শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:১৪ অপরাহ্ন
আমার সুরমা ডটকম:
ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্ট ঘিরে সুনামগঞ্জের শাল্লায় ‘সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা’র ঘটনায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে পুলিশের মামলায় কারাবরণকারী সেই ঝুমন দাসকে ফের গ্রেফতার করা হয়েছে।
ঝুমন দাসের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে ‘মসজিদ-মন্দির নিয়ে একটি পোস্ট’কে ঘিরে ফের উত্তেজনা বইছে সুনামগঞ্জে।
ওই পোস্টের পর মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে জেলার শাল্লা উপজেলার নোয়াগাঁও গ্রামের বাড়ি থেকে ঝুমনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে যায় পুলিশ।
মঙ্গলবার রাতে সুনামগঞ্জ জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. সুমন মিয়া গণমাধ্যমকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জানান , গেল ২৮ আগস্ট বেলা ৩টার দিকে শাল্লার হবিবপুর ইউনিয়নের নোয়াগাঁও গ্রামের গোপেন্দ্র দাসের ছেলে ঝুমন দাস প্রকাশ আপন (২৬) তার ‘ঝুমন দাস আপন’ ফেইসবুক আইডি থেকে একটি ‘উস্কানিমূলক’ পোস্ট করেন। ওই পোস্টের পর এলাকায় মানুষজনের মধ্যে ক্ষোভ ও উত্তেজনার সৃষ্টি হয়।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বলেন, এর প্রেক্ষিতে মঙ্গলবার দুপুরে ঝুমন দাসকে থানায় এনে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তিনি পোস্টটি তার করা বলে স্বীকার করেন। এরপরই তার বিরুদ্ধে শাল্লা থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দায়ের করে ঝুমনকে গ্রেফতার দেখানো হয়।
একই তথ্য নিশ্চিত করে ঝুমনকে থানা নিয়ে আসার কারণ জানান শাল্লা থানার ওসি মো. আমিনুল ইসলাম।
ওসি বলেন, ডিজিটাল নিরাপক্তা আইনে দায়েরী মামলায় তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
সুনামগঞ্জ পুলিশ সুপার মো. এহসান শাহ বলেন, কয়েক দিন আগে ঝুমন ফেসবুকে মন্দির ও মসজিদ নিয়ে আরেকটি পোস্ট দেন। ঝুমনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে আসার সে ওই পোস্ট দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করলে তাকে ডিজিটাল নিরাপক্তা আইনে দায়েরকৃত মামলায় গ্রেফতার করা হয়।
তিনি আরও বলেন, অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়াতে শাল্লার নোয়াগাঁওয়ে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। দিরাই ও শাল্লা থানা পুলিশ গ্রামে টহল দিচ্ছে।
উল্লেখ্য, ২০২১ সালের ১৫ মার্চ সুনামগঞ্জের দিরাইয়ে হেফাজতের ‘শানে রিসালাত’ সমাবেশে তৎকালীন আমীর জুনায়েদ বাবুনগরী ও যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হক বক্তব্য দেন। পরদিন ১৬ মার্চ মামুনুল হকের সমালোচনা করে ফেসবুকে ‘উস্কানিমূলক’ স্ট্যাটাস দেন শাল্লার নোয়াগাঁওয়ের যুবক ঝুমন দাস।
এ ঘটনা ইস্যু তৈরী করে স্থানীয় এক ইউপি সদস্যের নেতৃত্বে উত্তেজিত হয়ে হেফাজত ইসলামের স্থানীয় সমর্থকরা ১৭ মার্চ হিন্দু অধ্যুষিত নোয়াগাঁওয়ে শতাধিক হিন্দু বাড়ি-ঘরে হামলা ও ভাংচুর চালায়। উস্কানিমূলক স্ট্যাটাসের দায়ে ঝুমনের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলার পাশাপাশি নোয়াগাঁওয়ে হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়ি-ঘরে হামলার ঘটনায় পৃথক তিনটি মামলা হয়।
ঝুমন দাসসহ বেশ কয়েকজনকে গ্রেফতার করা হয়। তাছাড়া পুলিশ ও এলাকাবাসী বাদী হয়ে হেফাজত অনুসারী দেড় হাজার লোকের বিরুদ্ধে মামলা করে।প্রায় ছয় মাস পর গত বছরের ২৭ সেপ্টেম্বর হাইকোর্ট থেকে জামিনে মুক্তি পান ঝুমন।
সে সময় পুলিশ ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দিয়ে ঝুমনকে কারাগারে পাঠায়। পরে জামিনে মুক্ত হন ঝুমন।ডিজিটাল নিরাপক্তা আইন# সেই ঝুমন দাস# ফের গ্রেফতার।