রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১:৫৬ পূর্বাহ্ন
আমার সুরমা ডটকম : রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বলেছেন, মহান মুক্তিযুদ্ধের মধ্যদিয়ে গড়ে ওঠা বাংলাদেশের সশস্ত্র বাহিনী জাতির অহংকার। ১৯৭১ সালের ২১ নভেম্বর সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনী সম্মিলিতভাবে দখলদার বাহিনীর ওপর সর্বাত্মক আক্রমণ পরিচালনা করে আমাদের কাঙ্ক্ষিত বিজয় অর্জন ত্বরান্বিত করে। মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে সশস্ত্র বাহিনীর অবদান ও বীরত্ব গাথা জাতি গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করে। রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ শুক্রবার সশস্ত্র বাহিনী দিবস ২০১৫ উপলক্ষে এক বাণীতে একথা বলেন। রাষ্ট্রপতি বলেন, আমাদের সশস্ত্র বাহিনী একটি উঁচু পেশাদার, দক্ষ ও সুশৃঙ্খল বাহিনী। দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার মহান দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি যে কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলা ও জাতিগঠনমূলক কর্মকাণ্ডে সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যগণ প্রশংসনীয় ভূমিকা পালন করে যাচ্ছেন। তিনি বলেন, কেবল দেশেই নয়, সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যগণ জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে অংশ নিয়ে দক্ষতা, সততা ও নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালন করে বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করেছে। এ দায়িত্ব পালনকালে অনেক সদস্য শাহাদত বরণ করেছেন। তাদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং তাদর পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান। মো. আবদুল হামিদ এ দিনে গভীর শ্রদ্ধার সাথে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে স্মরণ করে বলেন, যিনি জেল-জুলুম উপেক্ষা করে সমগ্র জাতিকে বাঙালি জাতীয়তাবাদে উদ্বুদ্ধ করে ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ স্বাধীনতার ঘোষণা দেন। তারই নেতৃত্বে দীর্ঘ নয় মাস সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে জাতি কাঙ্খিত বিজয় অর্জন করে ।
তিনি শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করেন বীরশ্রেষ্ঠ সিপাহী মোস্তফা কামাল, বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দীন জাহাঙ্গীর, বীরশ্রেষ্ঠ সিপাহী হামিদুর রহমান, বীরশ্রেষ্ঠ মো. রুহুল আমিন, ইআরএ-১, বীরশ্রেষ্ঠ ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মতিউর রহমান, বীরশ্রেষ্ঠ ল্যান্স নায়েক নুর মোহাম্মদ শেখ, বীরশ্রেষ্ঠ ল্যান্স নায়েক মুন্সী আব্দুর রউফকে, যারা মহান স্বাধীনতাযুদ্ধে অসামান্য অবদান রেখেছেন। সশস্ত্র বাহিনীর উন্নয়নে সরকার ফোর্সেস গোল-২০৩০ প্রণয়ন করেছে মন্তব্য করে রাষ্ট্রপতি বলেন, এর ফলে সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীতে জনবল, স্থাপনা, আধুনিক যুদ্ধসরঞ্জাম বৃদ্ধিসহ বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মসূচি বাস্তবায়িত হচ্ছে। তিনি বলেন, আমার বিশ্বাস এসব কর্মসূচি সশস্ত্র বাহিনীকে আরো আধুনিক, দক্ষ ও গতিশীল করবে। যেকোন বাহিনীর উন্নয়নের পূর্বশর্ত হলো নেতৃত্বের প্রতি গভীর আস্থা, পারস্পরিক বিশ্বাস, শ্রদ্ধাবোধ, সহমর্মিতা, ভ্রাতৃত্ববোধ, কর্তব্যপরায়ণতা, দক্ষতা এবং সর্বোপরি শৃঙ্খলা। রাষ্ট্রপতি দৃঢ় আশা প্রকাশ করে বলেন, সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যগণ নেতৃত্বের প্রতি পরিপূর্ণ অনুগত থেকে কঠোর অনুশীলন, পেশাগত দক্ষতা, কর্তব্যনিষ্ঠা ও দেশপ্রেমের সমন্বয়ে তাদের গৌরব সমুন্নত রাখতে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখবে। রাষ্ট্রপতি সশস্ত্র বাহিনী দিবসে দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের জন্য শাহাদত বরণকারী মুক্তিযোদ্ধাসহ সশস্ত্র বাহিনীর বীর শহিদদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে যুদ্ধাহত ও শহিদ পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
একইসঙ্গে তিনি সশস্ত্র বাহিনীর উত্তরোত্তর সমৃদ্ধি এবং বাহিনীসমূহের সকল সদস্য ও তাদের পরিবারবর্গের সুখ, শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করেন।