে শেষ হচ্ছে। এরপরই খুলে দেওয়া হবে সবকিছু। গত ৩ আগস্ট করোনা পরিস্থিতি পর্যালোচনা সক্রান্ত আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় লকডাউন শিথিল করা নিয়ে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সেই বৈঠকে ১১ আগস্ট থেকে লকডাউন শিথিলের ঘোষণা দেওয়া হয়।
রোববার (৮ আগস্ট) লকডাউন উঠিয়ে দেওয়ার বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।
প্রজ্ঞাপনে লকডাউন তুলে দেওয়ার কথা বলা হলেও কিছু বিধি-নিষেধ মেনে চলার শর্ত আরোপ করা হয়েছে।
সব আসনে যাত্রী নিয়ে চলবে বাস-ট্রেন-লঞ্চ
চলমান কঠোর বিধিনিষেধ শিথিল করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, আগামী ১১ আগস্ট থেকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে বাস, ট্রেন ও লঞ্চের সব আসনে যাত্রী নিয়ে চলাচল করতে পারবে।
রোববার (০৮ আগস্ট) বিকেলে মন্ত্রিপরিষদ থেকে এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, দেশের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড সচল রাখা এবং সামগ্রিক পরিস্থিতি বিবেচনায় চলমান কঠোর বিধিনিষেধ শিথিল করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী বিধিনিষেধ শিথিল হবে ১১ আগস্ট বুধবার থেকে। এদিন থেকে সব সরকারি-বেসরকারি অফিস খোলা থাকবে।
এর আগে রোববার (০৮ আগস্ট) জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন গণমাধ্যমকে বলেন, ১০ আগস্টের পর সবকিছু ধাপে ধাপে খুলবে। এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেবেন।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, গত ৩ আগস্ট অনুষ্ঠিত কোভিড-১৯ সংক্রমণের পরিস্থিতি পর্যালোচনা সংক্রান্ত আন্তঃমন্ত্রণালয় সভার সিদ্ধান্ত, দেশের আর্থ-সামাজিক কর্মকাণ্ড সচল রাখা এবং সামগ্রিক পরিস্থিতি বিবেচনায় আগামী ১১ আগস্ট থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নিচের শর্তাবলী সংযুক্ত করে সার্বিক কার্যাবলী/চলাচলে বিধিনিষেধ আরোপ করা হলো।
১. সব সরকারি/আধাসরকারি/স্বায়ত্তশাসিত/বেসরকারি অফিস, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে খোলা থাকবে।
২. বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট আদালতগুলোর বিষয়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা জারি করবে।
৩. সড়ক রেল ও নৌ-পথে আসন সংখ্যার সমপরিমাণ যাত্রী নিয়ে গণপরিবহন/যানবাহন চলাচল করতে পারবে। সড়কপথে গণপরিবহন চলাচলের ক্ষেত্রে স্থানীয় প্রশাসন (সিটি করপোরেশন এলাকায় বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা পর্যায়ে জেলা প্রশাসক) নিজ নিজ অধিক্ষেত্রের আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী, সংশ্লিষ্ট দফতর/সংস্থা, মালিক ও শ্রমিক সংগঠনের সঙ্গে আলোচনা করে প্রতিদিন মোট পরিবহন সংখ্যার অর্ধেক চালু করতে পারবে।
৪. শপিংমল/মার্কেট/দোকানপাট সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে খোলা রাখা যাবে।
৫. সব ধরনের শিল্প-কারখানা চালু থাকবে।
৬. খাবারের দোকান, হোটেল-রেস্তোরাঁয় অর্ধেক আসন খালি রেখে সকাল ৮টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত খোলা রাখা যাবে।
৭. সবক্ষেত্রে মাস্ক পরিধান নিশ্চিত করতে হবে এবং স্বাস্থ্য অধিদফতর প্রণীত স্বাস্থ্যবিধি যথাযথভাবে অনুসরণ করতে হবে।
৮. গণপরিবহন, বিভিন্ন দফতর, মার্কেট ও বাজারসহ যেকোনো প্রতিষ্ঠানে স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালনে অবহেলা পরিলক্ষিত হলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ দায়িত্ব বহন করবে এবং তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেবে।
প্রসঙ্গত, ঈদের আগে কঠোর বিধিনিষেধ শিথিল করা হলেও ঈদের পর ফের ২৩ জুলাই থেকে কঠোর বিধিনিষেধ জারি হয়। যা ধাপে ধাপে ১০ আগস্ট পর্যন্ত করা হয়। আর আগামী ১১ আগস্ট বিধিনিষেধ ফের শিথিল করে সময়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সব ধরনের গণপরিবহন এবং শপিং মলসহ দোকানপাট খোলা থাকবে।
সূত্র: দৈনিক ইনকিলাব